আখাউড়ায় অবৈধ দখলে অস্তিত্ব হারাচ্ছে কালন্দি খাল

প্রকাশ | ০৬ মার্চ ২০২২, ২০:১৫

আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর এলাকার একসময়ের খরস্রোতা  কালন্দি খালটি অবৈধ দখলে অস্তিত্ব হারাচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা খালের দুই পাড়  দখল করে দোকান বাসাবাড়ি নির্মাণ করছে  ভূমিদস্যুদের দখলে ময়লা-আবর্জনায় অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী কালন্দি খালটি বর্তমানে এই খালের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া কঠিন খালটির কারণে শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছিল একসময় বর্তমানে খালটি দেখে বোঝার উপায় নেই এটি খাল ছিল খালের দুই পাড় কোথাও কোথাও খাল দখল করে আরসিসি পিলার দিয়ে দোকানপাট বাসাবাড়ি নির্মাণ করেছে ভূমিদস্যুরা আবার অবৈধ দখলদাররা খালের পানি তিতাস নদীতে পতিত হওয়ার মুখে জাল ছাই দিয়ে স্বাভাবিক পানির গতিরোধ করে মাছ চাষ করছে বাসাবাড়ির বর্জ্য আর দোকানপাটের ময়লা আবর্জনা পড়ে কোথাও কোথাও ময়লার স্তূপে পরিণত হয়েছে এমনকি খালের ওপর নির্মিত ব্রিজের দুইপাশও দখল করে নিয়েছে তারা এতে বৃষ্টির পানি বাসাবাড়ির গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত পানি নিষ্কাশনে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পানি জমে ময়লা দুর্গন্ধ সৃষ্টি হচ্ছে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে

 

উজানের পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট কালন্দি খালটি আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশ সীমানায় প্রবেশ করে খালটি আখাউড়া-আগরতলা সড়কের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পৌরশহরের সড়ক বাজারের ওপর দিয়ে তিতাস নদীতে গিয়ে মিলিত হয়েছে ১৫০ থেকে ২০০ বছর আগে ব্রিটিশ আমলে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি ঢলের পানি নিষ্কাশন সেচ কাজের সুবিধার জন্য খালটি খনন করা হয় বলে জনশ্রুতি আছে

 

একসময় শুষ্ক মৌসুম বাদে বছরের বাকি সময়ে খাল দিয়ে নৌকা চলাচল করত আখাউড়ার কয়েকটি বাজারে মালামালসহ অন্যান্য মালামাল পথে নৌকা দিয়ে নিয়ে আসাত খালের পানি এখানকার কৃষিজমির সেচের কাজে ব্যবহৃত হতো একসময় উজানের বিশাল জলধারা প্রবাহিত থাকলেও দখলদারদের করাল গ্রাসে খালটি এখন মৃতপ্রায় শহরের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র খালটির সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় জনস্বাস্থ্যও এখন অনেকটা হুমকির মধ্যে

 

জানা যায়, প্রভাবশালীরা রাতের আঁধারে প্রথমে বাঁশ, টিনের চাল দিয়ে মাঁচা বেঁধে জায়গাটি দখলে নেন কিছুদিন পর টিনের বেড়ার আড়ালে পাকা দালান গড়ে তোলেন রহস্যজনক কারণে স্থানীয় প্রশাসনের খালটি রক্ষণাবেক্ষণ ভূমিকা চোখে পড়ে না

 

আখাউড়া উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, খালটি রাধানগর আখাউড়া মৌজার উপরে দিয়ে বয়ে গেছে তিতাস নদীতে খালটি এস. খতিয়ান প্রজার নামে বি এস জরিপে খালটি সরকারের ০১ নং খাস খতিয়ানে লিপিবদ্ধ হয় খালটি এস. ১৩৯ দাগ রূপান্তিত হয়ে বি.এস ২৬৩ দাগের খাল হিসেবে সৃজন হয় খালটি রাধানগর মৌজার বি.এস ম্যাপে পশ্চিম দিকে ৩৭ ফুট প্রস্থ পূর্ব দিকে ৩১ ফুট প্রস্থে উল্লেখ রয়েছে কিন্তু বাস্তবে খালটি ১০ থেকে ১৫ ফুট প্রস্থ খুঁজে পাওয়াও মুশকিল কোনো কোনো স্থানে দখল আর আবর্জনার কারণে খালের অস্তিত্ব পাওয়া যায় না অভিযোগ আছে, গত  বিএস জরিপের সময় খাল পাড়ের কিছু জায়গা বিভিন্ন ব্যক্তিন নামেও রেকর্ড করা হয়েছে

 

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, খালটি নিয়ে আমরা কাজ করছি অচিরেই দখলমুক্ত করতে অভিযান করব

 

জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমানা আক্তার বলেন, ‘কালন্দি খালটি কেন্দ্র করে আখাউড়া পৌরবাসীর জীবনযাত্রা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাতে নতুন জেলা প্রশাসক আসছেন স্যার আমাকে এবং এসিল্যান্ডকে দায়িত্ব দিয়ে গেছেন শিগগিরই আমরা খালটা উদ্ধারে এবং পরিছন্নতার কাজ করব

 

যাযাদি/ এস