শোকের শক্তি দেখিয়েছে সন্ধানী

প্রকাশ | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

মনির হোসেন শিমুল
প্রতি বছরের মতো এবারও শোকের মাস আগস্ট উপলক্ষে মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষাথীের্দর দ্বারা পরিচালিত জাতীয় প্রতিষ্ঠান ‘সন্ধানী’ গ্রহণ করে মাসব্যাপী কমর্সূচির। সন্ধানীর ২২টি ইউনিট, সন্ধানী ডোনার ক্লাব, সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি এবং সন্ধানী কেন্দ্রীয় রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র সবের্মাট ৩৯টি রক্তদান কমর্সূচিসহ মোট ৯২টি অনুষ্ঠান পালন করে শোক দিবস উপলক্ষে। যার মধ্যে ছিল স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদানে উদ্বুদ্ধকরণ, স্বেচ্ছায় রক্তদান, ফ্রি রক্তের গ্রæপ নিণর্য়, বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা, বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা, ভ্যাক্সিনেশন, বৃক্ষরোপণ। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে প্রতি বছর প্রায় ৬ লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। পাশাপাশি কনির্য়ার অস্বচ্ছতার কারণে দেশে বতর্মানে অন্ধত্বের সংখ্যা প্রায় ছয় লক্ষাধিক। ক্রমবধর্মান এ রক্তের চাহিদা ও অন্ধের সংখ্যার ভিত্তিতে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান কমর্সূচিকে বতর্মানে একটি সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিয়েছে ‘সন্ধানী’। মানবসেবার স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছে দেশের সবোর্চ্চ সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পদক’, যুব সমাজকে মানব কল্যাণে সম্পৃক্ত করার অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এশিয়ার একমাত্র সংগঠন হিসেবে ‘কমনওয়েলথ ইয়ুথ সাভির্স অ্যাওয়াডর্’। ২ নভেম্বর, ১৯৭৮ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বøাড ব্যাংকে সন্ধানী আয়োজন করে বাংলাদেশের প্রথম স্বেচ্ছায় রক্তদান অনুষ্ঠানের। যাকে স্বীকৃতি দিয়ে বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৫ সালে ২ নভেম্বরকে ঘোষণা করে ‘জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস’ হিসেবে, যাতে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদানের সামাজিক আন্দোলনটি ছড়িয়ে যায় সাধারণ মানুষের কাছে। সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদের (২০১৮-১৯) সাংগঠনিক সম্পাদক তমাল কৃষ্ণ চক্রবতীর্ বলেন, ‘প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দীঘর্ ৪১ বছর আন্তরিক ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং দক্ষ পরিচালনায় দেশ বিদেশে মানবসেবার অপর নামে রূপান্তরিত হয়েছে ভালোবাসার ‘সন্ধানী’। শোক দিবসে সারাদেশে স্বেচ্ছায় রক্তদানের মাধ্যমে সংগৃহীত হয়েছে রেকডর্ পরিমাণ রক্ত। আজন্ম আতর্মানবতার সেবায় কাজ করে যাওয়া ‘সন্ধানী’ পূরণ করছে দেশের হাসপাতাল গুলোর রক্তের চাহিদা। হাসি ফোটাচ্ছে অসহায় মানুষের মুখে। সচেতন করে তুলছে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদানের বিষয়ে।’ সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদের (২০১৮-১৯) প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহ মো. আরমান জানান, শুধু ১৫ আগস্ট সন্ধানী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ইউনিটে ১৩২ ব্যাগ, সন্ধানী ঢাকা মেডিকেল কলেজ ইউনিটে ১১০ ব্যাগ, সন্ধানী যশোর মেডিকেল কলেজ ইউনিট ৫৭ ব্যাগ, সন্ধানী বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ ইউনিটে ৫৭ ব্যাগ, সন্ধানী রংপুর মেডিকেল কলেজ ইউনিটে ৫৬ ব্যাগ, সন্ধানী এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ইউনিটে ৫৩ ব্যাগ, সন্ধানী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ইউনিট ৫২ ব্যাগ, সন্ধানী শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ইউনিটে ৪০ ব্যাগ, সন্ধানী স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ইউনিটে ৩৭ ব্যাগ, সন্ধানী গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ ইউনিটে ৩১ ব্যাগ, সন্ধানী ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ইউনিটে ৩০ ব্যাগ, সন্ধানী কেন্দ্রীয় রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রে ৪৫ ব্যাগসহ অন্যান্য ইউনিট মিলিয়ে মোট ১১০০ ব্যাগ সংগ্রহ হয়। সন্ধানীয়ানরা শোককে শক্তিতে পরিণত করতে জানে।