সেলুনে গান গেয়ে ভাইরাল ৫ বন্ধু

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০২২, ১৪:৪৪

যাযাদি ডেস্ক

সেলুনের যন্ত্রপাতি দিয়ে গান তুললেন ৫ বন্ধু। রাতারাতি সেই গান ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। প্রশংসায় ভাসতে থাকেন নোয়াখালী জেলা শহরের নরসুন্দর ধ্রুব মজুমদার ও তার চার বন্ধু। তারপর খোলেন ব্যান্ড ‘সাদা-কালো’। 

চার বন্ধু হলেন- তন্ময় দেবনাথ ছোটন, সবুজ দেবনাথ, বিজয় চন্দ্র শীল ও শান্ত দাস। ধ্রুব মজুমদার নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে ডিগ্রি শেষ করেছেন। ছোটবেলা থেকে বাবার সেলুনে সময় দিতেন তিনি। সেলুনে চুল কাটাতে এসে ২০১২ সালে পরিচয় হয় তন্ময় দেবনাথ ছোটন, সবুজ দেবনাথ ও বিজয় চন্দ্র শীলের সঙ্গে। তারপর গড়ে ওঠে তাদের সখ্যতা। প্রতিদিন রাত ১০টার পর দোকানের শাটার বন্ধ করে দিয়ে চলে গানের আসর। 

প্রতিদিন গানের আসর বসলেও কখনো কোনো গান তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাড়েননি। কিন্তু সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া হাওয়া সিনেমার ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গানের একটি ভিডিও ছাড়েন তারা এবং তা রাতারাতি ভাইরাল হয়ে যায়। গানটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। 

সাদা কালো ব্যান্ডের মূল শিল্পী সবুজ দেবনাথ নোয়াখালী সরকারি কলেজে প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকোত্তর করছেন। তিনি বলেন, আমি হারমোনিয়াম দিয়ে হাওয়া সিনেমার ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গানটি তুলছিলাম। আমরা প্রতিদিন রাত ১০টার পর সবাই একত্রিত হয়ে সেলুনে গান গাই।

বিজয় আমাকে খুব অনুরোধ করে বলল, দাদা এই গানটা আমি ফেসবুকে দেব। তারপর গানটা রেকর্ড করা হয় এবং ফেসবুকে ছাড়া হয়। রাত না পেরুতেই গানটি ভাইরাল হয়ে যায়। সবাই আমাদের প্রশংসা করে এবং নতুন নতুন গান আপলোড দিতে বলে। যেহেতু আমরা সাদা কালো গান গেয়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছি, তাই আমাদের ব্যান্ডের নাম দিয়েছি সাদা কালো। 

নরসুন্দর ধ্রুব মজুমদার বলেন, ছোটবেলা থেকে আমার বাদ্যযন্ত্র বাজানোর প্রতি টান ছিল। কোনো অনুষ্ঠান হলে আমাকে বাদ্যযন্ত্র বাজানোর জন্য নিতো। আমাদের পারিবারিক ব্যবসা সেলুনের। পড়ালেখার পাশাপাশি বাবার সেলুনের দোকানে সময় দিতাম। ২০১২ সালে চুল কাটাতে আসে তন্ময় দেবনাথ। আমাকে গুনগুনিয়ে গান গাইতে দেখে সে আমার দোকানে নিয়মিত আসত। তারপর শুরু হয় দোকানে গানের আসর। ফেসবুকে কখনো গান ছাড়ব, এটা আমরা ভাবি নাই। 

প্রতিটি গানের সঙ্গে হারমোনিয়াম বাজায় তন্ময় দেবনাথ ছোটন। তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। গানের প্রতি নেশা থাকায় ঢাকায় ২ মাস চাকরি করে নোয়াখালী ফিরে এসেছেন।

তিনি বলেন, এখানে চুল কাটাতে আসতাম। যদিও তখন ধ্রুবকে চিনতাম না। দেখতাম দোকানে হারমোনিয়াম ও বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র পড়ে আছে। এভাবে কয়েক বার আসার পর জানতে পারি, সেলুনের দোকানের মালিকের ছেলে ধ্রুব সারা দিনের কাজ শেষে ক্লান্তি দূর করতে বাদ্যযন্ত্র বাজান। তারপর আমরা তার সঙ্গে যুক্ত হই। এভাবে আমাদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ফেসবুকনির্ভর ছিলাম না আমরা। হঠাৎ একটা গান ছাড়ার পর সবাই খুব বাহবা দিচ্ছে। সবার ভালোবাসা পাওয়ায় আমাদের ভালো লাগছে। 

যাযাদি/ এস