শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় শীতকালীন সবজির উৎপাদন বেড়েছে

আরিফ রেহমান, বগুড়া
  ১৩ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০

বগুড়া প্রাচীন সভ্যতার উর্বর ভূমি মহাস্থানগড়ের সবজি হাটে এখন শীতকালীন নানা সবজির চোখ জুড়ানো সমারহ। বিশাল হাট জুড়ে টাটকা সবজির মনমাতানো সৌরভ। ক্রেতা বিক্রেতাদের উচ্চকিত কণ্ঠস্বরে এ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী সবজি হাটটি এখন মুখরিত। গত কয়েক বছরের তুলনায় বগুড়ায় এবার শীতকালীন সবজির উৎপাদন বেশি হওয়ায় হাটে ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, বেগুন, বরবটিসহ নানা ধরনের শীতের সবজির আমদানি অনেক বেশি। তবে সব ধরনের সবজির দাম আগের চেয়ে কমেছে।

হাটে বিক্রির জন্য কৃষকদের আনা সবজির সমারোহ সৃষ্টি করেছে মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য। আর সবজির আমদানি হাটে বেশি হওয়ায় এ সময় গত কয়েকদিনের তুলনায় দাম কমেছে প্রায় ৪০ ভাগ। এতে ফুলকপি ও মুলা চাষিদের আক্ষেপ সবচেয়ে বেশি। হাটের দিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত সবজি বিক্রির জন্য আনা নানা ধরনের সবজি চোখে পড়ে। এ সময় হাটে প্রবেশই সমস্যা হয়ে যায়।

প্রাচীন সভ্যতার মহাস্থানগড় এলাকা সংলগ্ন ডিগ্রি কলেজের মাঠে মহাস্থান হাট। বগুড়া সবজি উদ্বৃত্ত প্রধান এলাকা হওয়ায় এটি সবজির পাইকারি হাটের জন্য বিখ্যাত। বছরের বিভিন্ন সময় জুড়ে সবজির জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানের সবজির বেপারিরা এখানে ভিড় জমান। শীতের সময় সবজি বেপারিদের আনোগানা সবচেয়ে বেশি। মহাস্থান হাটের আড়ত মালিক খায়রুল ইসলাম খাজা জানালেন, এখন ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম সিলেট কক্সবাজার ফেনি ও কুমিলস্নাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মহাস্থান হাট থেকে প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ ট্রাক সবজি যাচ্ছে।

চট্টগ্রামের মিরসরাই থেকে আসা বেপারি সাইফুল ইসলাম জানালেন, তিনি গত প্রায় ২০ বছর ধরে মহাস্থান হাট থেকে সবজি কিনে অন্যত্র বিক্রি করেন। শনিবার তিনি বাঁধাকপি, মুলা ও ফুলকপি কিনেছেন দুই ট্রাক। এর মধ্যে বাঁধাকপি প্রতি পিস ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে, মুলা ১২০ থেকে ১৮০ টাকা এবং প্রতিশ' ফুলকপি ৩শ' থেকে ৪শ' টাকা দরে কিনেছেন। নরসিংদী থেকে আসা বেপারি মঞ্জুর হোসেন জানালেন, সাড়ে ৩শ' টাকা মণ দরে তিনি ফুলকপি কিনেছেন ২১৫ মণ। এর সঙ্গে মুলাও কিনেছেন ১২০ থেকে ১৫০ টাকা মণ দরে। তবে তিন থেকে চার দিন আগে প্রতি মণ ফুলকপি তাদের কিনতে হয়েছে ৭শ' থেকে ৮শ' টাকায়। বেপারিদের বক্তব্য এখন হাটে চাহিদার চেয়ে সবজির আমদানি অনেক বেশি হওয়াসহ সবজি উৎপাদন প্রধান অন্য এলাকা যশোর এবং অন্যান্য স্থান থেকেও সবজি ঢাকা ও অন্য জেলাগুলোতে যাচ্ছে। এ কারণে ফুলকপিসহ অন্যান্য সবজির বাজারদর নিম্নমুখী।

\হমহাস্থান হাটে প্রতি পিস লাউ ও কেজিপ্রতি বেগুনের দামও কমেছে আমদানি বেশি থাকায়। একইভাবে বরবটির দামও মণপ্রতি ২ থেকে ৩শ' টাকা কমেছে। গত কয়েক দিনের তুলনায় প্রতি পিস বাঁধাকপির দাম কমেছে প্রায় ছয় থেকে সাত টাকা। শিবগঞ্জ এলাকাসহ আশপাশের এলাকা থেকে হাটে আসা কৃষকরা জানান, এখনো তাদের জমিতে অর্ধেক ফসল রয়েছে। বাজারের এই অবস্থা তাদের চিন্তায় ফেলেছে।

মোকামতলার ঘরিয়া পূর্বপাড়ার সবজিচাষি সোহাগ জানালেন, কয়েক দফা তিনি ফুলকপি বিক্রি করেছেন। আসার পর আড়তদার প্রতি মণ ফুলকপি ৩৭০ টাকা বললেও তিনি দেননি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে