২০২৭ সাল থেকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে চালু হচ্ছে নতুন শিক্ষাক্রম
প্রকাশ | ০৪ জুন ২০২৫, ১৯:১১

২০২৭ সাল থেকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হচ্ছে। নতুন শিক্ষাক্রম পর্যায়ক্রমে তা দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে।
বুধবার (৪ জুন) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে শিক্ষা উপদেষ্টা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার বলেন, মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে স্থির করেছি ২০২৭ এর জন্য তৈরি হবে নতুন শিক্ষা কার্যক্রম। এর কাজ আমরাও এরই মধ্যেই শুরু করেছি।
তিনি বলেন, দীর্ঘ মেয়াদে শিক্ষাক্রমের যে বিষয়, আমরা যদি নতুন স্বপ্ন দেখি, নতুন পরিকল্পনা যদি আমরা করি। সেখানে প্রযুক্তির বিষয় থাকবে, অন্তর্ভুক্তির বিষয় থাকবে। সেখানে দায়, দরদ, ইনসাফ- যে শব্দই আপনি ব্যবহার করুন, মান-সম্মত শিক্ষা, তবে অবশ্যই বর্তমানে যে শিক্ষাক্রম তার থেকে মুক্ত চিন্তা করতে হবে আমাদের। সেটা যেন করা সম্ভব হয় সেজন্য নিজেদের ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা, জাতীয় একটা ঐকমত্যের প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে আমরা যথেষ্ট যত্নশীল, সেটা আমাদের বিবেচনার মধ্যে রয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে আমরা কাজ করছি। যখন বই ছাপা হবে তখন হয়তো আমরা দায়িত্বে থাকবো না। কিন্তু যারা দায়িত্বে থাকবেন তারা যাতে একটা ভালো মানসম্পন্ন শিক্ষাক্রম ব্যবস্থা ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে শুরু করে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন তার জন্য যে ভিত্তিভূমি সেটা অর্গানাইজ করে যেতে পারবো বলে আমরা মনে করি।
২০১২ সালে বিশেষ পরিস্থিতিতে শিক্ষাক্রম পর্যালোচনা করা হয়েছিল জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আগামী বছরও সেটা থাকবে। তবে পরে যেই কনস্টেন্টের মধ্যে আমরা কাজ করছি আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে পারবো।
আমরা কি বলতে পারি এই অন্তর্বর্তী সরকার নতুন একটা পাঠ্যক্রমের শুরুটা করে দিয়ে যাচ্ছে- এ বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, এটাই সুন্দর কথা।
সি আর আবরার বলেন, আগামী বছরের শিক্ষাক্রমে যাতে ভুল না থাকে সেজন্য আমরা, বিশেষভাবে আমি নিজে তৎপর এবং তদারকিতে থাকবো।
শিক্ষা সংস্কার কমিশন করার বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, এ সরকারের অধীনে শিক্ষা কমিশন খুব একটা কার্যকর হবে, কমিশন তার মেয়াদ সম্পন্ন করতে পারবে সেই সম্ভাবনা সে রকমভাবে দেখি না। তবে যেই লক্ষ্য এটা করা দরকার সেই লক্ষ্যেই মোটামুটি ভালোভাবেই আমরা কাজ শুরু করেছি। আগের যে কমিশনগুলো সেগুলোর থেকে আমরা সুপারিশ নিতে পারি।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিক্ষা নিয়ে বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্ট স্থানীয়দের নিয়ে পরামর্শ সভা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমরা আরও দেশের বিভিন্ন জায়গায় আট দশটি পরামর্শ সভা করব। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এসব থেকে আহরিত যে জ্ঞান সেটা দিয়ে আমরা একটা ডকুমেন্ট করব। একই সঙ্গে জাতীয় কনভেনশনের মত একটা করব।
যারা বলছেন শিক্ষা কমিশন দরকার আমি তাদের প্রশংসা করি। কিন্তু সেটাই যে একমাত্র হতে হবে, সেটা কিন্তু না। অন্যান্য মাধ্যমে আমরা এগোতে পারি। সেটা হলে ভালো হতো, তবে বিভিন্ন কারণে যেহেতু সেটা এখন করা যাচ্ছে না। সেজন্য আমরা বিকল্প এই পদ্ধতির মধ্যে যাচ্ছি। আগামী অক্টোবর নভেম্বরের মধ্যে ডেফিনেটলি কাম আপ আ রিজনেবল ডকুমেন্ট। মেবি ফোকাসিং অন সেকেন্ডারি এডুকেশন। তবে এখনো ঠিক করিনি বলেন শিক্ষা উপদেষ্টা।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের বলেন, গত বছর যে বই ছিল, সেই বইটি একটুখানি পরিমার্জন করে ভুল ত্রুটি কমিয়ে নিয়ে এসে এ বছর দিচ্ছি। একই সঙ্গে আমরা কাজ করছি ২০২৭ সালে যাতে ষষ্ঠ শ্রেণিতে নতুন কারিকুলামের (শিক্ষাক্রম) আওতায় আনতে পারি।
সিনিয়র সচিব বলেন, আমরা মনে করি একসঙ্গে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাক্রম পরিবর্তন করা কোনো সুচিন্তিত বিষয় নয়। আমাকে নতুন পাঠ্যক্রম যদি দিতে হয় তা ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দিতে হবে। ক্রমান্বয়ে প্রতিবছরে এই শিক্ষার্থীদের নিয়েই... সপ্তম শ্রেণিতে যখন যাবে নতুন পাঠ্যক্রম হবে, অষ্টম শ্রেণিতে যখন যাবে তখন সেখানে নতুন পাঠ্যক্রম হবে। এই জার্নিটা হচ্ছে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত।
এই জার্নিটাই আমরা ক্রমান্বয়ে নতুন পাঠ্যক্রমের আওতায় যাব এবং সেটা শুরু হবে ২০২৭ থেকে। আমরা সেটা শুরু করে দিয়ে যাব তবে আমরা শেষ করতে পারবো না-বলেন সিদ্দিক জোবায়ের।