ঘাটতি বাজেট দিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের কার্যক্রম শুরু

প্রকাশ | ২৮ জুন ২০২৫, ১৭:৩২

গাজীপুর প্রতিনিধি
যায়যায়দিন

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত ২৭তম সিনেট অধিবেশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৬৯০ কোটি ১৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকার বাজেট প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। এই রাজস্ব ব্যয় এর বিপরীতে প্রাক্কলিত রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৫৬৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা।

 ফলে ঘাটতি থাকছে ১২৪ কোটি ৮৩ লাখ ২৯ হাজার টাকা। 

অধিবেশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট পাস করা হয়। সিনেট অধিবেশনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. এ টি এম জাফরুল আজম ওই বাজেট উপস্থাপন করেন। 

প্রস্তাবিত বাজেটে সর্বোচ্চ ২৮৯ কোটি ০৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে পরীক্ষা পরিচালনা খাতে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ রয়েছে বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি খাতে ১৮৮ কোটি ২৩ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা। 

এছাড়া সাধারণ আনুষঙ্গিক খাতে ৬০ কোটি ৭৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা, পেনশন ও অবসর সুবিধা খাতে ৫১ কোটি ২৮ লাখ ১৮ হাজার টাকা এবং শিক্ষা আনুষঙ্গিক খাতে ৫০ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। 

 
বাজেট প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিচ্যুত ৯৮৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পুনর্বহালের জন্য বেতন-ভাতা খাতে ব্যয় বাড়ছে ৭৮ কোটি ৯০ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা এবং চাকুরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হওয়া শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অবসরের কারণে পেনশন ও অবসর সুবিধাদি খাতে ব্যয় বাড়ছে ২৮ কোটি ৮২ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা। ঘাটতি পূরণে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে অনুদান পাওয়ার আশা করছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

মূল বাজেটের আগে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৪১৭ কোটি ০৩ লক্ষ ১৯ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদন করা হয়। প্রস্তাবিত বাজেটের পরিমাণ ছিল ৭২১ কোটি ৬৪ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রাক্কলিত আয় ৫২০ কোটি ৫০ লক্ষ ১০ হাজার টাকা সংশোধন করে ৫১২ কোটি ১৯ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড.  এ এস এম আমানুল্লাহ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ২৭ তম সিনেট অধিবেশনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোঃ মোখলেস উর রহমান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর মোঃ লুৎফর রহমান, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ নূরুল ইসলাম, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, বিভাগীয় কমিশনারবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষাবিদসহ ৭৭ জন সিনেট সদস্য, আমন্ত্রিত সিন্ডিকেট সদস্যগণ (অতিথি হিসেবে), সিনেট সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন অংশগ্রহণ করেন ।

সিনেট অধিবেশনে উপাচার্য বলেন, বিগত সরকার বিশ^বিদ্যালয়ের পূর্ববর্তী প্রশাসনের নিকট থেকে এক হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। এতে করে বিশ^বিদ্যালয়ের তহবিলে অর্থের পরিমান উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় থেকে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন প্রদান ও পেনশন মঞ্জরীসহ যাবতীয় ব্যয নির্বাহ করা কঠিণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

তা ছাড়া বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক ও সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্যও প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। এ অবস্থায় উপাচার্য সরকার ও বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জরী কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে অন্যান্যপাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়কেও পৌন:পুনিক খাতে বাজেট বরাদ্দের অনুরোধ জানিয়েছেন।