কৃষিই দেশের অর্থনীতির মূলভিত্তি খাদ্য সংকটের আশঙ্কা নেই
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) তথ্য অনুযায়ী, দেশের অব্যাহত উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ বিশ্বে কৃষির ১১ খাতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে। বিশিষ্টজনরা এটিকে দেশের জন্য বিশাল প্রাপ্তি এবং খাদ্য নিরাপত্তায় মাইলফলক হিসেবে উলেস্নখ করেছেন। কৃষি ও খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখা, চালসহ কৃষিপণ্য, প্রক্রিয়াজাত মাছ-মাংস রপ্তানিতে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশ একের পর এক স্বীকৃতি পাচ্ছে। দেশের জনসংখ্যার আধিক্য এবং জলবায়ুর প্রভাবে আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাওয়াসহ বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও নানা প্রাকৃতিক বৈরিতা সত্ত্বেও ধারাবাহিকভাবে ধান উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ বিশ্বে টানা চারবার তৃতীয় বৃহত্তম ধান উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে।
প্রকাশ | ১৮ জুন ২০২৩, ০০:০০
ইমরান সিদ্দিকি
করোনা অতিমারির ভয়াবহতা, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি সংকটে বাংলাদেশসহ সমগ্রবিশ্ব দুঃসহ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বৈশ্বিক খাদ্য সংকটে বিশ্বের অনেক দেশ চিন্তিত। উৎপাদন পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং চলমান সংকটের কারণে বিশ্বে খাদ্য সংকট বা দুর্ভিক্ষ অত্যাসন্ন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবারই বিশ্ব সর্বোচ্চ খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হওয়ার বিষয়ে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সর্তক করছে। তবে বাংলাদেশ বছরে প্রায় সাড়ে চার কোটি টন খাদ্যশস্য উৎপাদন করছে। খাদ্যে উদ্বৃত্ত দেশ। রয়েছে পর্যাপ্ত মজুত। তাই বিশ্বে খাদ্যের সংকট হলেও দেশে কোনোদিন সংকট হওয়ার আশঙ্কা নেই।
তারপরও কৃষি আবহমান বাংলার আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও ঐতিহ্যের মূল চালিকাশক্তি। কৃষিকে ঘিরেই মানুষের সভ্যতার জাগরণ শুরু। গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন তথা স্বনির্ভরতা অর্জনে আবহমানকাল ধরে কৃষি খাত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। কৃষিভিত্তিক বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের পুরোটাই জুড়ে ছিল কৃষি। স্বাধীনতাপরবর্তী বাংলাদেশে ১৯৭২-৭৩ সালে রপ্তানি আয় ছিল মাত্র ৩৪৮.৩৩ মিলিয়ন ডলার- যার ৯০ ভাগ আসতো পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে। পরবর্তী সময়ে শিল্প ও বাণিজ্যসেবা খাতের উলেস্নখযোগ্য বিকাশ ঘটলেও দীর্ঘসময় পর্যন্ত এগুলোও ছিল কৃষির ওপর নির্ভরশীল। ফলে কৃষি হয়ে উঠেছে এ দেশের অর্থনীতির মূলভিত্তি। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা ও বিনোদনের অধিকাংশ উপাদান আসে কৃষি থেকে। বিশেষ করে খাদ্য ছাড়া জীবন বাঁচানো যায় না। খাদ্যের একমাত্র উৎস কৃষি উৎপাদনে ও খাদ্য নিরাপত্তায় বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করছে।
আবহমান বাংলার আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও ঐতিহ্যের মূল চালিকাশক্তি কৃষি খাত দেশবাসীকে অত্যন্ত আশাবাদী করার প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে। করোনার প্রকোপকালীন দেশের জিডিপিতে সর্বোচ্চ অবদান রাখা সেবা খাতসহ বিভিন্ন খাতের বিপর্যয়ের বিপরীতে একমাত্র কৃষি খাতই দেশের অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত রাখতে সক্ষম হয়েছিল। এখনো কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে। মোট দেশজ উৎপাদনের হিসাবে জিডিপিতে এখন কৃষি খাতের অবদান ১৩ শতাংশ এবং কর্মসংস্থানে ৪১ শতাংশ। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যকে বিশ্বের জন্য রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করছে।
