নতুন প্রজন্মকে প্রকৃতিবান্ধব উন্নয়নে সম্পৃক্ত করতে হবে: উপদেষ্টা রিজওয়ানা

প্রকাশ | ২৫ মে ২০২৫, ১৬:২৭

স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আমাদের ধ্বংসাত্মক উন্নয়ন প্রক্রিয়া থেকে নতুন প্রজন্মকে প্রকৃতিবান্ধব উন্নয়ন প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে। 

টাঙ্গাইলে পাঁচ লাখ লাখ গাছ লাগানো হবে- তা দেশীয় গাছ নির্বাচন করা হয়েছে। এ গাছ শুধু সবুজায়ন করার জন্য নয়, আমরা ভালো অক্সিজেন পাবো, দূষণ কমবে, পাখির আশ্রয় হবে। যারা গাছগুলো লাগাবে, গাছের সাথে তাদের একটা আত্মিক সম্পর্ক হয়ে যাবে। আমরা গাছগুলো লাগিয়েই বসে থাকবো না, সেগুলোর যত্ন ও পরিচর্যা করবো।

 রোববার(২৫ মে) সকালে টাঙ্গাইলের জনসেবা চত্বরে পরিবেশ উপদেষ্টা পাঁচ  লাখ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন। এরআগে তিনি জনসেবা চত্বরে দুটি গাছের চারা রোপণ করেন। 

পরিবশে উপদেষ্টা বলেন, প্রকৃতিকে আমরা বিরক্ত করে নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গাছ কেটে বলি, ২০ হাজার গাছ কেটে ৪০ হাজার গাছ লাগাবো। এজন্য আমাদের এতো বড় বড় বিপত্তি হয়। আপনি কিছু প্রাকৃতিক অবস্থা ফেরত আনতে পারেন, কিন্তু সবটা ফেরত আনতে পারবেন না। 

বাংলাদেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি হওয়ারই দরকার ছিলো না- আমরা এতোই প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর ছিলাম। আমরা এমন অত্যাচার করলাম প্রকৃতির সাথে, এখন আমাদের তা সংশোধনের কাজ করতে হচ্ছে। আজকের কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত বা ধ্বংস প্রায় প্রাকৃতিক অবস্থাকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

পরে এদিন দুপুরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান টাঙ্গাইল বনবিভাগের আওতাধীন মধুপুরের টেলকি এলাকায় শাল চারা রোপণ কর্মসূচিতে অংশ নেন। এ সময় তিনি বলেন, মধুপুরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীসহ বনবাসীদের বিরুদ্ধে বনবিভাগের দায়ের করা ১২৯টি মামলা প্রত্যাহার করা হবে। 

বনে বসবাসকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শালবনে আবার শাল গাছ ফেরত আনা হবে। তাই আসন্ন বর্ষায় বেশি বেশি শাল গাছ রোপণ করতে হবে। এখানে যারা বনবাসী আছেন তাদের এই বন রক্ষায় ভূমিকা পালন করতে হবে। এসব কাজে শিক্ষার্থীদেরও সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। বনে যে জায়গা বেদখল আছে সেগুলো চিহ্নিত করতে সীমানা পিলার দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, শালবনে বাণিজ্যিকভাবে ইউক্যালিপটাস ও আকাশিয়া গাছ রোপণ করা হয়। সেগুলো ক্রমান্বয়ে বন্ধ করা হবে। এ সময় মধুপুর বনাঞ্চলের রাজাবাড়ী এলাকায় সীমানা চিহ্নিতকরণের কাজ পরিদর্শন ও সীমানা পিলার স্থাপনের মাধ্যমে ‘স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণের মাধ্যমে মধুপুর শালবন পুনঃপ্রতিষ্ঠা’ প্রকল্পের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। 

দুটি কর্মসূচিতে জেলা প্রশাসক শরীফা হক, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ডক্টর আবু নাসের মোহসিন হোসেন এবং প্রখ্যাত বন্যপ্রাণি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ আলী রেজা খান, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী সহ জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।