অব্যাহত বৃষ্টিতেই

দুধকুমারে নদের ডান তীর রক্ষা বাঁধে দেখা দিয়েছে ধস

প্রকাশ | ২২ মে ২০২৫, ১৬:০৬

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
নদীর তীর রক্ষা বাঁধে ধস । ছবি: যায়যায়দিন

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে সাড়ে দশ কোটি টাকা ব‍্যয়ে নির্মিত দুধকুমার নদের ডানতীর রক্ষা বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই বৃষ্টির পানিতে নদীর তীর রক্ষা বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। বন‍্যা আসার আগেই বাঁধে ধস নামায়  আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কাজের মনিটরিং ব্যবস্থা দুর্বল থাকায় এবং যথাযথ ডাম্পিং না করে সিসি ব্লক বসানোর কারণে সামান‍্য বৃষ্টির পানিতেই বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তারা এখনো কাজ বুঝে পাননি। কাজে অনিয়ম হলে তার দায়ভার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের।

জানা গেছে, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে  'কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার নদী ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন' শিরোনামে ২০২১ সালের ১০ আগস্ট একনকের বৈঠকে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৬শত ৯২ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা। যা বিভিন্ন প‍্যাকেজে বর্তমানে কুড়িগ্রাম পাউবোর তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, দুধকুমার নদীর ডান তীর রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাস্তবায়নে   ১০ কোটি ৪২ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩৩ টাকা ব্যয়ে ১৪ নং প্যাকেজের আওতায় চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকায় ৫০০ মিটার বাঁধ নির্মাণের জন্য কাজ পায় ঢাকার মগবাজারের টিআই-পিভিএল-জেডআই জেভি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর মৌজার দুধকুমার নদের ডানতীর রক্ষায় ৫০০ মিটার বাঁধের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ করেছে ঠিকা প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু এর মধ্যে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির পানিতে বাঁধের কিছু অংশ ধসে পড়েছে। সিসি ব্লক গুলো এলোমেলো ভাবে পড়ে আছে। 

স্থানীয় বাসিন্দা এনামুল, বাসেদ ও লুৎফর রহমান জানান, নদী ভাঙন প্রতিরোধে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হলে আমরা আশায়  বুক বেঁধেছিলাম। কিন্তু কাজ শেষ না হতেই সামান্য বৃষ্টির পানিতেই বন‍্যা আসার আগেই বাঁধ ধসে পড়েছে। দ্রুত তীর সংরক্ষণ বাঁধ মেরামত না করলে বন‍্যায় নদী ভাঙন তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। তাদের দাবি, যাতে আগামীতে ব্লক বসানোর কাজ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজরদারিতে রেখে যেন শেষ করে।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ব‍্যবস্থাপক আরিফুল ইসলাম কাজের অনিয়মের কথা অস্বীকার করে বলেন, প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় এর ক্ষতি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। তিনি বলেন, এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন‍্য কোন ইউ ড্রেন না থাকায় বৃষ্টির পানি শুরুঙ্গ হয়ে প্রবেশ করায় বাঁধের কিছু অংশে ধস দেখা দিয়েছে। নদীর পানি কমলে তা মেরামত করা হবে।

কুড়িগ্রাম পাওবোর উপ-সহকারি প্রকৌশল ও  দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা  রাফিয়া আখতার জানান, বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় দায়িত্ব তাদের। বাঁধের ধসে যাওয়া অংশের কাজ পুনরায় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।