পাঁচ দফা দাবি
রোববার ‘ঢাকা ব্লকেড’র ঘোষণা ইউআইইউ শিক্ষার্থীদের
প্রকাশ | ২১ জুন ২০২৫, ১৩:৪৩

কাল রোববার ‘ঢাকা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন ‘অবৈধ বহিষ্কারাদেশ’ প্রত্যাহার, ‘দমনমূলক’ সিন্ডিকেটের জবাবদিহি এবং শিক্ষাঙ্গনে গণতান্ত্রিক পরিবেশের নিশ্চয়তার দাবিতে ঢাকার নতুনবাজার এলাকায় সড়ক অবরোধকারী ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) শিক্ষার্থীরা।
আজ শনিবার (২১ জুন) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে তারা ‘নতুনবাজার ব্লকেড’ কর্মসূচি শুরু করলে সড়কের এক পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তারা এ কর্মসূচি শুরু করেন। দুপুর সোয়া ১টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা সড়ক ছাড়েননি। ফলে প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা ধরে কুড়িল থেকে বাড্ডা ও গুলশান অভিমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
এদিকে, বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে ভাটারা থানা পুলিশ। এসময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন আন্দোলনকারীরা।
তবে পুলিশ অ্যাকশনে গেলেও শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে ব্যর্থ হয়। কিছু সময়ের জন্য আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হলেও আবারও তারা রাস্তা অবরোধ করেন।
পুলিশের অ্যাকশনের পর ফের অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন দাবি না মানা পর্যন্ত নতুনবাজারের রাস্তা ছাড়বেন না তারা। শুধু তাই নয়, আজকের মধ্যে দাবি মানা না হলে আগামীকাল রোববার পুরো ঢাকা ব্লকেড করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তির দাবি করছেন তারা।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি-
১. ইউআইইউ কর্তৃক অন্যায়ভাবে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত বহিষ্কার প্রত্যাহার ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
২. বহিষ্কারের সঙ্গে জড়িত সব ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত করে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
৩. ইউআইইউ-তে দীর্ঘদিন ধরে চলা অনিয়ম-অসুবিধা ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে রিফর্ম দাবিসমূহ বাস্তবায়ন।
৪. বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি স্বাধীন সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।
৫. বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ কর বাতিল করতে হবে।
ইউআইইউ সূত্র ও শিক্ষার্থীরা জানান, গত ২৬ ও ২৭ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের অসন্তোষের জেরে উপাচার্যসহ ১১ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন। এরপর ২৮ এপ্রিল ইউআইইউ কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য সব শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে। যদিও ২০ মে থেকে অনলাইন ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ তা প্রত্যাখ্যান করে ক্যাম্পাসে সরাসরি ক্লাস ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবি করে আসছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের যৌক্তিক ১৩ দফা দাবি দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষা করে আসছে। উল্টো আন্দোলন দমন করতে বহিষ্কার করা হচ্ছে। গত ২ জুন ৪১ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ২৪ জনকে স্থায়ী ও ১৬ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। বাকি একজনকে সতর্কবার্তা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ভাটারা থানার ওসি রাকিবুল হাসান বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা সড়কের একপাশে অবস্থান নিয়েছেন, এর ফলে কুড়িল থেকে বাড্ডাগামী সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।’