অতুলনীয় দেবকাঞ্চন

প্রকাশ | ১৩ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
কাঞ্চন ফুলের মধ্যে দেবকাঞ্চন ফুল তার রং-রূপ সুগন্ধ মিলে অতুলনীয় ফুল। আর ফুলের এ ভিন্নতার ফলে একে আলাদাভাবে চেনা যায়। গাছ দেখে আলাদাভাবে চেনা মুশকিল। কারণ কাঞ্চনের সবকটি প্রজাতির গাছ দেখতে প্রায় একই রকম। দেবকাঞ্চনের আদিনিবাস হিমালয়ের পাদদেশ ও আসামের পাহাড়ি অঞ্চল। তবে চীন, শ্রীলংকা ও মালয়েশিয়ায় দেবকাঞ্চনের দেখা পাওয়া যায় এবং বাংলাদেশে এর বিস্তার বহুকাল আগের। এর পরিবার- ঈধবংধষঢ়রহধপবধব, উদ্ভিদতাত্তি¡ক নাম- ইধঁযরহরধ ঢ়ঁৎঢ়ঁৎবধ। দেবকাঞ্চন ফুলগাছ ছোট আকার-আকৃতির বৃক্ষ। গাছের উচ্চতা গড়ে ৮ থেকে ১০ মিটার। গাছের কাÐ খাটো। কাÐ ও শাখা-প্রশাখা বেশ শক্তমানের এবং ছড়ানো। তবে মাঝেমধ্যে বড় আকৃতির গাছও চোখে পড়ে। অধর্ চিরসবুজ ও পত্রমোচী বৃক্ষ। শীতের শেষে গাছের সমস্ত পাতা ঝরে যায় এবং বসন্তের শেষে গাছে নতুন পাতা গজায়। এর ফুল ফোটার মৌসুম হেমন্তকাল। হেমন্তের শুরুতে ফুল ফোটা শুরু হয় এবং ব্যাপ্তিকাল শীতের মাঝামাঝি সময় পযর্ন্ত। এ সময়ে গাছের সব শাখা-প্রশাখা ফুলে ফুলে ভরে যায়। ফুল ফুটন্ত গাছ খুবই নজর কাড়া। ফুল রঙে হালকা গোলাপি আভাসহ সাদা থেকে হালকা গোলাপি বেগুনি। ফুলে নমনীয় কোমল পাপড়ি পঁাচটি যা অসমান, লম্বাটে ও মুক্ত। এর ফুল ৬ থেকে ৮ সেন্টিমিটার চওড়া। ফুলে রয়েছে মিষ্টি সুগন্ধ। ফুলের মধ্যের অংশে কাস্তের মতো বঁাকা পরাগ অবস্থিত। বিস্তৃত শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগে এক বা একাধিক ফুল ফুটতে দেখা যায়। গাছের পাতা সবুজ, শিরা উপশিরা স্পষ্ট। এর পাতার অন্যরকম বৈশিষ্ট্য একই বেঁাটার পাতা মধ্যে দু’ভাগে বিভক্ত থাকে। আবার দুটি পাতা জোড়া দিলে একটি অন্যটির সঙ্গে সমানে সমান। পাতার অগ্রভাগ ভেঁাতা। ফুল শেষে গাছে ফল হয়, ফলে বীজ হয়। প্রতি ফলে ১২ থেকে ১৬টি বীজ থাকে। ফল দেখতে শিমের মতো চ্যাপ্টা, রং প্রথমে সবুজ ও পরিপক্বতা এলে কালচে রং ধারণ করে এবং শুকিয়ে গিয়ে একসময়ে আপনা আপনিই ফেটে গিয়ে বীজগুলো চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। পরিপক্ব বীজের রং কালচে খয়েরি। গাছ বেশ কষ্ট সহিষ্ণু। বীজের মাধ্যমে এর বংশবিস্তার হয়। দেবকাঞ্চনের রয়েছে ভেষজ নানান রকম গুণাগুণ। উঁচু ভ‚মি, রৌদ্রোজ্জ্বল পরিবেশ থেকে হালকা ছায়াযুক্ত স্থান ও প্রায় সব ধরনের মাটিতে এ ফুলগাছ জন্মে। আমাদের দেশে কোনো কোনো বসতবাড়িতে বা প্রতিষ্ঠানের বাগানে, বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে আইল্যান্ড, পাকর্, উদ্যান, বন-জঙ্গল ও পাহাড়ি এলাকায় এ দেবকাঞ্চন ফুলগাছ চোখে পড়ে। ছবি ও লেখা : মোহাম্মদ নূর আলম গন্ধী