৬০ একরজুড়ে দৃষ্টিনন্দন বাণিজ্যিক ফল বাগান

প্রকাশ | ০৭ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

সবুজ শর্মা শাকিল, সীতাকুন্ড
সীতাকুন্ডে সোনাইছড়ি ত্রিপুরাপাড়া সংলগ্ন রুক্ষ পাহাড়ের বুকে একান্ত শখের বশে বিভিন্ন প্রজাতির দৃষ্টিনন্দন ফলের বাগান গড়ে তুলে সফলতা লাভ করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আল মামুন। রাজনীতিতে সফলতার শীর্ষে থাকা এসএম আল মামুনের বৃক্ষের প্রতি ছিল অপরিসীম ভালোবাসা। তাই তো রাজনৈতিক শত ব্যস্ততার মধ্যেও অনেকটা ভালোবাসার টানে তিনি নিজ উদ্যোগে ৬০ একর পাহাড়জুড়ে গড়ে তুলেছেন ফলের বাগান। ইতোমধ্যে ঢালু পাহাড়ের বুকজুড়ে গড়ে তোলা ফল বাগানে ধরে আছে থোকায় থোকায় ফল। বর্তমানে তার বাগানজুড়ে থাকা ফলের হাসি শুধু তাকেই অনুপ্রাণিত করেনি, অনুপ্রাণিত করেছে কৃষি বিভাগ এবং বৃক্ষপ্রেমী অনেক মানুষকে। পাহাড়ের বুকে ফলের বাগান গড়ে তোলার এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ সীতাকুন্ডের কৃষিকে একধাপ এগিয়ে দেয়ার পাশাপাশি খুলে দিয়েছে সম্ভাবনাময় সফলতার নতুন দ্বার। ইতোমধ্যে তার এ সফলতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে পাহাড় ও পরিত্যক্ত অনাবাদি জায়গায় বাগান গড়তে উৎসাহী হয়েছেন অনেকে। আলাপকালে বাগান মালিক এসএম আল মামুন যায়যায়দিনকে জানান, একান্ত শখের বশে ২০১৭ সালের মে মাসে আমার নিজস্ব ৬০ একর পাহাড়ে উন্নত প্রজাতির ফলের বাগান গড়ে তুলি। বাগান গড়ে তোলার প্রথমে একটু অসুবিধার সম্মুখীন হলেও উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের সার্বিক সহযোগিতায় তা স্বাভাবিক হয়ে যায়। রাজনৈতিক সব ব্যস্ততার ভিড়ে ৩৫ একর পাহাড়ে উন্নত কলম জাতের ১৪ প্রজাতির আম, বাকি জায়গায় উন্নত জাতের মাল্টা, কমলা, কলা, কাঁঠাল, পাতি লেবু, এলাচি লেবু, হাইব্রিড কাগজী লেবু, পেঁপে, কামিনী হাইব্রিড, কাজী পেয়ারা, কামরাঙ্গা, জাম্বুরা, আমলকী ও ভিয়েতনামী খাটো জাতের নারিকেল গাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের গাছ রোপণ করি। তিনি বলেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে বাগানের পরিচর্যায় ৫০ জন কর্মচারী থাকলেও শত ব্যস্ততার ভিড়ে একটু সময় পেলে আমি ফল বাগানে ছুটে আসি। এতে ফলে ভরপুর হয়ে ওঠা আম বাগানে প্রথমধাপে সফলতার দেখা মিলেছে। বাগান সৃজনে এখন পর্যন্ত প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয় হলেও শখের বশে করা ফলের বাগানে এ বছর এক টনের মতো আম পেয়ে খুশি তিনি। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পাহাড়ি পথের ধার ও অনুচ্চ ডালে অত্যন্ত যত্নসহকারে পরিকল্পিতভাবে ফলের বাগানটি গড়ে তুলেছেন এসএম আল মামুন। ফলের উপযুক্ত হয়ে ওঠা বাগানের প্রতিটি গাছে ধরে আছে থোকায় থোকায় ফল। এতে ফুল ও ফলের শোভায় ফলের বাগানটি সবুজের সমারোহে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে বাগানটিতে আম্রপালি, বারো মাসি, ফজলি, হাঁড়িভাঙা, ল্যাংড়া, দো-ফালা গোপালভোগ, পালমার, বস্ন্যাক স্টার, রেড ম্যাংগো, মুম্বাই বানানা, হিমসাগরসহ ১৪ প্রজাতির আমের তিন হাজার গাছে আম রয়েছে। ফলের ভারে নু্যয়ে পড়েছে আমগাছের শাখাগুলো। এ ছাড়া উন্নত প্রজাতির ৮০০টি বারী ওয়ান মাল্টা ও ২০০টি কমলাগাছ ফল ও ফুলে শোভিত হয়ে আছে। পাশাপাশি সঠিক পরিচর্যায় ফল দেয়ার উপযোগী হয়ে উঠছে ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ান প্রজাতির ২৫০টি নারিকেল, ১০০ লেবু ও দুই হাজার সুপারি গাছ। বাগানটির তত্ত্বাবধানে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হাবীবুর রহমান বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত সাজানো বাগান। আগামী মৌসুম থেকে এই বাগান ফলে ফলে ভরে যাবে। এটি অনেকের জন্য মডেলে পরিণত হয়েছে।