শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গাজীপুরে চাষের জমিতে পরিত্যক্ত পলিথিন : ধান চাষে বিড়ম্বনা

গাজীপুর সদর প্রতিনিধি
  ১৩ জানুয়ারি ২০২১, ২০:৩০

চলছে বোরো চাষের মৌসুম, সারাদেশের মতো গাজীপুরের চাষিরা নেমে পড়েছেন অন্ন উৎপাদনে। দীর্ঘ জলাবদ্ধতা কাটিয়ে নিম্নাঞ্চল যখন চাষের জন্য প্রস্তুত, ঠিক তথনই চাষের কাজে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বানের জলে ভেসে আসা পলিথিন।

ধানের ক্ষতিকর পতঙ্গ কীটনাশক দিয়ে হত্যা করা গেলেও মাটিতে মিশে থাকা পলিথিন অপসারণ ছাড়া নিমূল সম্ভব নয়। যা মাটির গভীরে মিশে জমিকে করছে চাষ অনুপযোগী। তাই চাষের জন্য পলিথিন অপসারণ জরুরী। মাটির গভীর পর্যন্ত মিশে থাকায়, হাল চাষের পরেও বের হয়ে আসে পলিথিনের টুকরো। মাটিতে পড়ার পর বা মাটির একটু নিচে চলে যাওয়ার পর সেই পলিথিনের মধ্য দিয়ে নিচের দিকে আর পানি যেতে পারে না। অর্থাৎ, মাটির স্তরে পানি ও পুষ্টি উপাদানের চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে মাটির গুনগত মান ও উর্বরতা হ্রাস পাওয়ায় শস্যের ফলন কমে যায়। এমনকি মাটির নিচের পলিথিনের কারণে গাছ সঠিক ভাবে তার খাবার পায় না। গাছ দুর্বল হয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া। অর্থাৎ ফলন কম এবং রোগ বালাইয়ের সহজ আক্রমন।

সরেজমিনে,গাজীপুরের সদরের পিরুজালী, ভাওয়ালগড় ও মির্জাপুর এই তিনটি ইউনিয়নের মাঝে বয়ে চলা লবণদহ নদীর পারে গিয়ে দেখা যায়, হাল চাষের পর চাষীরা মাটির গভীরের পলিথিন অপসারনের চেষ্টা করছেন, পাশেই আরেক ক্ষেতে সারি ধরে পলিথিন জমানো। কৃষকরা জানান, পলিথিনের জন্য তাদের চাষের খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। সে তুলনায় আশানুরূপ ফলন হয় না। তাই অধিকাংশ জমিই পতিত পরে রয়েছে।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের প্রিন্সিপাল সাইন্টিফিক অফিসার সাজিদুর রহমান পলিথিনের অপকারিতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, সত্যিই এটি একটি দুঃখজনক ব্যাপার। কারন চাষের ক্ষেত্রে এর কোন রাসায়নিক সমাধান নেই, মাটি থেকে অপসারনই একমাত্র সমাধান। যা চাষের খরচ বৃদ্ধি করে দেয়। এর দায় কিন্তু আমাদেরই, কলকারখানা ও আবাসিক বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে এমনটা হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। এমন দুর্ভোগ চলমান থাকলে চাষীরা ধীরে ধীরে চাষে নিরুৎসাহিত হবে। তিনি আরো বলেন, সচেতন না হলে তা দেশের মোট উৎপাদিত খাদ্যের হিসাবে ধাক্কা দিতে পারে। সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনাই হতে পারে এই সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান।

যাযাদি/এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে