​​​​​​​দুর্গম চৌহালী থেকে  হারিয়ে যাচ্ছে শিমুল গাছ

প্রকাশ | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২০:৩১

রোকনুজ্জামান (চৌহালী) সিরাজগঞ্জ

 

 

চারদিকে দখিনা বাতাসে আম্রমুকুলের মৌ মৌ ঘ্রাণ কোকিলের সুমিষ্ট কুহুতালে ফাগুনের উত্তাল হাওয়া দিচ্ছে দোলা গাছে গাছে জেগে উঠেছে সবুজ পাতা মুকুল আর শিমুল ফুল দেখে বোঝা যায় শীত বিদায় নিয়ে এসেছে ফাগুন ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে আবহমান গ্রামবাংলার প্রকৃতি রাঙিয়ে উঠে নয়নাভিরাম শিমুল ফুল কিন্তু কালের বিবর্তনে সিরাজগঞ্জের  চৌহালীতে  আগুন ঝরা ফাগুনে চোখ ধাঁধানো গাঢ় লাল রঙের অপরূপ সাজে সজ্জিত শিমুল গাছ এখন বিলুপ্তপ্রায় এক যুগ আগেও উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তায় প্রচুর শিমুল গাছ দেখা যেত গাছে গাছে প্রস্ফুটিত শিমুল ফুলই স্মরণ করিয়ে দিতো, এখন বসন্ত

 

প্রাকৃতিকভাবে তুলা আহরণের অন্যতম অবলম্বন শিমুল গাছ গাছের সব অংশেরই রয়েছে ভেষজগুণ শীতের শেষে শিমুলের পাতা ঝরে পড়ে বসন্তের শুরুতেই গাছে ফুল ফোটে আর ফুল থেকেই হয় ফল চৈত্র মাসের শেষের দিকে ফল পুষ্ট হয় বৈশাখ মাসের দিকে ফলগুলো পেকে শুকিয়ে যায় বাতাসে আপনা আপনিই ফল ফেটে প্রাকৃতিকভাবে তুলার সঙ্গে উড়ে উড়ে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়া বীজ থেকেই নতুন গাছের জন্ম হয় অন্যান্য গাছের মত গাছ কেউ শখ করে রোপণ করে না নেওয়া হয় না কোন যত্ন প্রাকৃতিকভাবেই গাছ বেড়ে ওঠে গাছের প্রায় সব অংশই কাজে লাগে এর ছাল, পাতা ফুল গবাদিপশুর খুব প্রিয় খাদ্য

 

বর্তমানে মানুষ গাছ কারণে-অকারণে কেটে ফেলছে অতীতে ব্যাপকহারে নির্মাণ কাজ, টুথপিকসহ নানা ধরনের প্যাকিং বাক্স তৈরি ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হলেও সেই তুলনায় রোপণ করা হয়নি ফলে আজ বিলুপ্তির পথে শিমুল গাছ

 

উপজেলার খাষকাউলিয়া  গ্রামের প্রবীণ আবুল হোসেন  বলেন, আগে গ্রামে প্রচুর শিমুল গাছ ছিল এখন আর দেখা যায় না

উপজেলা সদরের বাসিন্দা কৃষক খলিল ব্যাপারী  বলেন, একটি বড় ধরনের গাছ থেকে তুলা বিক্রি করে ১০-১৫ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব আগের তুলনায় এখন শিমুলের তুলার দাম অনেক বেড়ে গেছে তবুও এই গাছ বিলুপ্তির পথে এদিকে "উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা জেরিন  আহমেদ  বলেন, বানিজ্যিকভাবে এখন দেশের কোথাও এই শিমুলগাছ বা তুলা চাষ করা হয় না এটি প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে যার কারণে শিমুলগাছ ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে এর তুলাটা খুবই ভাল এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ হলে মানুষ আসল তুলার মর্ম বুঝতো

 

যাযাদি/এস