ফলের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণে বায়োসেন্সিং প্রযুক্তি

প্রকাশ | ০১ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

আবুল বাশার মিরাজ
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি, শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. হামিদুল ইসলাম বলেন, 'পুষ্টিমান ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা এবং রপ্তানি বাণিজ্যে ফলের গুণগত মান নিশ্চিতকরণে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার আবশ্যক। বায়োসেন্সিং প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ফলের গুণগত মান ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকটি সঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব- যা বৈদেশিক রপ্তানিতে উলেস্নখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, ফলের গুণগত মানের আকার-আকৃতি, স্বাদ, স্থূলতা, কাঠিন্যতা, পুষ্টিমান, রাসায়নিক ও জৈবিক দূষণকারী উপাদানের উপস্থিতির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু আমাদের দেশে ফলের গুণগত মান বিচার করা হয় শুধুমাত্র আকার-আকৃতি ও বাহ্যিক সৌন্দর্যের ভিত্তিতে। যে কারণে, ফলের গুণগত মান ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিষয়গুলো সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলে বৈদেশিক রপ্তানির পরিমাণ ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। ফলের গুণগত মান ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিষয়গুলো সঠিকভাবে নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলে উৎপাদক ও ভোক্তা উভয়ই আর্থিকভাবে লাভবান হবে। এই গবেষক আরো বলেন, প্রচলিত পদ্ধতি যেমন মানুষের চোখের দেখায় ফলের গুণগত মান পরীক্ষণের পরিবর্তে আধুনিক বায়োসেন্সিং প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে যদি আমরা ভোক্তার চাহিদা, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ও বৈদেশিক রপ্তানির পরিমাণ বৃদ্ধি করতে চাই। মানুষের চোখের দেখায় ফলের গুণগত মান পরীক্ষণ পদ্ধতি বেশ জটিল, সময়সাপেক্ষ ও ভুলের সম্ভাবনা বেশি। বায়োসেন্সিং প্রযুক্তি যেমন- মেশিন ভিশনের মাধ্যমে দ্রম্নত, নির্ভুলভাবে ও কম সময়ে ফলের আকার-আকৃতি ও বাহ্যিক ত্রম্নটি অনুযায়ী পৃথকীকরণ করা সম্ভব। এ ছাড়াও ধ্বনিতাত্ত্ব্বিক, বর্ণালিবীক্ষণ, এক্স-রে ও স্ফুরজ্যোতি বিশ্লেষণের মাধ্যমে ফলের কাঠিন্যতা, অভ্যন্তরীণ ত্রম্নটি, গন্ধ, টক ও মিষ্টতা এবং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর উপাদানের উপস্থিতি নির্ভুলভাবে নির্ণয় করা সম্ভব। বায়োসেন্সিং প্রযুক্তির ব্যবহার ফলের গুণাগুণ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়গুলো নিশ্চিতকরণ ও নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। এতে করে বাজারে ভালো মানের ফলের জোগানের সঙ্গে সঙ্গে এর ভালো মূল্যমান নিশ্চিতকরণ সম্ভব হবে- যা উৎপাদকের আর্থিক সচ্ছলতা দেবে। এ ছাড়াও ভালো মানের ফল দেশীয় চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহের পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে দেশীয় ফলের বৈদেশিক বাজার সৃষ্টি করা সম্ভব- যা দেশের সুনাম ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ব্যাপক অবদান রাখবে।