বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

​হাইমচরের মেঘনায় অবাধে জাটকা নিধন

হাইমচর (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
  ১০ মার্চ ২০২১, ১৯:৩৮

হাইমচরের মেঘনায় অবাধে জাটকা নিধন করছে বহিরাগত জেলেরা। উপজেলা ট্রান্সফোর্স কমিটির অভিযান অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও নিধন হচ্ছে জাতীয় সম্পদ ইলিশ। একদিকে উপজেলা ট্রান্সফোর্স কমিটির অভিযান অপর দিকে প্রকাশ্যে জাটকা নিধন করছে জেলেরা। বহিরাগত জেলেরা বহর নিয়ে এসে হাইমচরের গাজীপুর মেঘনায় জাল ফেলে জাটকা নিধন করতে দেখা যাচ্ছে।

জানা যায়, ১নং গাজিপুর ইউনিয়নের গাজির টেকে মতলব উত্তর, মহনপুর, চাঁদপুর সদর ও বহরিয়া এলাকার জেলেরা প্রতিদিন বিকেল থেকেই নদীতে জাল ফেলে জাটকা শিকার করে থাকে। তাদের ট্রলারে ইট, পাটকেলসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তারা প্রভাব খাটিয়ে নদীতে জাল ফেলে। প্রশাসনের টিম, কোস্টগার্ড ও নীলকমল নৌপুলিশসহ কোনো টিমই তাদের ধাওয়া করার সাহস করে উঠতে পারেনি। নদীতে অভিযান চলাকালীনও জেলেরা জাটকা নিধন করে। জেলেদের বহর দেখে অন্যদিকে চলে যায় অভিযানে টিম এমন অভিযোগ রয়েছে অনেক।

অভিযানের টিমের সঙ্গের প্রশাসনিক এক কর্মকর্তা জানান, বহিরাগত এ জেলেরা চাঁদপুর মোহনা দিয়ে বহর নিয়ে হাইমচরের মেঘনায় এসে মাছ শিকার করে। চাঁদপুরের প্রশাসন চাইলে এসব বহিরাগত জেলে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাদেরকে যদি চাঁদপুরের মোহনায় কড়া পাহারা দিয়ে আটকে দেওয়া যায় তাহলে তারা হাইমচরে ঢুকতেও পারবে না, মাছ শিকার করতে পারবে না। হাইমচরের মেঘনায় জাটকা রক্ষা করতে হলে বহিরাগত জেলেদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাদের একমাত্র চাঁদপুর প্রশাসনই পারে নিয়ন্ত্রণ করতে। হাইমচরের মেঘনায় তারা বহর নিয়ে মাছ নিধন করে। অভিযানের টিমের সদস্য কম থাকায় তাদের ধাওয়া করা সম্ভব হয়নি। অভিযানের টিম দেখলে তারা ভয়ে পালাবার কথা, কিন্তু উল্টো এ জেলেরা লাঠি, ইটপাটকেল নিয়ে অভিযানে টিমকে ধাওয়া করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গাজীপুর ইউনিয়নের কয়েকজন জেলে বলেন, হাইমচরের কোস্টগার্ড নৌপুলিশ নামমাত্র অভিযান পরিচালনা করেন। নদীতে তাদের সামনে মাছ নিধন করে নিয়ে যাচ্ছে বহিরাগত জেলেরা। তারা দেখেও যেন না দেখার মতো করে চলে যান। অভিযান শুধু মনে হচ্ছে আমাদের জন্য। আমরা নদীর পাড়ে বসে বসে দেখি আর শুধু আফসোস করি। আমাদের চোখের সামনে দিয়ে নদী থেকে দূরদূরান্ত থেকে আসা জেলেরা মাছ শিকার করে নিয়ে যাচ্ছে। এই জেলেদের নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে মেঘনায় ইলিশ রক্ষা করা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না বলে মনে করেন তারা।

অভিযান চলছে, জাটকাও নিধন হচ্ছে সমান তালে এই বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় জাটকা নিধন প্রতিরোধে আমরা অভিযান পরিচালনা করে আসছি, দলবেঁধে জাটকা নিধন বন্ধে সমন্বিত অভিযান করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার চাই থোয়াইহলা চৌধুরী বলেন, হাইমচর প্রশাসন, কোস্টগার্ড, মৎস্য বিভাগের সমন্বয়ে অভিযান চলছে, গত সোমবারের অভিযানে আটক ১১ জনের মধ্যে অপ্রাপ্তবয়স্ক ৫ জনকে জরিমানা, ৬ জনকে জেল দেওয়া হয়েছে। জাটকা নিধনে জড়িত বহিরাগত জেলেদের নিয়ন্ত্রণে গাজীপুর ও ঈশানবালা মধ্যবর্তী একটেল টেক এলাকায় কোস্টগার্ড অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে অভিযান পরিচালনা করলে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে, সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে।

যাযাদি/এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে