সবুজ শোভায় মনোরম ছাদ

প্রকাশ | ১৭ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সবুজ শর্মা শাকিল, সীতাকুন্ড সীতাকুন্ডে ক্ষুদে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এবং নিবিড় পরিচর্যায় উপজেলা কমপেস্নক্স সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আঙিনায়, ছাদে গড়ে উঠেছে দৃষ্টি নন্দন ফলের বাগান। এতে সারি সারি ড্রাম আর মাটির টবে বেড়ে উঠেছে বাহারি রকমের ফল, ফুল আর সবজি। বিভিন্ন ধরনের ফুল ও ফলের গাছের অপূর্ব শোভায় এক মনোরম সৌন্দর্যের সৃষ্টি হয়েছে বিদ্যালয়ের বাগান জুড়ে। এ যেন এক বর্ণিল সবুজের সমারোহ। বিদ্যালয়ের আঙিনায় ও ছাদের ব্যতিক্রমী এ বাগান মোহিত করছে বিদ্যালয়ে আসা অভিভাবক ও বৃক্ষপ্রেমীদের। পাশাপাশি নিজেদের হাতে গড়া বাগানের ফুল ও ফলের সমাহার দেখে সীমাহীন আনন্দে ভাসছে বিদ্যালয়ের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। আলাপকালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নুরুনাহার রিনা জানান, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অনুপ্রেরণায় ও ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় দুই বছর আগে বিদ্যালয় আঙিনা ও ছাদে ফুল, ফল এবং সবজির বাগান গড়ে তোলা হয়। শুরুতে ক্যাকটাস, বাগান বিলাস, সন্ধ্যা মালতি, গন্ধরাজ, বেলি, কাগজি লেবু, বরই, ডালিম, পেয়ারা, ড্রাগন ফল, মাল্টা, কমলা, অ্যালোভেরা ও আমড়াসহ ২৫ প্রজাতির ফুল ও ফলের চারা রোপণ করা হয়। শিক্ষকদের আন্তরিকতা ও ক্ষুদে শিক্ষার্থীর নিবিড় পর্যবেক্ষণে প্রথমধাপের ছাদ বাগানে সফলতা আসে। এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রায় ৩৫ প্রজাতির ফুল অর্ধ শতাধিক প্রজাতির ফলের চারা রোপণের মাধ্যমে বিদ্যালয় আঙিনায় ও ছাদে ঝুলন্ত বাগান গড়ে তোলা হয়। পাশাপাশি শিম, বেগুন, টমেটোসহ বিভিন্ন প্রজাতির সবজির চারা রোপণ করা হয়। বর্তমানে বাগানে লাগানো উন্নত জাতের বড়ই গাছ ফুলে-ফলে শোভিত হয়ে আছে। পাশাপাশি ফুলে ফুলে শোভিত হয়ে আছে আমড়া ও পেয়ারা গাছ। এ ছাড়া মুকুলে ভরে আছে বারমাসি আম বিভিন্ন প্রজাতির আম গাছ। তিনি বলেন, ছাদে যখন থেকে বিভিন্ন রকম ফুল ও ফলের গাছ লাগানো হয়েছে ঠিক তখন থেকেই শিক্ষার্থীরা আগ্রহ করে গাছের পরিচর্যা করে আসছে। এর মধ্যে দিয়ে তাদের মধ্যে প্রকৃতি প্রেম সৃষ্টি হয়েছে। তারা নিজের বাড়ি ঘরেও এভাবে বাগান করবে বলে আমার বিশ্বাস। সরজমিনে বিদ্যালয় ছাদে গিয়ে দেখা যায়, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা টিফিনের অবসর সময়ে বাগানের গাছে পরম যত্নে পানি ঢালছে। কেউবা গাছের গোড়ায় গজিয়ে উঠা আগাছা নির্মূলে ব্যস্ত। আবার কেউ পরম মমতায় স্নেহের পরশ বুলিয়ে দিচ্ছে সদ্য ফোটা ফুলে। এ যেন এক অন্যরকম ভালোবাসা। আর শিশু শিক্ষার্থীদের প্রকৃতি প্রেমের এ অপরূপ দৃশ্য বিদ্যালয়ে আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। বিদ্যালয়ে ছাদে তাদের নিজ হাতে গড়া সবুজ ভুবনকে আরো সবুজের সমারোহে সাজাতে টিফিনের পুরো সময় বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকেন তারা। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় স্কুল ছাদে বাগান করেন তারা। এটি তাদের বাগান। তাই নিয়মিত পরিচর্যা করে বাগানটি আরো সুন্দর করার চেষ্টা করছেন। প্রতিদিন পরিচর্যা না করলে গাছগুলো বাঁচবে না তাই টিফিনের সময় এবং ক্লাসের ফাঁকে গাছের যত্ন নেয় তারা। শিক্ষার্থীরা আরো বলে, বইয়ে পড়েছি গাছ আমাদের অক্সিজেন দেয়। গাছ না থাকলে কেউই বাঁচবে না। এ ছাড়া গাছ থেকে সুন্দর সুন্দর ফুল ও ফল পাওয়া যায়। তাই আমরা গাছগুলোর যত্ন করি। সীতাকুন্ড উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন সোহেল বলেন, বিদ্যালয়ের ছাদে বাগান একটি প্রশংসনীয় ও অনুকরণীয় প্রচেষ্টা। বাগানটি পরিদর্শন করে আমি নিজেও অভিভূত হয়েছি। উপজেলার সব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বাগানটি পরিদর্শনের জন্য বলা হয়েছে। যাতে উপজেলার সব বিদ্যালয়ে এই ধারণা ছড়িয়ে দেওয়া যায়। তিনি আরো বলেন, উপজেলার প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাদবাগান গড়ে তোলার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বিদ্যালয়ে বাগান গড়ে তোলা হলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার পাশাপাশি ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে ধারণা পাবে।