জাবির সিনেটে আওয়ামী দোসরদের প্রবেশে বাধা, ফুল দিয়ে বরণ জুলাই সহযোদ্ধাদের

প্রকাশ | ২৮ জুন ২০২৫, ১৬:৫১

জাবি  প্রতিনিধি
যায়যায়দিন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২ তম সিনেট অধিবেশনে আওয়ামী লীগের দোসর সিনেট সদস্যদের  প্রবেশে বাধা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। একইসাথে জুলাই সহযোদ্ধা সিনেটরদের লাল গোলাপ দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন তারা।


শনিবার (২৮ জুন) বেলা সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এক বিক্ষোভ মিছিলের পর এ কার্যক্রম করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।


এসময় " আওয়ামিলীগের ঠিকানা, এই সিনেটে হবে না,। আওয়ামী দোসরদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও,। জুলাই সহযোদ্ধাদের আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম। জুলাই সহযোদ্ধাদের, লাল গোলাপ শুভেচ্ছা " ইত্যাদি স্লোগান দিতে শোনা যায়। 


শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে এসময় তিনজন আওয়ামীপন্থি শিক্ষক সিনেট কক্ষ পরিত্যাগ করেন। তারা হলেন,  কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. যুগল কৃষ্ণ দাস, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. শফিক-উর রহমান এবং মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. নিগার সুলতানা। 


অন্যদিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান,  উপ-উপাচার্য ( প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ,  কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আব্দুর রব, ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন সহ জুলাই সহযোদ্ধা সিনেটরদের লাল গোলাপ দিয়ে বরণ করে নেন শিক্ষার্থীরা।


এসময় সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আনজুম শাহরিয়ার বলেন, আওয়ামী আমলে নির্বাচিত দোসরদের এই সিনেট অধিবেশনে যোগ দেওয়ার অধিকার নেই। জুলাই গণহত্যার পর তারা কোনভাবেই ক্যাম্পাসে পুনর্বাসিত হতে পারে না। আওয়ামী দোসরদের সিনেট অধিবেশনে দাওয়াত দেওয়ায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। 


বায়োটেকনোলজি এন্ড  জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যে সকল শিক্ষকরা স্বার্থের বাইরে গিয়ে, জীবনের মায়া ত্যাগ করে আমাদের সঙ্গে রাজপথে অংশগ্রহণ করেছেন, গণঅভ্যুত্থানকে সফল করেছেন। তাদেরকে যখন সিনেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ সভায় উপস্থিত হতে দেখি, তখন আমরা সাহস পাই। এই সভা থেকে যে নীতিনির্ধারণী হবে তার জন্য আমরা আশাবাদী হই যে, তা দেশের জন্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। তাই আমরা তাদেরকে লাল গোলাপ দিয়ে বরণ করে নিয়েছি। একইসাথে আমাদের ভয় হয় যখন দেখি আওয়ামী দোসরা এই মিটিং এ উপস্থিত হন। আমরা চাই এই মিটিং এর মাধ্যমে তাদেরকে বহিষ্কার করা  হোক এবং যোগ্য সিনেটরদের নির্বাচন করা হোক। 


ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, জুলাই আন্দোলন সারা দেশের মানুষের এক কাঙ্ক্ষিত মুক্তির আন্দোলন, এই আন্দোলনে আমাদের ক্যাম্পাসের অনেক শিক্ষক যেমন আমাদের বিরোধিতা করেছে তেমনি কিছু শিক্ষক আমাদের জন্য মন উজাড় করে সাপোর্ট দিয়ে গেছেন. আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২ তম সিন্ডিকেট মিটিংয়ে আমরা সেসকল মহান শিক্ষকদের সম্মাননা জানানোর জন্য এটা আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা.আর যারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরোধিতা করে গণহত্যাকারীদের সহযোগিতা করেছিল সেসকল শিক্ষক নামের কুলাঙ্গারদের প্রতি তীব্র ঘৃণা. আমরা চাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সকল আওয়ামী দোসর মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষার্থে  কাজ করে এই প্রত্যাশা কামনা করছি।


উল্লেখ্য, এর আগে ২৭ জুন শুক্রবার আওয়ামী দোসরদের সিনেট অধিবেশনে দাওয়াত দেওয়ায় প্রতিবাদ ও উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা।