বাড়ির ছাদে ফুল, ফল ও সবজির বাগান

প্রকাশ | ১০ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

সবুজ শর্মা শাকিল, সীতাকুন্ড
বাড়ির ছাদে ফুল, ফল ও সবজির বাগান গড়ে সফল হয়েছেন সীতাকুন্ডের বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়নের বোয়ালিয়াকুল এলাকার সৌখিন চাষি মো. আবুল মুনছুর। পরিবারের সদস্যদের বিষমুক্ত খাদ্যর জোগান দিতে বাড়ির দ্বিতল ভবনের ছাদে ব্যতিক্রমী এ বাগান গড়ে তুলেন তিনি। ছাদে গড়ে তোলা বাগানের কোনো গাছে ধরে আছে ফুল, আর কোনো গাছে ধরে আছে বিভিন্ন প্রজাতির ফল। তার বাগান জুড়ে থাকা ফলের হাসি শুধু তাকেই অনুপ্রাণিত করেনি, অনুপ্রাণিত করেছে এলাকার সব শ্রেণিপেশার মানুষকে। ব্যতিক্রমী এ ফলের বাগান দেখতে প্রতিনিয়ত তার ছাদবাগানে ছুটে আসছেন বৃক্ষপ্রেমী মানুষরা। জানা গেছে, একান্ত শখের বসে ২০১৮ সালে আবুল মুনছুর তার বাড়ির দ্বিতল ভবনের ছাদে ফলের বাগান গড়ে তোলেন। প্রথমে ৫টি ফুলের চারা দিয়ে পরীক্ষামূলক ছাদে বাগান শুরু করেন। পরীক্ষামূলক শুরু হলেও ফুলের চারার ভালো অবস্থান দেখে পরে ছাদে বাগান তৈরি পরিকল্পনা নেন। এরপরে এক এক করে আম, কামরাঙ্গা, ডালিম, ছবেদা, চাইনা কমলা, পাতি, এলাচি ও হাইব্রিড কাগজিলেবু, পেঁপে, পেস্তাবাদাম, কামিনী হাইব্রিড, কালো আম, কাজী পেয়ারা, ডালিম, জাম্বুরা, আমলকী, জলপাই, বড়ই, মালটা ও আমড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের গাছ রোপণ করেন। এতে বাগান গড়ে তোলার দু'বছরের মাথায় তার গাছে থোকায় থোকায় ফলন ধরেছে। এ ছাড়া গোলাপ, রজনীগন্ধা, জুঁই, চামেলীসহ হরেক রকমের ফুল গাছে ফুটে আছে। সরজমিনে ছাদবাগান ঘুরে দেখায়, ছাদের উপরে সারিবদ্ধভাবে ড্রামে মাটি ভরাট করে ফুল, ফল ও সবজির ৫০টি মাদা তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি মাদায় রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল, ফল ও সবজির গাছ। ইতোমধ্যে আবুল মুনছুরের ছাদ বাগানে আমড়া, মালটা, কমলা, কামরাঙ্গা, জলপাইসহ শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের ফল গাছে থোকায় থোকায় ফল ধরে আছে। পাশাপাশি থোকায় থোকায় ধরে আছে টমেটো, লাউ ও বেগুন। ফুলে, ফলে শোভিত হয়ে আছে পুঁইশাকের মাচা। একান্ত আলাপকালে সৌখিন চাষি আবুল মুনছুর জানান, বাড়ির ছাদে বাগান করার শখ আমার অনেক দিনের। বেশ কয়েকবার বাগান করার পরিকল্পনা করলেও বিভিন্ন কারণে তা করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে আমার ছেলে জিয়া উদ্দিনের উৎসাহে ২০১৮ সালে বাড়ির ছাদে ফুল, ফল ও সবজির বাগান গড়ে তুলি। প্রথমে বাগানে কয়েকটি ফুলের চারা লাগিয়ে পরীক্ষা করি, তাতেই সফলতার মুখ দেখতে পায়। এরপর এক এক করে আমড়া, কমলা, ছবেদা, কামরাঙ্গাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ গাছ রোপণ করি। বর্তমানে বিভিন্ন ফলদ গাছে ফল ধরেছে। আমার পাশাপাশি এ ছাদে গাছের পরিচর্যা করছেন আমার ছেলেরাও। তিনি আরো বলেন, এ বছর ছাদে রোপিত গাছের লেবু সারাবছর নিজেরা খেয়েছি আবার প্রতিবেশীদেরও দিয়েছি। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র নাথ জানান, বৃক্ষের প্রতি আবুল মুনছুরের ভালোবাসাই সফলতার অন্যতম নিদর্শন। তিনি বাড়ির ছাদে ফলের বাগান গড়ে তুলে সবুজের সমাহার সৃষ্টির পাশাপাশি মিটাচ্ছেন বিভিন্ন ধরনের ফলের চাহিদা। ছাদে গড়ে তোলা তার এ ফলের বাগান বোয়ালিয়াকুল এলাকার সব শ্রেণিপেশার মানুষকে মোহিত করেছে। ইতোমধ্যে অনেকে ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজ বাড়ির ছাদে ফুল, ফল ও সবজির বাগান গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছেন।