শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
আতঙ্কের কিছু নেই গবাদিপশুর লাম্পি স্কিন রোগে

নামমাত্র মূল্যে ভ্যাকসিন দিচ্ছে সরকার

কৃষিবিদ সামছুল আলম
  ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

সম্প্রতি বাংলাদেশে গবাদিপশুতে লাম্পি স্কিন ডিজিজ নামে ভাইরাসজনিত এক ধরনের চর্মরোগ দেখা দিচ্ছে। এ রোগে প্রাপ্তবয়স্ক গরু-মহিষের চেয়ে অল্প বয়সের গরু-মহিষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। রোগটি মহামারি আকারে দেখা দিলেও আতঙ্কের কিছু নেই বলে উলেস্নখ করেন প্রাণি চিকিৎসকরা। রোগটি প্রতিরোধে সরকার ভ্যাকসিন প্রদান করছে কৃষকের মাঝে।

জানা যায়, ভাইরাসজনিত এ চর্মরোগটি গরু-মহিষের চামড়ায় নডিউল বা গুটি তৈরি করে। রোগটি ফ্লক্সভিরিড পরিবারের অন্তর্গত ভাইরাস দ্বারা গঠিত হয়। রোগটির বাহক মশা, মাছি ও আঁঠালি। রোগটি আক্রান্ত প্রাণির লালা, নাক ও চোখ থেকে নির্গত পানি দ্বারা, আক্রান্ত ষাঁড়ের বীর্যের মাধ্যমে সুস্থ গাভীকে কৃত্রিম প্রজনন করালে এবং আক্রান্ত গরুর দুধ খেলে অথবা আক্রান্ত গরুর দুধের বাট চাটলে বাছুর আক্রান্ত হয়। এ ছাড়া গবাদিপশু এক স্থান হতে অন্য স্থানে গমন করলেও রোগটি ছড়ায়। রোগটি সম্পর্কে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রাণিস্বাস্থ্য প্রশাসন) ডা. আবু সুফিয়ান বলেন, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো রোগটি এবারই ধরা পড়ে। রোগটি মূলত ১৯২৯ সালে সর্বপ্রথম আফ্রিকা মহাদেশের জাম্বিয়াতে দেখা যায়। তিনি বলেন, রোগটি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। রোগটি প্রতিরোধে ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ৪ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন নামমাত্র মূল্যে বিতরণ করা হয়েছে কৃষকের মাঝে। ক্রমান্বয়ে দেশের আক্রান্ত জেলা ও উপজেলায় এই ভ্যাকসিন বিতরণ করা হবে। তবে ভাইরাসজনিত রোগটির কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। শুধু সচেতনতার মাধ্যমেই রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব।

ইতোমধ্যে খামারিদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে লিফলেট, পোস্টার বিতরণসহ উঠান বৈঠক করা হয়েছে। তিনি বলেন, তবে রোগের লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে হয়। প্রাথমিকভাবে এন্টিপাইরেটিক ও এন্টিহিস্টামিন দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। এ ছাড়া নডিউল বা গুটি ফেটে গেলে এবং সেকেন্ডারি ব্যাক্টেরিয়াল ইনফেকশন দমন করার জন্য সিস্টেমিক এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয়। এ ছাড়া ফেটে যাওয়া গুটিতে যেন মশা-মাছি বসতে না পারে সে জন্য ফ্লাই রিপিলেন্ট ব্যবহার করা যাবে। তা ছাড়া তিনি বলেন, রোগটি ২১ দিন পর এমনিতেই সেরে উঠে।

এই রোগটি নিয়ন্ত্রণে ডা. মো. এনামুল কবির তথ্য কর্মকর্তা (প্রাণিসম্পদ) বলেন, খামারের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। অসুস্থ গবাদিপশুকে সুস্থ গবাদি পশু থেকে আলাদা করে রাখতে হবে। আক্রান্ত পশুকে মশারির ভেতর রাখতে হবে। খামারের সার্বিক হাইজিন ও বায়োসিকিউরিটি ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য খামারিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে। অন্যদিকে খামারের কোনো গরু আক্রান্ত হলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে হবে এবং রেজিস্টার্ড ভেটেরিনারি চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<79913 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1