দার্জিলিংয়ের কমলা ও মাল্টা চাষে সফল আব্দুল করিম

প্রকাশ | ২৭ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০

জি এম ফারুক আলম মনিরামপুর, যশোর
দার্জিলিংয়ের কমলা চাষ এখন যশোরের মনিরামপুরে শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে মাল্টা চাষে ভাগ্য বদলকারী আব্দুল করিম নতুন করে দার্জিলিংয়ের কমলা লেবু চাষ করে নতুনভাবে সাফল্য অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি এলাকার বেকার যুবকদের কাছে অনুকরণীয় কমলা ও মাল্টা চাষি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। আব্দুল করিম মনিরামপুর উপজেলার মুজগুন্নী গ্রামের মৃত আকাম গাজীর ছেলে। সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, তিনি এ বছর ১শ ৭২ মণ দার্জিলিং কমলা ও মাল্টা বিক্রি করেছেন। ফল বিক্রিতে খরচ বাদ দিয়েও নগদ লাভ পেয়েছেন ৬ লক্ষাধিক টাকা। এর বাইরে দার্জিলিং কমলা ও মাল্টার চারা বিক্রি করেছেন ১৫ হাজার। যে কারণে তিনি নতুন করে এ বছর আরো ১৫ বিঘা জমিতে মাল্টা এবং কমলা চাষ শুরু করেছেন। এক সময় শিক্ষিত এ বেকার যুবক আব্দুল করিম সাংবাদিক ও নাট্যকার হিসেবে কাজ করে বেড়াতেন। দীর্ঘদিন বেকারত্বের পর তিনি মঞ্চ নাটক এবং সাংবাদিকতা ছেড়ে ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে এখন আকাশ চুম্বী স্বপ্ন দেখছেন। আব্দুল করিম জানান, বেকারত্ব জীবন ঘুচাতে প্রথমে ২০০৮ সালে বাড়িতে মুরগি পালনের জন্য খামার গড়ে তোলেন। বার্ডফ্লু রোগে তার সে আকাশ চুম্বী স্বপ্ন সবই বিলিন হয়ে যায়। বার্ডফ্লুতে এক মাসে তার ক্ষতি হয় ৬ লক্ষাধিক টাকা। এরপর হতাশার জীবন নিয়ে সময় কাটছিল। একপর্যায়ে কৃষিবিদ মৃতু্যঞ্জয় রায়ের অনুপ্রেরণায় মাল্টা চাষের সিদ্ধান্ত নেন। সাড়ে ৫ বছর আগে খুলনার কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে ১২৫ পিচ মাল্টা এবং ২৫ পিচ দার্জিলিং কমলার চারা এনে চাষ শুরু করেন। আবেগঘন কণ্ঠে তিনি বলেন, বর্তমানে অর্ধকোটি টাকার প্রজেক্ট করতে সক্ষম হয়েছি। তাই এ বছর আরো ১৫ বিঘা জমিতে নতুন করে মাল্টা এবং দার্জিলিং কমলা চাষ করেছি। আর এ থেকেই এখন এলাকার বেকার যুবকদের অনুকরণীয় হয়ে দাঁড়িয়েছি। এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুর করিম জানান, আমার মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চালের বহু শিক্ষিত যুবক এখন আমাকে অনুসরণ করছেন। রীতিমতো চারা নিচ্ছেন, আমার তৈরি কম্পোজসার নিচ্ছেন। অনেকেই আমার মতো স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। এ ব্যাপারে সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারোর সহযোগিতা নেওয়ার চিন্তা আমার মাথায় কখনো আনিনি। নিজে সফল কি ব্যর্থ হব সে চিন্তায় ঋণের দিকে কখনোই এগিয়ে আসিনি। তবে বেসরকারি একটি ব্যাংক বারংবার চেষ্টা করেছে সহযোগিতা করার জন্য। কিন্তু সময়ের অভাবে সে দিকে যেতে পারেনি। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হীরক কুমার সরকার জানান, আব্দুল করিম এখনতো অনেকের পথ প্রদর্শক। তবে মঝে মধ্যে কিছু কিছু পরামর্শ তাকে দেওয়া হয়। আমরা তার পাশাপাশি অনেক শিক্ষিত বেকার যুবককে অনুপ্রেরণা দিচ্ছি।