ঘোড়াঘাটে নেপিয়ার ঘাসের বাণিজ্যিক চাষ

প্রকাশ | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

মো. শফিকুল ইসলাম, ঘোড়াঘাট
দিনাজপুরে ঘোড়াঘাট পৌরসভাসহ ৪টি ইউনিয়নে গত কয়েক বছর ধরে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ২ শতাধিক দুগ্ধ ও গরুর খামার গড়ে ওঠায় পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত বিদেশি নেপিয়ার জাতের ঘাস চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নেপিয়ার জাতের ঘাস দুগ্ধজাত গাভীকে খাওয়ালে বেশি পরিমাণ দুধ পাওয়া যায়। এ ছাড়া গাভীকে এ ঘাস খাওয়ালে বাছুর অন্ধত্ব থেকে রক্ষা পায় এবং স্বাস্থ্যবান হয়। এসব কারণে এ ঘাস প্রচলিত ঘাসের তুলনায় জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলার রুপসী পাড়া গ্রামের মোজাহার আলী, মগলিশপুর গ্রামের বাহাদুর রহমান, মারুপাড়া গ্রামের সাইদুল ইসলাম তারা জানান, বেশ কয়েক বছর থেকে উপজেলার প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরামর্শে নেপিয়ার ঘাস চাষ করে আসছি। নিজের জমির পাশাপাশি রাস্তার দুই ধারে এ ঘাস চাষ করা হচ্ছে। তাদের দেখাদেখি অনেকেই এখন এ ঘাস চাষ করে লাভবান হচ্ছে। ঘাসের চাহিদার বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকে আগ্রহী হয়ে ঘাস চাষে ঝুঁকে পড়ছে। নেপিয়ার ঘাস চাষে লাভবান হওয়ায় অনেকে আবার বাণিজ্যিকভাবে ধানের জমিতে ঘাস চাষ শুরু করেছে। উপজেলার গোপালপুর গ্রামের কাজী আবু সায়াদ জানান, দুগ্ধ খামার প্রতিষ্ঠার পর থেকে গোখাদ্য সংকট ছিল তার। তাই তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ২০০২ সালে ৪০ শতক জমিতে নেপিয়ার জাতের ঘাস চাষ করেন। তিনি আরো জানান, এ ঘাস একবার বপন করলে আর বপন করতে হয় না। ঘাসের গোড়া থেকে ১ ফিট উপরে কাটলে পরে সেখান থেকে আবার ঘাস জন্মে। কৃষকের বাড়তি আয়ের উৎস তৈরিসহ দুগ্ধ উৎপাদনে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। ঘোড়াঘাট উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মামুনুর-অর-রশিদ জানান, খামারিরা স্ব-উদ্যোগে ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বর্তমানে প্রায় প্রতিটি গরুর খামারি এ ঘাসের চাষ করছে। খামারিদের নেপিয়ার ঘাস চাষের জন্য বীজ সরবরাহসহ সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। বর্তমানে সরকারি হিসেবে এ উপজেলায় ৯৭ জন চাষি প্রায় দেড়শ বিঘা জমিতে এ ঘাস চাষ করছে। এর বাহিরে আরো শতাধিক জমিতে ঘাস চাষ করছে চাষিরা। এ অঞ্চলে দিন দিন নেপিয়ার ঘাস জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। দুগ্ধ উৎপাদনের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সরকারিভাবে এ ঘাস চাষে খামারিদের প্রণোদনা ও উৎসাহ প্রদানসহ ব্যাংক ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করলে আরও উৎসাহিত হবে।