মুক্তা চাষ করে স্বাবলম্বী প্রতিবন্ধী রুহুল

প্রকাশ | ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

তৌহিদুল ইসলাম
লালমনিরহাটের আদিতমারিতে নিজ পুকুরে ঝিনুক থেকে মুক্তা চাষ করে সফল হয়েছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী রুহুল আমিন লিটন। তিনি ফেসবুকে দেখে মুক্তা চাষের কলাকৌশল জেনে যোগাযোগ করেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ময়মনসিংহে। সেখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজ বাড়ি আদিতমারি উপজেলার দৈলজোড় গ্রামে পুকুরে মাছের পাশাপাশি চাষ শুরু করেন ঝিনুক। সফলও হয়েছেন রুহুল আমিন লিটন। এখন তার এ মুক্তা চাষ দেখতে ছুটে আসেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ। ধারণা নিয়ে যান কিভাবে মাছের সঙ্গে মুক্তা চাষ করা যায়। সরজমিনে গেলে দেখা যায়, লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার শারীরিক প্রতিবন্ধী রুহুল আমিন লিটন ২০১৬ সালে ফেসবুকে দেখে আগ্রহী হন ঝিনুক থেকে মুক্তা চাষের ওপর। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ময়মনসিংহ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজ বাড়ির মাছের পুকুরে শুরু করে অল্প সময়ে সফলতা লাভ করেন। এখন তার পুকুরে ৫ হাজার ঝিনুকের চাষ হচ্ছে। আর সেখান থেকে ২শ ঝিনুকের পেটে উৎপাদন হয়েছে মুক্তা। মুক্তা চাষি রুহুল জানায়, পুকুরে মাছ চাষের পাশাপাশি মুক্তা চাষে খরচ অনেক কম। বাড়তি কোনো খরচ নেই আর একবার পরিশ্রম করলেই প্রতিটি ঝিনুক থেকে বেশ দামের মুক্তা পাওয়া যাচ্ছে। ফলে আথির্কভাবে লাভবান হওয়া যায় সহজে। আর স্বণার্লংকারসহ বিভিন্ন প্রকার গহনা তৈরিতে মুক্তার বেশ কদর রয়েছে। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে ৮ম শ্রেণি পযর্ন্ত পড়ালেখা করে জীবনযুদ্ধে নেমে পড়েন প্রতিবন্ধী রুহুল। মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজ পুকুরে মাছের পাশাপাশি ঝিনুক থেকে মুক্তা চাষ শুরু করেছেন। তবে জেলার মাটি, পানি আর আবহাওয়া মুক্তা চাষের উপযোগী হওয়ায় প্রতিটি ঝিনুকেই মুক্তা হয়েছে। তার এ উৎসাহ আর আগ্রহের কারণে এলাকার অনেক মৎস্য চাষিই তার নিজস্ব পুকুরে ঝিনুক থেকে মুক্তা চাষের ব্যাপারে যোগাযোগও করছেন। এদিকে মুক্তা চাষের পর ঝিনুকের খোলস ঔষধি পণ্য হিসেবে আর মাংস হঁাস-মুরগীর খাবার হিসেবেও বেশ চাহিদা রয়েছে। লালমনিরহাট জেলা মৎস্য কমর্কতার্ মোহাম্মদ ফারুকুল ইসলাম জানান, জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে ঝিনুক থেকে মাছের পাশাপাশি মুক্তা চাষ শুরু হয়েছে। শারীরিক প্রতিবন্ধী রুহুল আমিন লিটন মুক্তা চাষ করে এলাকায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মুক্তা হয়েছেও ভালো। জেলা মৎস্য বিভাগ তাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা আর পরামশর্ দিয়ে আসছে।