উলঙ্গ করে ঢাকা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীকে পেটানোর অভিযোগ ছাত্রদলের বিরুদ্ধে
প্রকাশ | ১৯ মে ২০২৫, ০৯:৪৬ | আপডেট: ১৯ মে ২০২৫, ১৩:১৮

ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থীকে নির্জন কক্ষে নিয়ে শারীরিক নির্যাতনসহ উলঙ্গ করে ছবি ও ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রদলের বিরুদ্ধে।
রোববার (১৮ মে) দুপুর ও রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে ভুক্তভোগী ফেসবুকে নিজ আইডিতে একটি স্ট্যাটাস এবং একটি ভিডিও পোস্ট করেন।
এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ফেসবুক পোস্টে অভিযুক্ত বলেন, ‘আমি রাকিবুল ইসলাম, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের তৃতীয় সেমিস্টারের ছাত্র।
১৮ মে ২০২৫ দুপুরে ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী আমার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন চেক করে এবং আমাকে বিভিন্নরকম হুমকি প্রদান করে।
রাত আনুমানিক ৯টার দিকে, ২৩-২৪ সেশনের ৮-১০ জন ছাত্র আমার রুমে ঢুকে আমাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমাকে একটি নির্জন কক্ষে নিয়ে যায় এবং শারীরিক নির্যাতন করে। এর পর আমাকে সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে।
তারা আমাকে সেই ছবি-ভিডিওতে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।
বর্তমানে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং শঙ্কিত। আমার জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগে আছি।
আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আবেদন জানাচ্ছি।’
নিজ আইডিতে দেওয়া ভিডিওতে ভুক্তভোগী রাকিব বলেন, ‘আমি হলে থাকি, আমার রুমের ছাত্রদলের কিছু লোক আমাকে ধরে নিয়ে যায়।
আমাকে রুমে নিয়ে যাওয়ার পরে, তারা আমাকে ছাত্রলীগের ব্লেম (দোষারোপ) দিয়ে মারধর করে, বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে, ঝাড়ু, ছুড়ি ও মদের বোতল দিয়ে মাথায় আঘাত করে, ঝোড়পূর্বক আমার কাছ থেকে স্বীকারোক্তি নেয় যে, আমি ছাত্রলীগ করতাম।
তারা এরকমও আমাকে হুমকি দেয় যে, আমাকে তারা মেরে ফেললেও কেউ এর বিচার করবে না।
তারা পাশের রুম থেকে পিস্তল ও ছুড়ি আনার হুমকি দেয়। তারা পিস্তল এনে আমার পায়ে গুলি করবে।
এক পর্যায়ে আমাকে ঝোরপূর্বক আমাকে উলঙ্গ করে ও ভিডিও ধারণ করে। এ ভিডিওটি করার উদ্দেশ্যে হলো রাতের মধ্যে আমার কিছু হলে আপনারা বিষয়টি দেখবেন।
আমার সহপাঠী ও ক্লাসমেটদের অবগত করতেই ভিডিওটি করা।’
অভিযুক্তরা হলেন, সৈকত (ইলেকট্রনিক্স), স্বাধীন (ইলেকট্রিক্যাল), ফয়েজ (সিভিল), নাফিউর রহমান (ইলেকট্রনিক্স), অনিক (ইলেকট্রনিক্স), সচিন (ইলেকট্রিক্যাল), মুন্না (কম্পিউটার), মেহেদী (মেকানিক্যাল), নিজুম (মেকানিক্যাল)।
এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘নির্যাতনকারীদের হাতে প্রতিনিয়ত ক্যাম্পাস ও হলে ছাত্ররা নির্যাতিত হচ্ছেন। এরা সবাই পূর্বে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। এখন ছাত্রদলের নাম করে অত্যাচার করছে।
এদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না। ইনস্টিটিউট প্রশাসন সবকিছু জেনেও যেন নীরব ভূমিকা পালন করছে।’
ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহেলা পারভীন বলেন, ‘একরকম একটা ঘটনা ঘটে গেল আমি জানি না, কোন হলের শিক্ষার্থী বিস্তারিত জেনে আপনাকে জানাচ্ছি।’