সারাবছর চাষযোগ্য পেঁয়াজ বারি-৫, ফলন তিনগুণ বেশি

প্রকাশ | ০১ মার্চ ২০২০, ০০:০০

কৃষি ও সম্ভাবনা ডেস্ক
পেঁয়াজের দাম নিয়ে সারাদেশে উদ্বিগ্ন ভোক্তাদের জন্য সুখবর নিয়ে এসেছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাগুরা আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা। তারা উচ্চফলনশীল এমন জাতের পেঁয়াজ উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছেন যে, পেঁয়াজের ফলন প্রচলিত জাতের চেয়ে তিনগুণ। স্থানীয় জাতের চেয়ে এ পেঁয়াজ ১৫ থেকে ২০ দিন আগে কৃষকের ঘরে ওঠে। ফলে এই পেঁয়াজ এবং এর বীজ চাষে কৃষকের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। সারা বছর চাষযোগ্য এ জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে অল্প সময়ের মধ্যেই দেশের ঘাটতি পূরণ করে রপ্তানিও সম্ভব হবে বলে মনে করছেন এ জাতটির উদ্ভাবক ও মাগুরা মসলা গবেষণা কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান। জানা গেছে, এই গবেষণা কেন্দ্র উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল বারি পেঁয়াজ-৪ ও ৫ জাতের মধ্যে বারি পেঁয়াজ-৫ জাতটি সারাবছর চাষযোগ্য। কৃষক এ চারা লাগিয়ে প্রচলিত জাতের চেয়ে তিনগুণেরও বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন করেছেন। অধিক উৎপাদনের ফলে লাভজনক হওয়ায় এই কেন্দ্রের সহায়তা ও পরামর্শে গত মৌসুমে কৃষক এই জাতের পেঁয়াজ এবং এর বীজ ব্যাপকভাবে উৎপাদন করেছেন। এ জাতের উদ্ভাবক ও মাগুরা মসলা গবেষণা কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বারি পেঁয়াজ-৪ ও ৫ চাষে সাধারণ জাতের পেঁয়াজের চেয়ে তিনগুণ বেশি উৎপাদন হয়। সাধারণ জাতের পেঁয়াজ প্রতি হেক্টরে হয় ৭-৮ টন। বারি ৪ ও ৫ উৎপাদন হয় ২৫ থেকে ২৭ টন। এ পেঁয়াজের মান দেশি পেঁয়াজের মতোই, রোগবালাই হয় না। স্বাদ দেশি পেঁয়াজের মতো হওয়ায় কৃষক ভালো দামও পান। মাগুরা সদরের নালিয়ারডাঙ্গি গ্রামের কৃষক আক্কাস খান বলেন, গত মৌসুমে তিনি ৫০ শতক জমিতে বারি পেঁয়াজ-৪ জাতের লাগিয়ে বাম্পার ফলন পেয়েছেন। তা ছাড়া সাধারণ পেঁয়াজের চেয়ে ১৫ থেকে ২০ দিন আগে ওঠায় কৃষক ভালো দামও পেয়েছেন। এ বছর তিনি তিন একর জমিতে এ পেঁয়াজ চাষ করছেন। একই ধরনের মন্তব্য করেন সদরের রামনগরের মোকছেদ মন্ডল ও বকুল গাজীসহ একাধিক কৃষক। সদরের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের কৃষক চান্দ আলী জানান, তিনি মসলা গবেষণা কেন্দ্রের সহযোগিতায় এক বিঘা জমিতে বারি পেঁয়াজ-৪ জাতের বীজ চাষ করেছিলেন। ইতোমধ্যে লক্ষাধিক টাকার বীজ বিক্রি করেছেন। নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে আরও লক্ষাধিক টাকার বীজ বিক্রি হবে বলে তিনি আশা করছেন। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা নিকুঞ্জ মন্ডল বলেন, এতদিন কৃষকরা স্থানীয় জাতের পেঁয়াজ চাষ করতেন। তবে এবার কৃষি বিভাগের পরামর্শে তারা তিনগুণ ফলনশীল বারি পেঁয়াজ-৪ ও ৫ জাতের চাষ করছেন। এ পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। গত মৌসুমে কৃষকরা এ দুটি জাতের পেঁয়াজ এবং এর বীজ উৎপাদন করে লাভবান হয়েছেন। \হজেলা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক জাহিদুল আমিন বলেন, গেল মৌসুমে এ জেলায় ছয় হাজার ৫৯০ হেক্টর জমিতে ৯৩ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। এ জেলায় বার্ষিক পেঁয়াজের চাহিদা ২০ হাজার টন।