দেবিদ্বারে কালের বিবর্তনে দেশি প্রজাতির ছোট মাছ বিলুপ্তির পথে

প্রকাশ | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮:০৯

মো. জামাল উদ্দিন দুলাল, দেবিদ্বার (কুমিল্লা) থেকে

কুমিল্লার দেবিদ্বারে উপজেলার নদনদী, খাল-বিল, হাওর-জলাশয় থেকে দেশীয় প্রজাতির মাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। দুই দশক আগেও গোমতী নদী, দেবিদ্বারে বিভিন্ন নদী খাল-বিল, হাওর-বাঁওড় ও বিল-জলাশয়ে দেশীয় প্রজাতির মাছে ভরপুর ছিল। কালের বিবর্তনে নদনদী, খাল-বিল, বিল-জলাশয় ও হাওর-বাঁওড়গুলো ভরাট হয়ে শুকনো মৌসুমে পানিশূন্য হয়ে যায়। প্রাকৃতিকভাবে বংশ বিস্তার করতে না পারায় দেশি প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বর্ষাকালে প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের খালে বেলের জাল দিয়ে রেণু পোনা ও ডিমওয়ালা মা মাছ ধরার কারণেও এ সর্বনাশ দেখা দিয়েছে। অর্থলোভী মাছ শিকারিরা কারেন্ট জাল দিয়ে আইন অমান্য করে অবাধে রেণু পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ ধরছে। এতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পরবর্তী বংশবিস্তার শূন্যের কোটায় এসে ঠেকেছে। বিশেষ করে মাছ ডিম ছাড়ার সময়ে এবং বর্ষাকালে রেণু পোনা ধরা সম্পূর্ণ নিষেধ থাকলেও তা কেউই মানছে না। কিন্তু বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে এসব মাছের অনেক প্রজাতি এখন আর চোখে পড়ে না।

 

জানা গেছে, বাজারি, টাকি, কই, চিংড়ি, টেংরা, চিতল, মাগুর, শিং, মলিয়া, খইয়া, চেদ্রি, পুঁটি, চান্দা, টেংরা, কালিবাউশ, বাইল্যা, সরপুঁটি, পাবদা, মহাশোল, খসলা ইত্যাদি মিঠা পানির মাছ স্বাদে অতুলনীয়। গ্রামগঞ্জের মানুষ দেড়যুগ আগেও নদনদী, খাল-বিল, বিল-জলাশয় ও হাওর-বাঁওড়গুলো থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ এসব মাছ আহরণ করত। অনেকে পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে সংসারের খরচ চালাত। কিন্তু এখনকার পরিস্থিতিও প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। কিছু কিছু প্রজাতির মাছ এখনও কোনো রকমে টিকে আছে, তাও এতই র্দুলভ যেন মণিমাণিক্যের টুকরো। বাজারে গিয়ে এসব মাছের দাম শুনে মধ্যবিত্ত মানুষদের মাটিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ার মতো অবস্থা হয়।

 

 এ ব্যাপারে দেবিদ্বার উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন জানান, গ্রাম অঞ্চলের খাল-বিলে কিছু অসাধু মাছ ব্যবসয়ী বেলের জাল দিয়ে ডিমওয়ালা এবং রেণু পোনা ধরে ফেলার কারণ ও পুকুরগুলোতে বিষ দিয়ে মাছ ধরার কারণে দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছ উৎপাদন কমে যাচ্ছে। তবে এভাবে রেণু পোনা ধরা অব্যাহত থাকে তাহলে দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছ দিন দিন বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

 

যাযাদি/ এস