রাতের রানি নাইট কুইন

প্রকাশ | ১৮ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
নাইট কুইন নাম শুনে সহজেই বুঝে নেয়া যায় রাতের আঁধার আলো করে ফোটে ফুলটি। হঁ্যা ফুলের সৌন্দর্য-সৌরভ ও প্রস্ফুটন সব মিলে এ ফুলকে দিয়েছে রানির আসন। যার ফলে এর নামকরণও সার্থক। সন্ধ্যা থেকেই একটু একটু করে কলি হতে ফুল ফোটার প্রস্তুতি নিয়ে একে একে সবগুলো পাপড়ি ছড়িয়ে দিয়ে অপার সৌন্দর্যে রাতের নীরবতায় হাজির হয় ফুলটি। তা ছাড়া নাইট কুইন ফুলকে বলা হয় সৌভাগ্যের প্রতীক। ভাবা হয় যার বাড়িতে এ ফুল ফোটে তার বাড়িতে সৌভাগ্য বয়ে আসে। ক্যাকটাস জাতীয় এ উদ্ভিদের আদি নিবাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চল ও মেক্সিকো। ফুলপ্রেমীদের হাত ধরে আমাদের দেশে এ ফুল বিস্তার লাভ করেছে। তাই তো বর্তমান সময়ে বাসা-বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে নাইট কুইন ফুল চোখে পড়ে। এর উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম- ঊঢ়রঢ়যুষষঁস ঙীুঢ়বঃধষঁস। ইংরেজি নাম- উঁঃপযসধহং ঢ়রঢ়ব ও ছঁববহ ড়ভ :যব ঘরমযঃ। প্রস্ফুটনের সময় বর্ষাকাল। এ ফুলের বৈশিষ্ট্য অন্যান্য যে কোনো ফুল থেকে ভিন্ন। বর্ষা ঋতুর সময়ে বছরের কোনো একদিন রাতে প্রস্ফুটিত হয়- যা এর স্বভাব। ফুল ফোটার আগে গাছে প্রথমে গুটি গুটি কলি ধরে এবং তা ধীরে ধীরে বড় হয়ে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ দিনের মাঝে ফুল ফোটার উপযোগী হয়। যে রাতে ফুল ফোটবে সেদিন বিকেল থেকেই কলিটি অদ্ভুত সাজে সজ্জিত হয়ে ওঠে। তখনই বুঝা যায় নাইট কুইনের ফুল ফোটার সময় হয়েছে। ফুলটিকে সহজে প্রত্যক্ষ করা যায় না তার মূল কারণ হলো ফুলটি নিজেকে আত্মপ্রকাশ ও বিকশিত করে রাতে। আবার রাত শেষ হওয়ার আগেই ঝরে যায়। অথ্যাৎ ভোরের আলো ফোটার আগেই তার জীবনাসন। তাই তো এ ফুলকে দুর্লভ ফুল বলে আখ্যা দেয়া হয়। অনেক ধৈর্য, পরিশ্রম ও প্রতিক্ষার পরই নাইট কুইন ফুল দেখার সৌভাগ্য হয়। তাও খুব বেশি সময়ের জন্য নয়। তা ছাড়া চারা গাছ হতে ফুল ফোটতে সময় নেয় ৫ থেকে ৭ বৎসরেরও অধিক সময়। এর চারা তৈরি হয় পাথরকুচি গাছের মতো পাতা থেকে। পাতা নরম মাটিতে রেখে দিলে তা থেকে ধীরে ধীরে চারা গাছ গজায় এবং এ চারা গাছ বড় গাছে পরিণত হয়। গাছের পাতার রং সবুজ ও বেশ পুরু। গাছ উচ্চতায় গড়ে ৪ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। আবার পাতা থেকেই প্রস্ফুটিত হয় ফুল। ফুটন্ত ফুলের নয়নাভিরাম রূপ-সৌন্দর্য যে কাউকে আকৃষ্ট করবে। লম্বা বোঁটায় নমনীয় কোমল অনেকগুলো পাপড়ির সমন্বয়ে সৃষ্ট নাইট কুইন ফুল। মাঝে পরাগ অবস্থিত। ফুলের রং প্রধানত সাদা। তবে সাদা রঙের ফুলে মাঝে ঘিয়ে রঙের মিশ্রণ ও সুমিষ্ট গন্ধ সব মিলে নাইট কুইনকে দিয়েছে রাজকীয় ফুলের আসন। সর্বোপরি এসব গুণাবলির জন্যই নাইট কুইন ফুলকে বলা হয় রাতের রানি। নাইট কুইন সরাসরি মাটি ও টবে রোপণ উপযোগী ফুল গাছ। উঁচু ভূমি পানি নিকাশের সুবিধাযুক্ত রৌদ্রউজ্জ্বল স্থানে নাইট কুইন ভালো জন্মে। রাতের রানি বলে খ্যাত নাইট কুইন তার সৌন্দর্য বিলিয়ে দিয়ে প্রকৃতিতে সাজিয়ে তুলক মায়াময় রূপে সে প্রত্যাশাই রইলো। \হছবি ও লেখা : মোহাম্মদ নূর আলম গন্ধী