অর্থনীতিতে কৃষিসহ অন্যান্য খাতের প্রবৃদ্ধির গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে- যার ফলশ্রম্নতিতে প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা মেয়াদকালে বিদ্যমান ৮২.১ শতাংশ দারিদ্র্যের হার ৮ম পঞ্চবার্ষিকী মেয়াদকালে ২০.৫ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনার এ সফলতায় কৃষির অবদান সবচেয়ে বেশি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় সফল অভিযোজনের ফলে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। সরকারের যুগোপযোগী নীতি ও পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দেশ দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। ফসলের পাশাপাশি প্রাণিজ আমিষ খাতেও ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। কৃষির উন্নয়ন ও কৃষকের কল্যাণকে সর্বোচ্চ বিবেচনায় এনে 'রূপকল্প-২০৪১'-এর আলোকে জাতীয় কৃষিনীতি-২০১৮, নিরাপদ খাদ্য আইন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-২০৩০ এবং ডেল্টা পস্ন্যান-২১০০ সহ উলেস্নখযোগ্য কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে সরকার। এ লক্ষ্য অর্জনে কৃষি খাতে বায়োটেকনোলজির ব্যবহার, সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা, সুষম সার ব্যবস্থাপনা, কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খাদ্যোৎপাদন সমৃদ্ধ শস্য উৎপাদনে কৃষি মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। এ ছাড়া বন্যা, খরা, লবণাক্ততা সহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবনসহ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ভাসমান চাষ, বৈচিত্র্যময় ফসল উৎপাদন, ট্রান্সজেনিক জাত উদ্ভাবন, পাটের জেনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন ও মেধাস্বত্ব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে সরকার। খাদ্য সংরক্ষণ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষকদের কাছে থেকে সরাসরি ধান ক্রয় করে তাদের উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য প্রদান নিশ্চিত করার জন্য প্যাডি সাইলো ও স্টিল সাইলো নির্মাণের ব্যবস্থা করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
স্বাধীনতাপরবর্তী সময় থেকে এ পর্যন্ত দেশে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ১১১টি জাত, পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ধান-পাট-গম-তেলবীজ-সবজি ও মসলাজাতীয় শস্যের ১৯টি প্রতিকূল ও অপ্রতিকূল পরিবেশ উপযোগী উচ্চফলনশীল এবং উন্নত গুণসম্পন্ন ১১৪টি জাত, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ২১০টির অধিক ফসলের ৭০০টি প্রযুক্তি, তুলা উন্নয়ন বোর্ড ২১টি জাত, বিজেআরআই ৬৪টি জাত, বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক ইক্ষুর ৪৮টি জাত উদ্ভাবন ও উন্মুক্ত করা হয়েছে। জিএমও প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিটি বেগুনের ৪টি জাত উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ করা হয়েছে এবং বিটি তুলার জাত উদ্ভাবনের কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া দেশি ও তোষা পাটের জীবনরহস্য আবিষ্কারসহ পাঁচ শতাধিক ফসলের ক্ষতিকর ছত্রাকের জীবনরহস্য উন্মোচন, পাট ও পাটজাতীয় আঁশ ফসলের ৫৪টি উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন-উন্মুক্তকরণের ফলে কৃষি উৎপাদন এক অভাবনীয় উচ্চতায় পৌঁছেছে। বিশ্বে প্রথমবারের মতো জিংকসমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশের কৃষি গবেষকরা।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) তথ্য অনুযায়ী, দেশের অব্যাহত উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ বিশ্বে কৃষির ১১ খাতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে। বিশিষ্টজনরা এটিকে দেশের জন্য বিশাল প্রাপ্তি এবং খাদ্য নিরাপত্তায় মাইলফলক হিসেবে উলেস্নখ করেছেন। কৃষি ও খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখা, চালসহ কৃষিপণ্য, প্রক্রিয়াজাত মাছ-মাংস রপ্তানিতে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশ একের পর এক স্বীকৃতি পাচ্ছে। দেশের জনসংখ্যার আধিক্য এবং জলবায়ুর প্রভাবে আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাওয়াসহ বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও নানা প্রাকৃতিক বৈরিতা সত্ত্বেও ধারাবাহিকভাবে ধান উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ বিশ্বে টানা চারবার তৃতীয় বৃহত্তম ধান উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, 'আমাদের সমাজে চাষিরা হলেন সবচেয়ে দুঃখী ও নির্যাতিত এবং তাদের অবস্থার উন্নতির জন্য আমাদের উদ্যোগের বিরাট অংশ অবশ্যই তাদের পেছনে নিয়োজিত করতে হবে।' কৃষি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরের বাজেটে ৬০ শতাংশ পলস্নী এলাকার উন্নয়নে ব্যয়ের ঘোষণা দেন তিনি। বঙ্গবন্ধু তার নেতৃত্বে প্রণীত দেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (১৯৭৩-৭৮) কৃষি ও পলস্নী উন্নয়ন খাতে মোট উন্নয়ন বরাদ্দের ৩১ শতাংশ অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে এ অভিপ্রায়ের প্রতিফলন ঘটিয়েছিলেন। দেশের