মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

'ওর বিয়ের পাগড়িটা আমিই পরাই'

ফেরদৌস ওয়াহিদ- বাংলাদেশের পপসংগীতের অন্যতম একজন তারকা। পপসংগীতের পঞ্চ রত্নের পাঁচতারকা বলা হয়- আজম খান, পিলু মমতাজ, ফিরোজ সাঁই, ফকির আলমগীর ও ফেরদৌস ওয়াহিদকে। পঞ্চ রত্নের তিনজনের নামের আদ্যাক্ষর আবার 'এফ' দিয়ে শুরু। তাদের মধ্যে ছিলেন ফেরদৌস ওয়াহিদ ও ফকির আলমগীর। পৃথিবী থেকে সদ্য বিদায় নেওয়া ফকির আলমগীর সম্পর্কে বললেন ফেরদৌস ওয়াহিদ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, মাতিয়ার রাফায়েল
নতুনধারা
  ২৫ জুলাই ২০২১, ০০:০০
আপডেট  : ২৫ জুলাই ২০২১, ১১:০২
ফেরদৌস ওয়াহিদের সঙ্গে ফকির আলমগীর

পঞ্চরত্নের শেষ দুই লিজেন্ড ছিলেন আপনারা- দীর্ঘ পাঁচ দশকের এই বন্ধুত্বের সম্পর্কে বলবেন কি? আমার সঙ্গে ওর ১৯৭৩-এ পরিচয়। সেই থেকে আমাদের বন্ধুত্ব। তার সঙ্গে আমার স্মৃতি বলতে গেলে অনেক। আমাদের বিয়ের আগে তো আমরা বিভিন্ন জায়গায় অনেক রাত্রিবাসও কাটিয়েছি। কখনো আজম খানের সঙ্গে কখনো ফিরোজ সাঁইয়ের সঙ্গে, কখনো ফকির আলমগীরের সঙ্গে। যখন যেখানে কনসার্টে গিয়েছি...অনেক স্মৃতি রয়েছে ওর সঙ্গে আমার। বন্ধু মানুষ। মায়া-মমতার সম্পর্ক তো থাকবেই। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, হবিগঞ্জে ওর বিয়ের পাগড়িটা আমিই পরাই। এর চেয়ে বড় স্মৃতি তো আর হতে পারে না। বাংলাদেশের গণসংগীতে একটা শূন্যতা রেখে গেলেন তিনি, বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটা পূরণ হবে কি? আমি মনে করি আমার চেয়ে সে গুণী শিল্পী এই কারণে যে, আমার দেখা জীবনে ফকির আলমগীর তার সঙ্গীতে একই সঙ্গে দুটো রূপ ধারণ করেছেন। তার একটি হচ্ছে গণসঙ্গীত, আরেকটি পপসঙ্গীত। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশে গণসঙ্গীতকে রূপ ধারণ করার যোগ্যতা একমাত্র সে-ই রাখত। আজকে সে চলে গেল। তাতে আমি মনে করি, তার এই চলে যাওয়ায় বাংলাদেশে গণসঙ্গীতের একটা অবসান হয়ে গেল। একটা শূন্যতার সৃষ্টি হলো। এই শূন্যতা কবে কীভাবে পূরণ হবে আমি জানি না। পঞ্চরত্নের সবাই নিজ গানে স্বাতন্ত্র্য ধরে রেখেও বন্ধুত্বের ঘনিষ্ঠতা কীভাবে ধরে রেখেছিলেন? আসলে আমরা আমাদের জীবনে সব সময়ই পরস্পরের খোঁজখবর রাখতাম। নিজেদের মধ্যে একটা আন্তরিকতা ছিল। সেরকম আন্তরিকতা তো বর্তমান মোবাইলের যুগেও পাবেন না। আমাদের আড্ডাগুলো যার যার বাড়িতে হতো। কোনো একসময় আমার বাড়িতে, কোনো একসময় ফকির আলমগীরের বাড়িতে, কখনো আজমের বাড়িতে, কোনো একসময় ফিরোজের বাড়িতে। পালা করে ঘুরে-ফিরে এই আড্ডাটা হতো। এখন তো এরকম সুসম্পর্কের আড্ডা আর পাবেন না। এই চর্চাটাই তো আর নাই। আবার যখন বিভিন্ন প্রোগ্রামে বিভিন্ন এলাকায় যেতাম সেখানেও একটা প্রফুলস্নকর আড্ডায় মেতে উঠতাম। একত্রে রাত্রিবাস করতাম। সংসারজীবনে প্রবেশের আগে এরকম আড্ডা ও একত্র রাত্রিবাস কত যে গেছে তার কোনো হিসাব নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে