গোটা বিশ্বেই মার্কিন হামলা চলছে : মান্দানা করিমি
প্রকাশ | ২৩ জুন ২০২৫, ১১:৪৮

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার আগুনে ঘি ঢেলেছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত রোববার ভোররাতে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনায় ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন যুদ্ধবিমান বি-২। যুক্তরাষ্ট্রের এই আগ্রাসনে নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা।
জানা গেছে, হামলার লক্ষ্য ছিল ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহান-এ অবস্থিত ইরানের গোপন পরমাণু স্থাপনাগুলো। এগুলো মাটির নিচে নির্মিত হওয়ায় ধ্বংসে ব্যবহার করা হয়েছে আমেরিকার বিধ্বংসী বাঙ্কার ব্লাস্টার বোমা।
হামলার পরই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির এক উপদেষ্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এবার আমাদের পালা। আমেরিকার নৌবহরে পালটা হামলা চালাবে ইরান।”
এছাড়া ইরানের পক্ষ থেকে বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রুট হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার হুমকি দেওয়া হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কার্যত সেই হুমকি বাস্তবায়ন করে তেহরান।
এমন পরিস্থিতিতে নিজের দেশ ও পরিবার নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইরানি বংশোদ্ভূত অভিনেত্রী মান্দানা করিমি। বর্তমানে ইউরোপে অবস্থানরত এই অভিনেত্রী এক আবেগঘন পোস্টে নিজের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, “আমি মেসেজের উত্তর দিচ্ছি, নিজেকে ঠিক দেখানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু আমি ঠিক নেই। যা করছি নিজের এবং পরিবারের জন্য। কিন্তু প্রতি মুহূর্ত উদ্বেগে কাটছে। কীভাবে ঠিক থাকব, যখন দেখছি শিশুদের মৃত্যু হচ্ছে। শুধু ফিলিস্তিন কিংবা ইরান নয়, গোটা বিশ্বেই মার্কিন হামলা চলছে, অথচ সবাই নীরব।”
অভিনেত্রী আরও বলেন, “আমি শান্ত ইউরোপের রাস্তায় হাঁটছি, কিন্তু মনে হয় আমি যেন ভূত। আমার একটা অংশ যেন এখনও ইরানেই রয়েছে— যেখানে মা, ভাই, ভাইপো, ভাইজিরা আছেন। মনে হয় পরের ক্ষেপণাস্ত্রটা হয়তো আমাদের বাড়িতেই পড়বে।”
মান্দানা করিমি বলেন, “আমাকে ভুল বুঝবেন না। আমরা কেউ মৃত্যুকে ভয় পাই না। কিন্তু নিজের দেশকে চোখের সামনে পুড়তে দেখা, আক্রমণকারীদের প্রশংসা সহ্য করা যেন অসহনীয়। ইরান শুধু কোনো দেশ নয়। ইরান আমার মায়ের হাত, ধুলোর মাঝে জুঁইফুলের গন্ধ, ঘুমপাড়ানি গান। সেই ইরানেরই মৃত্যু হচ্ছে।”
অভিনেত্রী বিশ্ববাসীর প্রতি আর্জি জানান, “আমি সত্যিই ভালো নেই। তাই চুপ করে বসে থাকবেন না। দয়া করে প্রতিবাদ করুন। আপনারা চুপ করে থাকলে মনে হবে সত্যি কিছু ভুল হচ্ছে।”
এদিকে বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এই হামলার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরান বড় ধরনের সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে। এতে করে গোটা মধ্যপ্রাচ্য জ্বলে উঠবে সংঘাতে, যার প্রভাব পড়বে বিশ্ব অর্থনীতি ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে।