গাছের বৃদ্ধিতে বাধা ফেলে দেয়া সিগারেটের ফিল্টার

প্রকাশ | ১৮ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

কৃষি ও সম্ভাবনা ডেস্ক
ধূমপান শুধু প্রত্যক্ষভাবে মানবদেহের ক্ষতি করে না। পরোক্ষভাবে প্রভাব ফেলে মানবদেহে ক্ষতি করে গাছপালা ও পরিবেশের। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সারা বিশ্বে সিগারেট খাওয়ার পর শুধুমাত্র ফেলে দেয়া ফিল্টারেই গাছের বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করছে। গবেষণার প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা যায়, ফেলে দেয়া এসব সিগারেটের ফিল্টারের কারণে মাটিতে বীজের অঙ্কুরোদগমের সম্ভাবনা হ্রাস পেয়েছে ২৭-২৮%। ঘাসের ক্ষেত্রে অঙ্কুরোদগমের সম্ভাবনা হ্রাস পেয়েছে ১০ % এবং দৈর্ঘ্যের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে ১৩%। সম্প্রতি অ্যাংগলিয়া রাস্কিন ইউনিভার্সিটির নেতৃত্বে এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে বলে বিবিসি বাংলার একটি খবরে বলা হয়েছে। গবেষণায় বলা হয়, সেলুলোজ অ্যাসিটেট ফাইবার দিয়ে বানানো সিগারেটের ফিল্টারগুলো এক ধরনের বায়োপস্নাস্টিক। প্রতিবছর কমপক্ষে ৪.৫ ট্রিলিয়ন সিগারেটের ফিল্টার বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে। গবেষকরা ক্যামব্রিজ শহরের আশপাশের এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়ে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১২৮টি সিগারেটের ফিল্টার পেয়েছেন। এর ফলে গাছের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর পস্নাস্টিক দূষণের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ফেলে দেয়া এসব সিগারেটের ফিল্টার। শুধুমাত্র ব্যবহৃত সিগারেটের ফিল্টারই নয়; অব্যবহৃত সিগারেটের ফিল্টারও পরিবেশের জন্য সমান ক্ষতিকর হিসেবে গবেষণায় উলেস্নখ করা হয়েছে। প্রধান গবেষক ড্যানিয়েল গ্রিন এ প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের গবেষণার প্রধান বিষয় ছিল গাছের ওপর সিগারেটে গোঁড়ার কি প্রভাব সেটি দেখা। আমরা দেখেছি যে, সিগারেটের এই অবশিষ্টাংশ গাছের অঙ্কুরোদগমের সফলতা এবং চারাগাছের কান্ডের দৈর্ঘ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে ঘাস এবং গুল্মের কান্ডের ওজন অর্ধেক হ্রাস করে দেয়। যে সমাজে সিগারেটের অবশিষ্টাংশ যত্রতত্র ছুড়ে ফেলার সংস্কৃতি রয়েছে সেসব স্থানে পরিবেশের গুরুতর ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এ গবেষণায় আরও জানা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত এসব গাছের পাতা কিংবা ঘাস খাওয়ার ফলে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গবাদিপশুও। গবেষণায় আরো উলেস্নখ করা হয়, এসব বায়োপস্নাস্টিক জাতীয় ফিল্টারের রাসায়ন উপাদানগুলো গাছের প্রাথমিক পর্যায়ের বিকাশে অত্যন্ত বাধার সৃষ্টি করে। তাই দূষণের হাত থেকে পরিবেশ ও গাছ বাঁচাতে ধূমপায়ীদের আরো দায়িত্বশীল হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন গবেষকরা।