সীতাকুÐে শিমের বাম্পার ফলন

আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এবার চট্টগ্রামের সীতাকুÐে শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে শিমচাষ হয়েছে। অনুক‚ল আবহাওয়ার কারণে কাক্সিক্ষত চাহিদার দ্বিগুণ ফলনে খুশিতে ভরে উঠেছে কৃষকের মন। অন্যদিকে কৃষি বিভাগের পরিসংখ্যান অনুসারে হেক্টরপ্রতি ২০ হাজার টন শিম হলে প্রায় ৩ হেক্টর জমিতে ৬০ হাজার টন শিম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে...

প্রকাশ | ২০ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

সবুজ শমার্ শাকিল, সীতাকুÐ
আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এবার চট্টগ্রামের সীতাকুÐে শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে শিমচাষ হয়েছে। অনুক‚ল আবহাওয়ার কারণে কাক্সিক্ষত চাহিদার দ্বিগুণ ফলনে খুশিতে ভরে উঠেছে কৃষকের মন। অন্যদিকে কৃষি বিভাগের পরিসংখ্যান অনুসারে হেক্টরপ্রতি ২০ হাজার টন শিম হলে প্রায় ৩ হেক্টর জমিতে ৬০ হাজার টন শিম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ও বিদেশে সীতাকুÐের উৎপাদিত শিম রপ্তানি করে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা উপাজের্নর সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান উপজেলা কৃষি অফিস। সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শীতকালীন মৌসুমের প্রিয় সবজিখ্যাত শিম চাষ করা হয়েছে অধিকাংশ কৃষি জমিতে। এ ছাড়া কৃষকরা তাদের জমির পাশাপাশি জমির আইলে, খালের পাড়ে, বেড়িবঁাধের দুইপাশ, পাহাড়ে এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুপাশসহ পতিত খালি জায়গায় শিমের চাষ করেছেন। এতে অধিকাংশ জমিতে রং-বেরংয়ের মনমাতানো ফুলে শোভিত হয়ে আছে শিম গাছ। অধিকাংশ গাছে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে বিভিন্ন প্রজাতির শিম। বাহারি এ দৃশ্য নজর কাড়ার পাশাপাশি দেখলে যে কোনো মানুষের মনে হবে সীতাকুÐ এক শিমের রাজ্য! বাড়বকুÐ উত্তর মাহামুদাবাদ এলাকার কৃষক মো. এরশাদ জানান, এবার নিজের ও বগার্ জমি মিলিয়ে প্রায় এক একর জমিতে শিমের চাষ করেছেন। পরিবেশ অনুক‚লে থাকায় ও পোকার আক্রমণ কম হওয়ায় এবারো শিম চাষ লাভজনক হয়েছে। এই চাষে তিনি মাত্র ৩ মাস সময় দিয়ে ভালো আয় করেছেন বলে জানান। পৌরসদরের শেখপাড়া এলাকার শিমচাষি মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, বংশ পরম্পরায় কাত্তিকোটা, ছুরি, পুঁটি, বাটাসহ ছয় ধরনের শিমের চাষ হয়ে আসছে সীতাকুÐে। মৌসুমের প্রথম থেকে শুরু করে মাঝামাঝি পযর্ন্ত পরিপক্ব শিম পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয়। এরপর দাম কমে গেলে কঁাচা শিমের বিচি খুলে নিয়ে বিক্রি করা হয়। যা চট্টগ্রাম অঞ্চলে ‘খাইস্যা’ নামে পরিচিত। শুকনো শিমের বিচি সারা বছরই বিক্রি হয়। পৌর সদরের শেখ নগর এলাকার চাষি মনোরঞ্জন দাশ বলেন, এখন আমার প্রতি কেজি শিম ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি করছি। তবে আগামী সপ্তাহে দাম আরও কমে যাবে। তারপরও শিমচাষ বোরো ধানের চেয়ে লাভজনক। সবচেয়ে বড় কথা সীতাকুÐের মাটি শিমচাষের জন্য উপযোগী। সীতাকুÐের শিম রপ্তানি হলে আমরা আরও বেশি লাভবান হবো।  উপজেলা কৃষি কমর্কতার্ মো. সাফকাত রিয়াদ ফাহিম জানান, দক্ষিণ সীতাকুÐে ফসলি জমি কম, শিল্প-কারখানা বেশি। উত্তর সীতাকুÐে চাষের জমি বেশি। শীতকালে এ উপজেলায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে শাকসবজির চাষ হয়। এর মধ্যে শিমচাষই হয় প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে। বিশেষ করে বারৈয়ারঢালা, নুনাচরা, বটতল, শেখপাড়া, গুপ্তাখালী, বঁাশবাড়িয়া, মুরাদপুর, সৈয়দপুর, বাড়বকুÐ এলাকায় শিমচাষ বেশি হয়। তিনি জানান, দেশের অন্যান্য স্থানে একই জমিতে তিনবার চাষ হয়Ñ আউশ, আমন, বোরো। কিন্তু সীতাকুÐে বোরো ধানের বদলে চাষিরা শিমের চাষ করেন।