ব্যতিক্রমী অর্কিড ভ্যানিলা

প্রকাশ | ০৭ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

ওলী আহম্মেদ, শেকৃবি
ভ্যানিলা ভাইন অর্কিড জাতীয় (পরাশ্রয়ী) লতানো উদ্ভিদ। খুঁটি বা দেয়ালের মতো অবলম্বন পেলে তরতরিয়ে বেড়ে ওঠে এটি। সর্বোচ্চ ৫ মিটার দীর্ঘ একেকটি ভ্যানিলা উদ্ভিদ গ্রীষ্মমন্ডলীয় এলাকায় ভালো জন্মে। এর বৈজ্ঞানিক নাম ঠধহরষষধ ঢ়ষধহরভড়ষরধ। ঠিক জাফরানের মতো বিশ্ব বাজারে ভ্যানিলা পড (লম্বাকৃতি ভ্যানিলার ফল) এর চাহিদা এবং মূল্য দুটোই বেশি। দামি আইসক্রিম, কেক, দই, কুকি-বিস্কুটসহ নানা ভোগ্যবস্তুকে আকর্ষণীয় ও সুস্বাদু করতে খাদ্যশিল্পে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় ভ্যানিলা। তা ছাড়া বিখ্যাত সব রেস্টুরেন্টে রান্নার ঘ্রাণ বাড়াতে মাছ-মাংস, সবজি ও নুডলসের মতো খাবারে ভ্যানিলা নির্যাস এখন একটি অত্যাবশ্যকীয় মেনু্য। ২-৩ বছর ভালোভাবে বেড়ে ওঠার পর ভ্যানিলার সবুজ-হলুদ রঙা বেশ কয়েকটি ফুল ফোটে। ফোটার পর একেকটি ফুল একদিনই স্থায়ী হয়। ফুলগুলোর পরাগায়নের ফলে উৎপন্ন হয় কাঙ্ক্ষিত ভ্যানিলা পড। তবে ভ্যানিলার পরাগায়ন এত সহজ নয়। ভ্যানিলা ফুলের ভেতরে বিভাজিত ঠোঁটসদৃশ পর্দাবিশেষ থাকায় এই উদ্ভিদে স্বপরাগায়ন সম্ভব হয় না। এ ক্ষেত্রে মানবসৃষ্ট পদ্ধতিতে কাঠের তৈরি খিলান সদৃশ ছোট কাঠি কিংবা ঘাসের ছোট কান্ড দ্বারা ভ্যানিলা ফুলে পরাগায়ন করা হয়, যা অনেক সময় সাপেক্ষ ও পরিশ্রমের কাজ। বাদামি রং ধারণ করা শুকনো ভ্যানিলা পড আর এর সূক্ষ্ণ কালো বীজ অ্যালকোহলে ডুবিয়ে রেখে ৫-৬ মাস পর তৈরি হয় মনকাড়া ঘ্রাণের ভ্যানিলা নির্যাস। পরে তৈরি হয় এসেন্স ও ভ্যানিলা পেস্টের মতো মূল্যবান উপাদান। শুধু খাবারেই নয় বরং বিভিন্ন পরিষ্কারক বস্তু ও পেইন্ট (রং)-এর বোটকাগন্ধ দূরীকরণ, মূল্যবান প্রসাধনী ও সুগন্ধি তৈরিতেও এটি ব্যবহৃত হয়। মূল্যের দিক বিচার করলে জাফরানের পরেই রয়েছে ভ্যানিলা। প্রতিকেজি ভ্যানিলার বাজারমূল্য প্রায় ৪০০ ডলার যা বাংলাদেশি মূল্যে ৩২ থেকে ৩৬ হাজার টাকা।