নিরাপদ বালাইনাশক কারখানার যাত্রা শুরু

প্রকাশ | ২১ মার্চ ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অপেক্ষাকৃত নিরাপদ বালাইনাশক কারখানার যাত্রা শুরু হলো বগুড়ার বিসিক শিল্প নগরীতে। উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ারের দাবি, ৮০-র দশক থেকে উন্নত বিশ্বে মারাত্মক ক্ষতিকর বালাইনাশক নিষিদ্ধ। কিন্তু দেশে খাদ্য নিরাপত্তা ও বিষমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে হলে দরকার নিরাপদ বালাইনাশকের বিধিসম্মত ব্যবহার। যার দেশীয় উৎপাদন শুরু করেছে ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মেইড ইন বাংলাদেশ স্স্নোগানে ডাবিস্নউডিজি মেশিনে দেশে উৎপাদিত প্রথম বালাইনাশক মেশিনের ব্যবহার কমাবে আমদানি নির্ভরতা। কোনো প্রকার হাতের স্পর্শ ছাড়া উন্নত প্রযুক্তিতে উৎপন্ন হওয়া বালাইনাশক একদিকে যেমন মানুষ, প্রাণি ও পরিবেশের জন্য অপেক্ষাকৃত নিরাপদ, অন্যদিকে স্বল্পমাত্রা প্রয়োগে রোগবালাই দমনে রাখবে কার্যকরী ভূমিকা। এ দিকে দেশে বালাইনাশক বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ক্রপ প্রোটেকশন অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিপিএ) তথ্যমতে, বর্তমানে বাংলাদেশে ৩৭৭টি কোম্পানির ২৩৫ ধরনের বালাইনাশক আমদানি করে। আমদানিনির্ভর বালাইনাশকগুলো দেশে ফরমুলেশন করে বা সরাসরি আমদানি করে দেশে বাজারজাত করা হয়। মূলত বিদেশ থেকে বালাইনাশক আমদানি করা হয় গ্রানুলার, লিকুইড ও পাউডার আকারে। দেশে সাধারণত পাঁচ ধরনের বালাইনাশক যেমন- কীটপতঙ্গ দমনের জন্য ইনসেকটিসাইড, ছত্রাক জাতীয় রোগ দমনের জন্য ফাঙ্গিসাইড, আগাছা দমনের জন্য হার্বিসাইড, মাইট দমনের জন্য মাইটিসাইড ও ইদুর জাতীয় প্রাণী দমনের জন্য রোডেনটিসাইড ব্যবহার করা হয়। কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলেন, কীটনাশক বা বালাইনাশক হলো বিষাক্ত পদার্থ- যা মানুষ, পশুপাখি, কৃষি, পরিবেশ, বাতাস, পানি, মাটি, আবহাওয়াকে দারুণভাবে প্রভাবিত করে। এ জন্য বালাইনাশকের ব্যবহার অত্যন্ত সচেতনতার সঙ্গে করতে হয়। কীটনাশক ব্যবহারের সময় চারটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে- সঠিক ওষুধ সঠিক সময়ে, সঠিক মাত্রায় এবং সঠিক প্রয়োগ পদ্ধতি অবলম্বন করে প্রয়োগ করতে হবে। তা না হলে ব্যবহার কার্যকর হবে না বা কাঙ্ক্ষিত ফল আসবে না, আর উল্টো মানুষ ও জীববৈচিত্র্যের বিপদ ডেকে আনবে। কীটনাশক ফসল উৎপাদনের সময় আমরা ব্যবহার করব। তবে তা ব্যবহারের সময় খেয়াল রাখতে হবে, তা যেন মানুষের একক বা দলগত স্বাস্থ্যহানি না ঘটায়, আমাদের প্রাণের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে, দূষণমুক্ত পরিবেশ বজায় রাখে এবং সর্বোপরি ফসলের ফলন বাড়াতে পারে।