কৃষিপ্রযুক্তি বিস্তারে আরডিএর অভিনব কার্যক্রম

প্রকাশ | ১৯ মে ২০১৯, ০০:০০

আবুল বাশার মিরাজ
পুরনো সেচ ব্যবস্থাপনায় ধান উৎপাদন দুই থেকে তিন গুণের বেশি পানি জমিতে প্রয়োগ করতে হয়। যা পানি সম্পদের অপচয়। আর এ থেকে মুক্তি পেতে গবেষকরা বিভিন্ন ধরনের সেচ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। তবে প্রযুক্তিগুলো কৃষকপর্যায়ে ব্যাপকভাবে না পৌঁছানোই তেমন কোনো উপকারে আসছে না। এসব কারণে ভিন্নধর্মী উপায়ে কৃষক সচেতনতা তৈরি করার উদ্যোগ হাতে নিয়েছে পলস্নী উন্নয়ন একাডেমি (আরডিএ)। আর এটি করা হচ্ছে প্রযুক্তিগুলোর অ্যানিমেশন ফিল্ম (কার্টুন) তৈরি করে ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে। এখানে ব্যবহার করা হয়েছে আঞ্চলিক ভাষা, যেন খুব সহজেই কৃষকরা বিষয়গুলো বুঝতে পারে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কৃষিবিজ্ঞানী ড. এ কে এম জাকারিয়ার গবেষণা ও উন্নয়নে বাস্তবায়িত হয়েছে এ দুটি প্রকল্প। আরডিএর সফল দুটি সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প 'ওয়াটার সেভিং টেকনোলজি' এবং 'সিড টেকনোলজি' নিয়ে নির্মিত হয়েছে 'মাটির অন্তর' ও '১৬ আনা ভাল বীজ' নামক অ্যানিমেশন ফিল্ম। প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক এবং অতিরিক্ত সচিব মো. আমিনুল ইসলাম সম্প্রতি অ্যানিমেশন ফিল্ম দুটি আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করেন। ফিল্মগুলো নির্মাণের দায়িত্বে ছিলেন তরুণ নির্মাতা মো. মহিউদ্দিন মোস্তফা এবং অ্যাডভারটাইজিং কোম্পানি 'ফিল্ম ক্যাসল ওয়ার্ল্ডওয়াইড লিমিটেড'। এই ধরনের ভিন্নধর্মী প্রচারের উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক বলেন, 'সরকারি প্রকল্পের অংশ হিসেবে এই অ্যানিমেশন ফিল্মগুলোর আউটপুট ইতিবাচক। আঞ্চলিক ভাষায় নির্মিত এই দুটি ফিল্ম কৃষক ভাইদের কাছে খুব সহজেই বার্তা পৌঁছানোর শক্ত মাধ্যম হবে বলে আমি মনে করি। জানা গেছে, এডবিস্নউডি প্রযুক্তি (পর্যায়ক্রমে পানি সরবরাহ ও জমি শুকিয়ে সেচ পদ্ধতি) নিয়ে নির্মিত হয়েছে অ্যানিমেশন ফিল্ম 'মাটির অন্তর'। এতে দেখানো হয়েছে, বোরো মৌসুমে ধান চাষাবাদে পানির অপচয় হয় অনেক বেশি। কিন্তু এই প্রযুক্তির মাধ্যমে তা অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়াও ফিল্মটির মাধ্যমে ধান চাষাবাদে সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা, ম্যাজিক পাইপ তৈরির পদ্ধতি, ব্যবহার এবং এর ফলে মানুষ কৃষি কাজে কতটুকু লাভবান হচ্ছে তা বিস্তারিত দেখানো হয়েছে। অপরদিকে '১৬ আনা ভালো বীজ' অ্যানিমেশন ফিল্মে ভালো বীজ চেনার গুণাবলিগুলো গ্রাম্য ছড়ার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। এর ফলে কৃষকরা খুব সহজেই ভালো বীজ এবং খারাপ বীজের পার্থক্য জানতে পারবেন। ব্যতিক্রমী এ প্রচার অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষিবিজ্ঞানী ড. এ কে এম জাকারিয়া বলেন, এসব প্রযুক্তি ব্যবহারে শুধু বাংলাদেশের কৃষক ভাইয়েরাই নয় বহির্বিশ্বেও এর ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষ ব্যাপক উপকৃত হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।