ঝিনাইগাতীতে বন্যহাতির সঙ্গে যুদ্ধ করে পাহাড়ি মানুষের বসবাস

প্রকাশ | ১৩ নভেম্বর ২০২০, ১৮:১৩

গোলাম রব্বানী টিটু, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) সংবাদদাতা

 

শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ের  লোকালয়ে সম্প্রতি বন্যহাতির দলের সঙ্গে যুদ্ধ করে পাহাড়ি মানুষরা বসবাস করছে। বন্যহাতির দল তাণ্ডব চালিয়ে কৃষকের সদ্য রোপণ করা আমন ফসলের পাকা ধান বিনষ্ট করে যাচ্ছে। পাহাড়ি জনগোষ্ঠী রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে ফসলের মাঠ আর বাড়িঘর।

 

এলাকাবাসী জানান, কয়েকদিন থেকে বন্যহাতির দল লোকালয়ে প্রবেশ করে সন্ধ্যার আগ মুহ‚র্তে রের হয়ে হাতির অন্য কোনো খাবার না থাকায় তারা দলবেঁধে সদ্য রোপণ করা কৃষকের কষ্টে অর্জিত ফসলে হামলা চালিয়ে থাকে।

 

ঢাকঢোল পিটিয়ে, আগুনের মশাল ও পটকা বাজিয়েও হাতি তাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না, এখন তারা আর ভয় পায় না, বরং উল্টো পাহাড়ি জনতাকে ধাওয়া করে। রাতের আঁধারে হাতির দল হঠাৎ প্রবেশ করে পাহাড়ি গ্রামে তাণ্ডবলীলা চালায়।

 

এ সময় হাতির দল পাহাড়ি গ্রামের সদ্য রোপণ করা বিভিন্ন জাতের সবজি বাগান ও আমন আবাদ খেয়ে পা দিয়ে পিষিয়ে দিয়েছে। জনতার কাছ থেকে ধাওয়া খেয়ে তারা গজনির পাশ দিয়ে চলে গিয়ে পাহাড়ের অন্য গ্রামে আক্রমণ চালায়। এভাবে শত শত একর জমির ফসল বিনষ্ট করে ফেলেছে হাতির দল। হাতির দলকে ধাওয়া করে দৌড়ানোর চেষ্টা করলেও তারা না যেয়ে পটকার শব্দে ভোর রাতে তারা গভীর জঙ্গলে পালায়।

 

এ অবস্থায় পাহাড়ি আদিবাসীরা হাতির আক্রমণের ভয়ে রাত জেগে বাড়িঘর ও ফসলের মাঠ পাহারা দিচ্ছেন। বন্যহাতির সমস্যা ৩০ বছরেও কোনো সমাধান না হওয়ায় পাহাড়ে বসবাসকারীদের দুঃখের শেষ নেই। হাতি দমনে সোলার ফেন্সিং প্রকল্প হাতে নিলেও এখন আলোর পথ না দেখে প্রকল্পের চাকা বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও সরকারি বেসরকারি সংস্থা বড় বড় বুলি আওড়ালেও বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ  নেওয়া হয়নি।

 

ভারতে কাঁটাতারের বেড়া থাকায় হাতির দল আর ফিরে যেতে না পেরে গারোপাহাড়েই তাদের অভয়াশ্রম গড়ে তুলে দলের পাল্লা ভারী করে এ পর্যন্ত ৫০ জন মানুষের তাজা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।  সচেতন মহল মনে করছে হাতি নিয়ন্ত্রণ করা না হলে এদের বংশবৃদ্ধি হয়ে পাহাড়ি মানুষের ব্যাপক ক্ষতি ছাড়াও আতঙ্কিত হয়ে থাকতে হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ বলেন, পাহাড়ি জনপদে এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা। হাতির উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে ওপর মহলে জানানো হবে।