ফকিরহাটে ১৪০ কেজি ওজনের মেটেআলু

প্রকাশ | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

ফকিরহাট প্রতিনিধি
বাগেরহাটের ফকিরহাটের বেতাগা গ্রামের অর্ধশতাধিক চাষি মেটেআলু চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। এ এলাকার কৃষকদের চাষকৃত এক-একটি মেটেআলুর ওজন ১০০ থেকে ১৪০ কেজি হয়েছে। উৎপাদিত মেটেআলু ঢাকায় জাতীয় কৃষিমেলায় 'দেশসেরা' নির্বাচিত হয়েছে। ফকিরহাট উপজেলা বেতাগা গ্রামের কৃষক প্রকাশ চন্দ্র দাশ গত তিন বছর আগে মেটেআলুর চাষ শুরু করেন। তার এই চাষ করা আলুর মধ্যে একটি মেঠেআলুর ওজন হয়েছে ১৪০ কেজি। কৃষক প্রকাশ দাশের সাফল্য দেখে অন্য কৃষকরাও অধিক লাভজনক মেটেআলুর চায় শুরু করেছেন। প্রকাশ দাশ ছাড়াও একই গ্রামের মনি মোহন দাশ, কার্ত্তিক দাশ, কংকর দাশ ও অমল দাশসহ অর্ধশতাধিক কৃষক মেটেআলুর চাষ করে ব্যাপক সফলতা লাভ করেছেন। সফল মেটেআলু চাষি প্রকাশ দাশ জানান, সাধারণত বাগানে ছায়ার মধ্যে কোনো সবজি বা ফসল হয় না। তাই পরিত্যক্ত জমিতে গর্ত খুঁড়ে মেটেআলু রোপণ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। তিনি জানান, বর্তমানে প্রতি কেজি মেটেআলু বাজারে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু চাহিদা থাকলেও উৎপাদন কম হওয়ায় ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না। তার উৎপাদিত একটি মেটেআলুর ওজন হয়েছে ১৪০ কেজি। যা ঢাকায় জাতীয় কৃষিমেলায় 'দেশসেরা' নির্বাচিত হয়েছে। অন্যান্য সবজির তুলনায় মেটেআলু উৎপাদনে ঝুঁকি ও রোগবালাই অত্যন্ত কম। বাগানের মধ্যে বিঘাপ্রতি মেটেআলু গড় ফলন ৪ টন হচ্ছে। কৃষি বিভাগ থেকে হাতেকলমে শিক্ষা নিয়ে মেটেআলু চাষ করে তিনি সাফল্য পেয়েছেন বলে জানান। ফকিরহাট উপজেলা কৃষি অফিসার ও পাচিং পদ্ধতির প্রবর্তক মো. নাছরুল মিলস্নাত জানান, মেটেআলুর চাষ করতে গেলে প্রথমে ৩ ফুট চওড়া ও ৪ ফুট আড়ে এবং আড়াই ফুট গভীর করে একটি বড় গর্ত করতে হবে। তারপর তাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ছাই এবং ১ কেজি পটাশ, ১ কেজি ইউরিয়া ও ২ কেজি টিএসপি সার দিয়ে গর্তটি মাটি দিয়ে ভরাট করে ১ মাস ফেলে রাখতে হবে। তিনি জানান, এক মাস পর ওই গর্তে ১টি মেটেআলুর বীজ পুঁতে দিতে হবে। বীজ থেকে চারা গজালে সেই গাছটি অন্য কোন গাছে উঠিয়ে দিতে হবে। গাছটির বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাতে পরিমাণ মতো মাটি ও কিছু জৈব সার দিয়ে গর্তের চারপাশে কিছু আবর্জনা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। \হমো. নাছরুল মিলস্নাত জানান, গত বছর যেসব কৃষক নিয়মানুযায়ী মেটেআলুর চাষ করেছিলেন, মাত্র ১ বছরে তাদের মেটেআলু ১০০ থেকে ১৪০ কেজি ওজন হয়েছে। প্রথমে কৃষি বিভাগের প্রশিক্ষণ নিয়ে কৃষক প্রকাশ দাশ অধিক লাভজনক মেটেআলুর চাষ শুরু করলেও মাত্র ৩ বছরের মধ্যে মেটেআলু চাষির সংখ্যা অর্ধশতাধিক ছাড়িয়ে গেছে। মানুষের শরীরের পুষ্টিহীনতা দূর করতে ও সবজির ঘাটতি মেটাতে পরিত্যক্ত জমিতে সঠিক ব্যবহার করতে বিষমুক্ত সবজি পেতে ও কৃষকদের আর্থিক সচ্ছলতা আনতে বিশেষ অবদান রাখছে মেটেআলু।