আর্থিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্যবিমোচনে কৃষি উন্নয়নকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে গড়ে তুলেছিলেন বিভিন্ন গবেষণা-সম্প্র্রসারণ-আর্থিক প্রতিষ্ঠান। বঙ্গবন্ধু ২২ লাখেরও বেশি কৃষক পরিবারের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেন। তিনি ২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষি জমির খাজনা রহিতকরণ, জমির মালিকানার সর্বোচ্চ সীমা পরিবার প্রতি ১০০ বিঘা নির্ধারণ করে ভূমিহীন কৃষকদের মাঝে ওই জমি বিতরণ, পাকিস্তান আমলের সব কৃষিঋণ মওকুফ এবং কৃষকদের বিরুদ্ধে করা সব সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহার করে দেশের কৃষি ও কৃষকদের উন্নয়নে যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।
এ ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের কৃষিকে বিশ্বপরিমন্ডলে তুলে ধরেছেন। কৃষির আধুনিকায়ন, নতুন নতুন উদ্ভাবন এবং সার উৎপাদন-আমদানিতে সরকারি ভর্তুকি দেওয়ার ফলে দেশ কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। সারের দাম কমানো, ১০ টাকার বিনিময়ে ব্যাংক হিসাব খোলা, সেচের পানির ভর্তুকির টাকা সরাসরি কৃষকের ব্যাংক হিসাবে জমাদান, প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ কৃষকের মাঝে উপকরণ সহায়তা কার্ড বিতরণ, বর্গাচাষিদের জন্য জামানতবিহীন কৃষিঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা এবং প্রণোদনা দেওয়ার মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের ফলে কৃষিতে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
সাম্প্র্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশ প্রায় চার কোটি টন খাদ্যশস্য উৎপাদনের রেকর্ড তৈরি করেছে। শুধু উৎপাদন বৃদ্ধি নয়, হেক্টরপ্রতি ধান উৎপাদনেও অধিকাংশ দেশকে ছাড়িয়ে গেছে। একই জমিতে বছরে একাধিক ফসল চাষেও বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উদাহরণ। ধানের উৎপাদন তিনগুণ বৃদ্ধির পাশাপাশি গম দ্বিগুণ, সবজি পাঁচগুণ এবং ভুট্টার উৎপাদন বেড়েছে ১০ গুণ। বিগত একযুগে দেশে রীতিমতো ঘটে যাওয়া সবজিবিপস্নবের ফলে সবজি ও পেঁয়াজ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয়। এছাড়া বাংলাদেশ আম উৎপাদনে সপ্তম, আলু উৎপাদনে ষষ্ঠ, পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম, চা উৎপাদনে চতুর্থ ও পাট উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। বর্তমানে দেশে ৬৫৪ জাতের সবজি চাষের মাধ্যমে বছরে ১ কোটি ৬০ লাখ টন সবজি উৎপাদিত হচ্ছে। বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশ উৎপাদিত হচ্ছে বাংলাদেশে। বর্তমানে ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম। ২০০৭-২০০৮ অর্থবছরে ২ লাখ ৬০ হাজার টনের বিপরীতে ২০১৯-২০ সালে মোট ইলিশ উৎপাদন হয় ৫ লাখ ৩৩ হাজার টন। গবেষকদের মতে, ২০২০ সালে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার ইলিশ উৎপাদন হয়েছে।
এফএও-এর তথ্য অনুসারে, স্বাদুপানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয়। বিশ্বের মোট স্বাদু পানির মাছের প্রায় ১১ শতাংশ বাংলাদেশে উৎপাদন হয়। সমুদ্রজয়ের ফলে বঙ্গোপসাগর থেকে মৎস্য আহরণের ক্ষেত্র বৃদ্ধি পেয়েছে। মুক্ত জলাশয় এবং ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা লাখ লাখ পুকুরে মাছচাষে দেশে রুপালি বিপস্নব সংঘটিত হয়েছে। মাছ রপ্তানিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে মোট কৃষিজ আয়ের ২৪ শতাংশের বেশি অবদান মৎস্য খাতে। এ সংস্থার মতে, ২০২২ সাল নাগাদ বিশ্বের যে চারটি দেশ মাছচাষে সাফল্য অর্জন করবে তাতে বাংলাদেশ প্রথম হবে। এরপর থাকবে থাইল্যান্ড, ভারত ও চীন।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্যমতে, ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয়। কেবল উৎপাদন বৃদ্ধিই নয়, হেক্টরপ্রতি ধান উৎপাদনের দিক থেকেও অধিকাংশ দেশকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। বাংলার কৃষকরা এখানেই থেমে যাননি। একই জমিতে বছরে একাধিক ফসল চাষের দিক থেকেও বাংলাদেশ এখন বিশ্বের জন্য উদাহরণ। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করায় বাংলাদেশের সাফল্যকে বিশ্বের জন্য উদাহরণ হিসেবে প্রচার করছে। এ সাফল্য সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশ্বে দ্রম্নত খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করেছে এমন দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সবার ওপরে। বিশেষ করে খাদ্যঘাটতির দেশ থেকে উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে উদাহরণ হিসেবে দেখছে বিশ্ব।