পুকুর পাড়ে মাল্টা চাষ

প্রকাশ | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

মো. শফিকুল ইসলাম
মাল্টা পাহাড়ি ফল হিসেবে পরিচিত হলেও সমতল ভূমিতে রয়েছে এ ফলের ব্যাপক সম্ভাবনা। বরেন্দ্র অঞ্চলের শস্যভান্ডার খ্যাত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে বারি-১ জাতের মাল্টার। মাটির গুণাগুণ ঠিক থাকলে সমতল এলাকাতেও মাল্টা চাষ করে লাভবান হতে পারেন কৃষকরা; এমনটি জানিয়েছেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সফল মাল্টা চাষি কাজী আবু সায়াদ চৌধুরী। বর্তমানে আমাদের দেশে অনেক জনপ্রিয় ও সহজলভ্য একটি ফল হচ্ছে মাল্টা। এ ফলটি সারা বছর পাওয়া যায় এবং দামে বেশ সস্তা। মাল্টাতে বিভিন্ন ভিটামিনসহ অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। মাল্টা চাষ করে সফল হয়ে এলাকায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার গোপালপুর গ্রামের কাজী আবু সায়াদ চৌধুরী। তার বাগানে গাছে গাছে ঝুলছে থোকা থোকা মাল্টা। বাগানে রয়েছে শতাধিক মাল্টা গাছ। শুধু তাই নয়, মাল্টাসহ তার বাগানে সাথী ফসল হিসেবে লেবু গাছ, পেঁপে গাছ ও লিচু গাছ রয়েছে। কাজী আবু সায়াদের সফলতায় উদবুদ্ধ হয়ে এলাকার বেকার যুবকরা ঝুঁকছেন মাল্টা বাগান করার দিকে। কাজী আবু সায়াদ চৌধুরী ব্যক্তিগতভাবে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় উপজেলার পালশা ইউনিয়নের বিলপাড়া গ্রামের পৈত্রিক দেড় একর পরিমাণ পরিত্যক্ত পুকুর পাড়ের পশ্চিম পাশে ২ বিঘা পরিমাণ জমিতে মাল্টা (বারি-১) জাতের চারারোপণ করেন। প্রায় ২ বছরেই মাল্টা গাছে ফল ধরেছে। বাগানে গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন সাইজের মাল্টা। সবুজ পাতার আড়ালে কিংবা পাতা ঝরা ডালেও ঝুলছে থোকা থোকা মাল্টা। এ নিয়ে সরজমিনে গিয়ে মাল্টা চাষি কাজী আবু সায়াদ চৌধুরী সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, প্রথম গাছে মাল্টা ধরার পর থেকে ফল চাষের মাধ্যমে বৈপস্নবিক পরিবর্তনের স্বপ্ন জাগে তার। এখন চলছে স্বপ্ন পূরনের পালা। স্থানীয় কৃষকরা এসব ফলমূল চাষে এগিয়ে এলে মাল্টাসহ বিভিন্ন ফলের চাহিদা মেটানো সম্ভব। ফলগুলো সুমিষ্ট হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। তিনি আরো জানান, গত বছরের চেয়ে চলতি মৌসুমে মাল্টা ফলন ভালো হয়েছে। প্রতি কেজি মাল্টা বিক্রি হয় ১১০ থেকে ১৪০ টাকা দরে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এখলাস হোসেন জানান, ঘোড়াঘাটসহ দিনাজপুর জেলায় ধান চাষের পাশাপাশি মাল্টা চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। ধান উৎপাদনের চেয়ে মাল্টা চাষে ১০ গুন বেশি লাভবান হতে পারে এ অঞ্চলের কৃষক। তিনি আরো বলেন, ভূ-গর্ভের অল্প পানি উত্তোলন করে কম খরচে ফলজ বাগানা তৈরি করে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারে।