মাছচাষ করে স্বাবলম্বী টিটু

অন্যের জমি লিজ বা বর্গা নিয়ে তিনি মাছচাষ করছেন। ২০০৭ সালে তার বাবার উৎসাহে মাছচাষ শুরু করেন। তারপর একাধিক পুকুর করে নির্ভেজাল খাবার দিয়ে তিনি মাছচাষ করেন। প্রতিছর তার খরচ ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা। সারা বছর মাছ বিক্রি করে তিনি পান ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা। স্থানীয় অনেক যুবক প্রতিনিয়তই তার মাছের প্রকল্পে কাজ করে বেকারত্ব ঘুচাচ্ছেন

প্রকাশ | ১৯ মে ২০১৯, ০০:০০

মো. নজরুল ইসলাম, মধুপুর
সুষমভাবে কার্পজাতীয় মাছচাষ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন টাঙ্গাইলের মৎস্য খামারি মো. নাসির উদ্দিন (টিটু)। তিনি মধুপুর উপজেলার কুড়ালিয়া ইউনিয়নের বেতবাড়ী গ্রামের পাহাড়ীয়া মাটিতে মিশ্র মাছচাষ করে সফল হয়েছেন। মাছচাষ শুরুর মাত্র দুই বছরের মধ্যে তিনি সফলতা পান। যা থেকে তিনি বছরে প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা আয় করেন। জানা গেছে, ২০০৭ সালে মাত্র ৫টি পুকুর নিয়ে মাছচাষ শুরু করেন টিটু। শুরু থেকেই তিনি নিজের উৎপাদিত কাঁচামাল দিয়ে মাছের খাবার তৈরি করেন। যার জন্য তিনি এখন ওই এলাকায় নির্ভেজাল মাছচাষি হিসেবে পরিচিত। পরে একে একে তিনি তার পুকুরের সংখ্যা ৫টি থেকে বাড়িয়ে ১০টিতে রূপান্তরিত করেন। সফল মাছচাষি হওয়ায় তিনি গত বছর উপজেলা এবং এ বছর জেলার সফল মাছচাষির পুরস্কার পেয়েছেন। টাঙ্গাইল সদর থেকে মধুপুর এসে ৪৬ বিঘা জমির ওপর কয়েকটি পুকুরে তিনি রুই, মৃগেল, গস্নাস কাপ, মিরর কাপ, কাতল, সিলভার কাপ, ব্রিগেড, বাটা, তেলাপিয়া, দেশি মাগুর, শিংজাতীয় মাছচাষ করছেন। অন্যের জমি লিজ বা বর্গা নিয়ে তিনি মাছচাষ করছেন। প্রতিছর তার খরচ ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা। সারা বছর মাছ বিক্রি করে তিনি পান ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা। স্থানীয় অনেক যুবক প্রতিনিয়তই তার মাছের প্রকল্পে কাজ করে বেকারত্ব ঘুচাচ্ছেন। মাছের খামার পরিচর্যাকারী আরশেদ আলী জানান, টিটুর মাছের খামারের পুকুরগুলো তিনি দেখাশোনা করেন, এখানে মাছচাষে কোনো ধরনের ভেজাল খাবার ব্যবহার হয় না। তা ছাড়া মৎস্য অফিসের সহযোগিতায় নিয়মিত মাছের রোগ-বালাই হলো কিনা তা পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হয়। সফল মাছচাষি টিটু বলেন, ২০০৭ সালে তার বাবার উৎসাহে মাছচাষ শুরু করেন। তারপর একাধিক পুকুর করে নির্ভেজাল খাবার দিয়ে তিনি মাছচাষ করেন। পুকুর ও মাছের পরিচর্যা করার জন্য নিয়মিত ৫ জন শ্রমিক এবং মাছ ধরার সময় ২০ জন তার পুকুরে কাজ করেন। চাষ শুরুর দুই বছর পর থেকেই তিনি লাভবান হতে শুরু করেন। বছরে তিনি মাছচাষে সব খরচ-খরচা বাদ দিয়ে প্রায় ১৫-২০ লাখ টাকা আয় করেন বলে জানান। মাছচাষে তার পরিবার, দুই বন্ধু এবং জেলা ও উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা তাকে সব সময় সহযোগিতা করেছেন। মধুপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রাশেদ জানান, মৎস্যচাষিরা যখন যে সহযোগিতা চেয়েছেন মৎস্য অধিদপ্তর তখন সে সহযোগিতা করা হয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় মাছচাষ করছেন এটি একটি ভালো উদ্যোগ।