নরসিংদীতে চাষ হচ্ছে রকমেলন

প্রকাশ | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

কৃষি ও সম্ভাবনা ডেস্ক
নরসিংদীতে এখন স্ট্রবেরি, রামবুটান, মাল্টা, আঙুর ও ড্রাগন ফলের মতো বিদেশি ফলের বাণিজ্যিক আবাদ হচ্ছে। এগুলোর সঙ্গে এবার যুক্ত হতে যাচ্ছে রকমেলন নামে আরো একটি বিদেশি ফল। কারণ দেশের মাটিতে ফলটির পরীক্ষামূলক আবাদে সফলতার কথা জানিয়েছে নরসিংদী কৃষি বিভাগ। ফলে অচিরেই রকমেলনের বাণিজ্যিক আবাদের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। নরসিংদী কৃষি বিভাগের দাবি, এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া রকমেলন চাষের জন্য খুবই উপযোগী। প্রথমবারের পরীক্ষামূলক আবাদেই মিলেছে সফলতা। তাই আশা করা হচ্ছে, এ অঞ্চলের কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে ফলটির বাণিজ্যিক চাষাবাদ শুরু করা যেতে পারে। কৃষি বিভাগ আরো জানায়, নরসিংদীতে বিদেশি ফল চাষে এরই মধ্যে সফলতা এসেছে। কিন্তু সঠিকভাবে বাজারজাত না হওয়ায় বিদেশি ফল চাষে কৃষকদের আগ্রহ এখনো কিছুটা কম। তবে স্থানীয় বাজারে মাল্টা, রামবুটান ও ড্রাগন ফলের চাহিদা থাকায় এগুলোর প্রতি কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। কৃষি বিভাগের আশা, কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা গেলে ও বাজারজাতকরণ সহজ হলে রকমেলন আবাদেও তারা আগ্রহী হবেন। নরসিংদী সদর উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী মোশারফ হোসেন জানান, ২০১৬ সালে থাইল্যান্ড থেকে মাত্র ১০-১২টি রকমেলনের বীজ আনা হয়। এ বীজ সদর উপজেলার পাইকার চর গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানকে দিয়ে বপন করা হয়। এর মধ্যে আটটি বীজ থেকে চারা হলেও বৃষ্টির কারণে মাত্র পাঁচটিতে ফল ধরে। তিনি আরো জানান, প্রতিটি ফলের ওজন ২০০ থেকে ৪০০ গ্রাম হয়। ফলগুলোর ভেতরের রং দুই ধরনের; কমলা ও হলুদ। বীজবপনের ৪০ থেকে ৫০ দিনের মধ্যে ফল আসে। ফল ধরার পর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই তা পরিপক্ব হয়। আর ফল ধরার এক মাসের মাথায় গাছটি মারা যায়। কৃষি বিভাগ আরো জানায়, এ দেশের আবহাওয়া অনুযায়ী রকমেলন চাষের জন্য ডিসেম্বর মাসই উত্তম। ফলটি আবাদের জন্য ড্রামে বেড তৈরি করতে হয়। আর সঠিকভাবে মাটি তৈরি করাও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সঠিকভাবে মাটি তৈরি না করা গেলে ফল ছোট থাকতেই গাছ ঢলে পড়া ও মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মাটি তৈরি করার জন্য কম্পোস্ট বা ভার্মি সারের সঙ্গে সামান্য পরিমাণ টিএসপি, এক মুঠো পটাশ, দুই মুঠো ইউরিয়া, এক কেজি কোকো ডাস্ট ও ৫০ গ্রাম বোরন মিশ্রিত শুকনা মাটির বেড তৈরি করতে হয়। তা ছাড়া রকমেলনের জন্য মাচা তৈরি করাও জরুরি। মাটি থেকে আনুমানিক ৫ ফুট উঁচুতে মাচা তৈরি করতে হয়। রকমেলন আবাদে রোদও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রকমেলন চাষি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে আবাদে রকমেলন গাছে ফলন দেখে আমি খুবই খুশি। এলাকাবাসী প্রতিদিনই বিদেশি এ ফল দেখতে ভিড় জমায়। আগামীতে আমি আরো বড় পরিসরে ফলটি আবাদের চিন্তা করছি। নরসিংদী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে সদর উপজেলায় মোস্তাফিজুর রহমানসহ পাঁচজন কৃষক এ ফল চাষ করছেন। তারা হলেন শেখের চরের রানা আহমেদ, পাইকার চরের মিলন মিয়া, নরসিংদী শহরের ব্যাংক কলোনির জাকারুল মোলস্না ও শীলমান্দি এলাকার অন্য এক কৃষক। আশা করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে ফলটি দেশে জনপ্রিয়তা লাভ করবে।