শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিশেষজ্ঞসহ মতামতের ভিত্তিতে কার্বন নির্গমণ কমানোর কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের আহ্বান

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২১:০০

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলার স্বার্থে বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্ট সবার মতামতের ভিত্তিতে কার্বন নির্গমণ কমানোর কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি) এবং ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক সাউথ এশিয়া-বাংলাদেশ। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানানো হয়।

জাতীয় প্রেসকাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় গ্রীন হাউজ গ্যাস নির্গমণ হ্রাসকল্পে বাংলাদেশের জাতীয়ভাবে নির্নীত অবদান (এনডিসি-ন্যাশনাল ডিটারমাইন্ড কনট্রিবউশনস) প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিত আমাদেও প্রত্যাশা ও প্রস্তবনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সিপিআরডি’র নির্বাহী প্রধান মো. শামসুদ্দোহা। আলোচনায় অংশ নেন কাইমেট চেঞ্জ জার্নালিষ্ট ফোরামের (সিসিজেএফ) সভাপতি কাওসার রহমান, সুন্দরবন ও উপকুল সুরা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল ভদ্র এবং সিপিআরডি’র সিনিয়ার রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট আকিব জাবেদ ও আল ইমরান।

সংবাদ সম্মেলনে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর, বাস্তবায়নযোগ্য ও যুগোপযোগী এনডিসি প্রণয়ণের উপর গুরুত্বারোপ করে বলা হয়, পুনর্মূল্যায়িত এনডিসি (জাতীয়ভাবে নির্নীত অবদান) বিষয়ে নাগরিক সমাজেরূপ্রত্যাশা, সদ্য জমাদানকৃত অন্তবর্তীকালীন নথিটির বিশ্লেষণ উত্থাপন এবং এনডিসি বিষয়ে সুপারিশ তুলে ধরা হয়।

সুপারিশে বলা হয়, বাংলাদেশকে একটি সর্বজন গ্রহণযোগ্য পুনর্মূল্যায়িত এনডিসি তৈরি করতে হবে। কৃষির মতো দেশের বেশিরভাগ মানুষের জীবিকা নির্ভরশীল কোন খাতকে এনডিসিতে অন্তর্ভূক্ত করা যাবে না। গ্রীণ হাউজ গ্যাস-ভুক্ত নতুন কোন গ্যাসের উদগীরণ হ্রাসের টার্গেট নেওয়া যায় কি-না তা খতিয়ে দেখতে হবে। এনডিসি পুনর্মূল্যায়নেরে ক্ষেত্রে বিভিন্ন অংশীজনের জ্ঞান এবং যুক্তিযুক্ত প্রস্তাবনাকে বিবেচনায় নিতে হবে। এনডিসি পুনর্মূল্যায়ন প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণ মূল করতে দেশের নাগরিক সমাজ, গবেষক, উন্নয়ন কর্মী ও উন্নয়ন সহযোগীদের যুক্ত করতে হবে।

লিখিত বক্তব্যে মো. শামসুদ্দোহা বলেন, বর্তমানে বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা ৪২০ পিপিএম ছাড়িয়ে গেছে। যা বিগত ৪ ল ২০ হাজার বছরেও দেখা যায়নি। বায়ুমন্ডলে তাপ বৃদ্ধিকারী (তাপ শোষণ ও তাপ ধারণকারী) এসব গ্যাস যেমন কার্বন-ডাই-অক্সাইড, কার্বন-মনো-অক্সাইড, কোরোফোরো কার্বন, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড ইত্যাদি গ্রীণ হাউজ গ্যাসের উত্তরোত্তর বৃদ্ধির ফলে পৃথিবীর গড় উষ্ণতা ইতোমধ্যে শিল্প-বিপ্লবের পর্যায় থেকে এক দশমিক ১০ সে বেড়েছে। ইতোমধ্যে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির এই উর্ধমূখী প্রবণতার ফলে নেতিবাচক প্রভাব পরিলতি হচ্ছে। আবহাওয়াজনিত চরম দুর্যোগ বাড়ছে। মানুষের জীবন-জীবিকা ক্রমেই ঝুঁকিগ্রস্ত হচ্ছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়ছে। এমতাবস্থায় কার্বন উদগীরণের মাত্রা কমানোর জন্য ধনীদেশগুলোর আইনী বাধ্যবাধকতা থাকলেও তারা দায়ভার এড়িয়ে গেছে। তাই এ বিষয়ে কার্যকর পদপে গ্রহণ করা জরুরী।

সিসিজেএফ সভাপতি কাওসার রহমান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সারা পৃথিবীতেই কথা হচ্ছে কিন্তু তারপরও আমরা দেখছি এখনো নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে জানা-বোঝার ঘাটতি রয়েছে। বাংলাদেশ যে এনডিসিটি জমা দিয়েছে তার টেকনিক্যাল দিকগুলো দেখে আমরা হতাশ হয়েছি। এ ক্ষেত্রে এমন কোন খাতকে যুক্ত করা যাবেনা, যার ফলে দেশের সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে কৃষি খাতকে এখান থেকে বাইরে রাখতে হবে। অন্যদিকে বিদ্যুত ও জ্বালানী খাতকে যুক্ত করতে হবে।

যাযাদ/ি এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে