টবের গাছের যতœআত্তি

প্রকাশ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

শফিকুর রহমান
টবে কোনো গাছ লাগাবেন সবার আগে সেই গাছের জন্য উপযুক্ত টব বেছে নিন। উপযুক্ত জায়গায় টব রাখুন। গাছের জন্য দরকার পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ উবর্র মাটি। মাটি অনুবর্র হলে গাছ ভালো হবে না। মাটির তিনভাগের এক ভাগ জৈব সার দিতে হবে। সঙ্গে হাড়ের গুঁড়ো, একটু চুন, সামান্য একটু ছাই দিলে পোকা ও রোগ আক্রমণ কম হবে। গাছের গোড়া যেন নিচু না হয়, যাতে পানি না জমে সেজন্য একটু চেপে মাটি সামান্য উঁচু করে দিতে পারেন। সম্পূণর্ নতুন টব। ভালো করে ধুয়ে নিন। নতুন গাছের চারা, দেখে কিনতে হবে রোগমুক্ত কিনা। তারপরেও পাতা হালকা সাধারণ পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। শুকনো দূবার্ ঘাস টবের মাটির মাঝামাঝি দিয়ে তার ওপরে মাটি দিয়ে চারা গাছ লাগানো যায়। চারা কিনলে ছোট ধরনের কেনা উত্তম। গাছ সোজা রাখার জন্য খঁুটি বেঁধে দিন। খঁুটি হতে পারে বঁাশের কঞ্চি, গাছের ডাল বা অন্য সোজা কোনো শক্ত কিছু। বনজ বা ফলজ গাছের জন্য এটা খুবই জরুরি। টবের গাছ ঘন ঘন পরিবতর্ন করবেন না। আসুন জেনে নিই টবে চাষ করার উপযুক্ত কিছু গাছের নাম ও তাদের পরিচযার্র পদ্ধতি। মানিপ্ল্যান্ট : পানি এবং মাটি দুই জায়গাতেই হয়। পানিতে লাগালে ৩-৪ দিন পর পানি পরিবতর্ন করা ভালো। মাটিতে লাগালে মাটি শুকনো হওয়ার আগে পানি দিন। কোনো রাসায়নিক সার সরাসরি গাছের গোড়ায় না দেয়া উত্তম। শিকড়ের ওপর দেবেন না। গোবর সার দেয়া ভালো। যত কম পারবেন তত কম রাসায়নিক সার ব্যবহার করুন। ক্যাকটাস : কণ্টকময় ভালোবাসা। যার আছে সেই তা বুঝতে পারে। পানির চেয়ে রোদ বেশি দরকার। প্র্রতিদিন কিছুটা রোদে রাখুন। শীতকালে পানি কম দিলে চলে। টবের গাছের জন্য যে বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে হবে। প্রথমত ভালো মাটি, দ্বিতীয়ত পরিমিত পানি, তিন-পযার্প্ত আলো ও রোদ, চার- নিয়মিত গাছ দেখা, পঁাচ- রোগ বুঝতে পারলে গাছের ডাক্তারের পরামশর্ নেয়া। অবশ্য গাছভেদে এসবের পরিমাণে ভিন্নতা হতে পারে। প্রখর রোদে চারাগাছকে বেশি সময় সরাসরি রাখবেন না। রাতে গাছে পানি দেয়া উত্তম। রাতে ১০০ গ্রাম শুকনো মরিচের গুঁড়া ১০ লিটার পানিতে ভিজিয়ে সকালে কাপড় দিয়ে ছেঁকে নিন। এবার অল্প পরিমাণ গুঁড়া সাবান মিশিয়ে একটু ফেনা করে নিয়ে রোদ থাকাকালে স্প্রে করতে পারেন, ভালো উপকার হতে পারে। চায়ের পাতা, ডিমের খোসা, আলুর খোসা কিংবা চাল ধোয়া পানি গাছের জন্য উপকারী। অল্প করে দিতে পারেন। এবার একটি জৈব সার বানানোর কৌশল জেনে নিন। চা-পাতা, ডিমের খোসা, গোবর, শুকনো পাতা এক জায়গায় কিছুদিন রেখে দিন। ভালো জৈব সার হবে। ডিমের খোসা, কলার খোসা, এবং চা/কফির ব্যবহৃত গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। তারপরে মিশ্রনটি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে রাখুন। কিছুদিন পর অল্প অল্প করে গাছের গোড়ার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিন। কিছুদিন পর পর অবশ্যই মাটি কঁাচি দিয়ে কুপিয়ে ওলট-পালট করে দেবেন। বেশি সার, পানি দিলে গাছ তরতর করে বেড়ে উঠবে। এমনটা ভাববেন না। সব কিছুই দেবেন, তবে পরিমিত। ধৈযর্ ধারণ করতে হবে। টবে লাগানো গাছে খৈল দিলে পিঁপড়ার উপদ্রব হতে পারে। পোকা-মাকড়ের আক্রমণ থেকে বঁাচাতে ৭ দিনে একবার চুনের পানি স্প্রে করা যায়। অথবা এক গ্যালন পানিতে অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট গুঁড়ো করে মিশিয়ে নিন। তারপর স্প্রে করতে পারেন। অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট ওষুধের দোকানে পাবেন। এক গ্যালন (ইউএস) হলো ৩.৭ লিটার।