চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

ঈদের ছুটির পর প্রাণবন্ত ক্যাম্পাস

প্রকাশ | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

রুমান হাফিজ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষাথীর্রা
ঈদুল আজহার ছুটি শেষে শিক্ষাথীের্দর গান-গল্প আড্ডায় আবারও মুখর হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ করে ক্যাম্পাসে ফিরতে শুরু করেছেন শিক্ষাথীর্রা। অনেকদিন পর ক্যাম্পাসে ফিরে শিক্ষাথীর্রা যেন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় গল্পে পুনমির্লনীর আনন্দ ভাগাভাগি নিয়ে মেতে আছেন। কলা ঝুপড়ির সেই চিরচেনা চেহারাটা পরিলক্ষিত হলো। শাটল ট্রেনে সিট ধরার প্রতিযোগিতাও পুনরায় শুরু হয়েছে! পাশাপাশি বগিতে বগিতে গানের সুর তো আছেই। জিরো পয়েন্ট, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, মুক্তমঞ্চ, শহীদ মিনার চত্বর কিংবা কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সব যেন আবার ফিরে পেয়েছে তার যৌবন। সুন্দর একটি জীবন গড়ার জন্য দেশের নানা প্রান্ত থেকে পরিবার-পরিজন ছেড়ে এসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে তাদের কাছে ঈদের আনন্দটা একটু ভিন্ন। প্রায় সব সময়ই কোনো না কোনো ক্লাস, পরীক্ষা, এসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশনের চাপে থাকতে হয়। হৃদয়ে লালন করা হাজারো স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে সবর্দাই বিরামহীন ছুটে চলা। ছুটতে ছুটতে এক সময় পেয়ে বসে রাজ্যের ক্লান্তি। ক্লান্ত-শ্রান্ত মন চায় একটু বিশ্রাম। ছুটে যেতে চায় চেনা মুখগুলোর কাছে। কাদামাখা গ্রামের চিরচেনা মেঠোপথ ধরে হঁাটতে। পেতে চায় স্নেহময়ী মায়ের হাতের পরশ, যে পরশে রয়েছে পৃথিবীর সকল ক্লান্তি দূর করার যাদু। ইচ্ছে করে পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে আনন্দ-উল্লাসে কিছুটা সময়ের জন্য হারিয়ে যেতে। তাই ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাওয়া, টিকিট কাটা, কাপড়চোপড় গোছগাছ সবরকম ঝক্কিঝামেলা পেরিয়ে ঘরে ফেরাটা যেন একরকম উৎসবের মতোই কাজ করে। কিন্তু সবকিছু ছেড়েছুড়ে আবারও আসতে হয় ক্যাম্পাসে। আবারো শুরু হয় নিত্যদিনের ব্যস্ততা। ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষাথীর্ ফাহমিদা সেকান্দর তেমনটাই বলছিলেন, ঈদের বন্ধের পর ক্যাম্পাস খোলা মানেই হল সেই আবার স্বপ্নের দুনিয়া থেকে বাস্তবতায় ফিরে যাওয়া। যেখানে কেবল এটেন্ডেন্স, প্রেসেন্টেশন, এসাইনমেন্ট বসবাস করে! কেমন যেন একঘেয়েমি পেয়ে বসে। আবার কখন ছুটি পাবো। সেই অপেক্ষায় থাকা..! বাংলা বিভাগের শিক্ষাথীর্ জাহিদ শিকদার যেমনটা বলছিলেন, বাড়ি থেকে আসতে মন চাইছিল না একদমই। ইচ্ছে করছিল যেন আরও কিছুটা দিন থাকি। কিন্তু তা আর সম্ভব কি করে? ফাইনাল পরীক্ষার তারিখ দিয়েছে। কষ্ট হচ্ছিল। তবুও চলে আসলাম। লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষাথীর্ সুমেনা সুমির অনুভ‚তি শোনা গেল একটু ভিন্নভাবে, প্রিয় ক্যাম্পাস ছাড়া আমার ভালো লাগে না। যদিও বাড়ির ক্ষেত্রটা ভিন্ন। এখানে ক্লাস, বন্ধুদের সাথে ঘুরা, গান, আড্ডা সবকিছু আমাকে যেন সবর্দা আচ্ছন্ন করে রাখে। ক্যাম্পাসে ফিরতে পারলেই আমি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারি। আরবি বিভাগের শিক্ষাথীর্ ছদিওল ফাহাদ বলছিলেন, ছুটি হলেই সেকি খুশি লাগে। যত দ্রæত সম্ভব গোছগাছ করে বাড়িতে যাই। যদিওবা ক্যাম্পাসের স্মৃতিগুলো বড্ড মিস করি। কিন্তু ফেরার সময়? রাজ্যের সব কষ্ট যেন আমাকে পেয়ে বসে! কিছুদিন মনটা খুব খারাপ থাকে।’ আইন বিভাগের শিক্ষাথীর্ নূর-ই-জান্নাত বলেন, গতকাল ক্যাম্পাসে এসেছি। ছুটিতে অনেকদিন বাড়িতে থাকার সময় বারবার ইচ্ছে করছিল ক্যাম্পাসে ফিরে যাই। স্বজনদের ছেড়ে বাড়ি থেকে আসার সময় কষ্ট হলেও এখন বন্ধুদের পেয়ে অনেক ভালো লাগছে। বাড়ির স্মৃতিগুলো নাড়া দিচ্ছে। পড়াশোনার ব্যস্ততায় মগ্ন হবো। তবুও ভুলতে কিছুদিন তো লাগবে।