সাগরে লঘুচাপ: দিনভর বৃষ্টি, লঞ্চ চলাচল বন্ধ

সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক 

প্রকাশ | ২৯ মে ২০২৫, ১৪:৪০

যাযাদি ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে উপকূলের জেলাগুলোতে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। সারাদিন ঝরছে বৃষ্টি। বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে নদীর পানি। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে, তবে তা থেকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা কম। 

এদিকে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে বরিশালে বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এতে অভ্যন্তরীণ সব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডব্লিউটিএ। একই সঙ্গে নদীবন্দরগুলোতে ২ নম্বর সতর্কসংকেত জারি করা হয়েছে।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর বন্দর কর্মকর্তা শেখ সেলিম রেজা জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ভোলা, মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলাসহ বিভিন্ন রুটে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে।

লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় দ্বীপজেলা ভোলা ও আশপাশের নদীবেষ্টিত এলাকাগুলোর সঙ্গে বরিশালের নৌযোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা। বন্ধ রয়েছে দৈনিক পত্রিকা সরবরাহও।

দৈনিক পত্রিকার বরিশাল অঞ্চলের বিক্রয় প্রতিনিধি আল আমিন জানান, অভ্যন্তরীণ রুটের সব লঞ্চ বন্দরে নোঙর করে রাখা হয়েছে। ফলে ভোলার বিভিন্ন উপজেলায় পত্রিকা সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি।

অন্যদিকে, ভোর থেকে টানা বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল সীমিত হয়ে গেছে। চাকরিজীবীরা কর্মস্থলে যেতে ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছেন।

বরিশাল আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মাসুদ রানা রুবেল জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর ও নদীবন্দরে ২ নম্বর সতর্কসংকেত জারি করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বরিশালে ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। দিনভর বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে, তবে ধীরে ধীরে আবহাওয়া স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে জানান তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালে আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা জানিয়েছেন, নিম্নচাপটি আজ রাতে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে।

তিনি জানান, এই লঘুচাপটি উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে। কিছুটা উপকূলের কাছাকাছি অবস্থান করছে। অন্যদিকে, দেশে মৌসুমি বায়ু এবার অনেক আগে চলে এসেছে। তাই এটি শক্তি সঞ্চয় কিংবা সাগরে বেশিক্ষণ থাকতে পারছে না। তাই ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা নেই।

আফরোজা সুলতানা আরও জানান, যদি মৌসুমী বায়ু কিংবা বর্ষা আগে না আসতো তাহলে ঘূর্ণিঝড়ের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সঞ্চার করতে পারতো। সাগরে সাধারণত আন্দামান বা দক্ষিণ পাশে লঘুচাপ তৈরি হলে সেগুলো ঘূর্ণিঝড় হয় এবং তীব্র রূপ ধারণ করে। এই লঘুচাপটি সেই পরিবেশে তৈরি হয়নি। তাই ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা দেখছি না।

এদিকে, নিম্নচাপের প্রভাবে সারাদেশে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এই বৃষ্টিপাত ও সঙ্গে দমকা হাওয়া বৃহস্পতিবার দিনভর এবং আগামী শুক্রবারও অব্যাহত থাকতে পারে।

দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সমুদ্রে অবস্থানরত মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে গভীর সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।