পুষ্টিগুণে ভরা শাপলা

প্রকাশ | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। প্রায় ১৬ কোটি বছর আগেও পৃথিবীর বুকে শাপলা গাছের অস্তিত্ব ছিল। প্রাচীন মিসরে সাদা ও নীল শাপলার আদি অস্তিত্বের প্রমাণ রয়েছে। আয়ুর্বেদিক ওষুধ বানাতে শাপলার ব্যবহার রয়েছে। আবার অনেকের পছন্দের একটি তরকারি শাপলা। গ্রামের মতো শহরেও এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র, খাল, বিল, পুকুর ও ডোবায় শাপলা পাওয়া যায়। সহজলভ্য শাপলা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এর পুষ্টিগুণ অনেক। শাপলা খুব পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজি। সাধারণত শাকসবজির চেয়ে এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। শাপলার রয়েছে প্রচুর ক্যালশিয়াম। শাপলায় ক্যালশিয়ামের পরিমাণ আলুর চেয়ে সাত গুণ বেশি। শাপলা চর্ম ও রক্ত আমাশয়ের জন্য বেশ উপকারী। প্রতি ১০০ গ্রাম শাপলার লতায় রয়েছে খনিজ পদার্থ ১.৩ গ্রাম, আঁশ ১.১ গ্রাম, খাদ্যপ্রাণ ১৪২ কিলো, ক্যালোরি-প্রোটিন, ৩. ১ গ্রাম, শর্করা ৩১.৭ গ্রাম, ক্যালশিয়াম ৭৬ মিলিগ্রাম। শাপলার ফল দিয়ে চমৎকার সুস্বাদু খই তৈরি হয়। লাল শাপলা অ্যালার্জি ও রক্ত আমাশয়ের জন্য বেশ উপকারী। শাপলা প্রধানত এসিডিটি, অ্যানেসথেসিক, সেরোটিক, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগে ব্যবহৃত হয়। শাপলাতে থাকা গ্যালিক এসিড এনজাইম ক্যানসার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। শাপলাতে থাকা ফ্লেভনল গস্নাইকোসাইড মাথায় রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে মাথা ঠান্ডা রাখে। শাপলা ফুল ইনসুলিনের স্তর স্থিতিশীল রেখে রক্তে শর্করা পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। শাপলা শরীরকে শীতল রাখে, হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ায় ও পিপাসা দূর করে। প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া, আমাশয় ও পেট ফাঁপায় শাপলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আয়ুর্বেদিক ওষুধ বানাতে শাপলার ব্যবহার রয়েছে। এই ওষুধ অপরিপাকজনিত রোগের পথ্য হিসেবে কাজ করে। সাম্প্রতিক গবেষণায় পাওয়া গেছে, শাপলায় ডায়াবেটিস রোগের জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে। হৃদরোগের দুর্বলতা কমাতে শাপলা ফুলের উপকারিতা অপরিহার্য। পাঁচ গ্রাম গোলাপ ফুল এবং ১০ গ্রাম শাপলা ফুলের সঙ্গে দুই কাপ পানি মিশিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। এবার মিশ্রণটি ছেঁকে নিয়ে পরিমাণমতো চিনি মিশিয়ে নিন। দিনে দুবার করে নিয়মিত এক মাস খেলে ভালো ফল পাবেন। শাপলা ফুল যকৃতের ক্ষতি প্রতিরোধ করে লিভার নিরাময় করতে সহায়তা করে।