বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের ভাবনা

নয় মাস ধরে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যদিও এর মধ্যে চালু হয়েছে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম। কিন্তু অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে আদৌ কি শিক্ষার্থীরা তাদের কাঙ্ক্ষিত শিক্ষা অর্জন করতে পারছেন? এতদিন পড়াশোনার বাইরে থেকে শিক্ষার্থীরা কি পড়াশোনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন? শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে লিখেছেন তানিউল করিম জীম

প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সাব্বির আহম্মেদ পারভেজ
বিশ্বজুড়ে চলমান এ করোনা মহামারির মধ্যে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাতে সৃষ্টি হয়েছে বেশ নাজুক পরিস্থিতি। তবে একেবারে থমকে যায়নি। ফেসবুক লাইভ, জুম অ্যাপ, গুগল মিটের মাধ্যমে চালু হয়েছে অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম। এছাড়া টেলিভিশনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কর্মসূচি চালু রয়েছে। কিন্তু এসব পদ্ধতিতে প্রাপ্ত শিখন ফলকে শিক্ষার্থীরা গ্রহণ করছে কিনা সে বিষয়ে প্রশ্ন রয়েই যায়। অনেকেই নামমাত্র শুধু ক্লাসে যুক্ত হয়। আবার অনেকেই পায় না নেটওয়ার্ক সুবিধা। অনেকের আর্থিক সমস্যার কারণে পাচ্ছে না অনলাইন ক্লাসের সুবিধা। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইউজিসি থেকে সাহায্যের কথা বললেও সে সুবিধা এখনো হাতে পায়নি অনেকেই। অন্যদিকে অটো পাসের যে হিড়িক লেগেছে, এটি শিক্ষাব্যবস্থা অবনতির চাক্ষুস প্রমাণ। অটো পাস মানে একটি শিক্ষার্থীদের জ্ঞানার্জনকে বন্ধ করে দেওয়া। মানে দেশ ও জাতিকে অন্ধকারে ফেলে দেওয়া। তাই বর্তমান পরিস্থিতি ও যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশে টেকসই শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা উচিত। তবে প্রত্যাশা রাখব, এ মহামারি করোনা এবং শিক্ষাব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাবে আমার সোনার দেশ। সাব্বির আহম্মেদ পারভেজ ৩য় বর্ষ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শীতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই করোনাভাইরাসের সতর্কতার অংশ হিসেবে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ছুটিতে থাকাকালে শিক্ষার্থীরা যেন বাড়িতেই থাকে যেজন্য অভিভাবকদের সচেতন হতেও বলা হয়েছে। বাসায় বসে অনেকে করোনা থেকে দূরে থাকলেও মানসিকভাবে শিক্ষার্থীরা ভেঙে পড়েছে। পড়াশোনার গতিবিধিতে পড়ে যাচ্ছে অনীহা। এদিকে বাড়ছে বেকারত্ব। শুরু হয়েছে উড়সবংঃরপ ঠরড়ষধহপব। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হলেও শিক্ষার্থীরা এখন আর ঘরে বসে থাকছে না। অনেকটা অবাদে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অনলাইন পরীক্ষা সবসময় প্রশ্নবিদ্ধ। কারণ অনলাইনে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা নেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। উচ্চ মাধ্যমিকে শিক্ষার্থীদের অটোপাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার গতিকে রোধ করা হয়েছে বলে আমি মনে করি। এদিকে মাধ্যমিক পর্যায়ে সরকার অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়নের ব্যবস্থা করেছে। যেটি নামমাত্র মূল্যায়ন। কারণ গ্রামাঞ্চলে অ্যাসাইনমেন্ট প্রশ্নের উত্তর শিক্ষার্থীরা প্রাইভেট শিক্ষকের দ্বারা করে বিদ্যালয়ে জমা দেয়। কিন্তু বাস্তবে সে কোনোদিন ওই বিষয়ে পড়ে নাই। তাই তাদের জন্য এটি অসম্পূর্ণ একটি শিক্ষা। তাই দ্রম্নত শিক্ষার এ সংকট কাটানোর জন্য সরকার যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে এমনটাই প্রত্যাশা। মেহের আফরোজ ৩য় বর্ষ, কৃষি অনুষদ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ করোনা আতঙ্কে থমকে গেছে পৃথিবী। দেশের অর্থনীতি, সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য খাতের মতো শোচনীয় অবস্থা থেকে রক্ষা পায়নি শিক্ষা খাতও। মহামারির এ সময়ে শিক্ষার্থীদের যেমন প্রতিষ্ঠানে যাওয়া সম্ভব নয় ঠিক তেমনি সময় নষ্ট করাও ঠিক নয়। তাই উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশেও শুরু হয়েছে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম। অনেকের সুবিধা থাকলেও অনলাইন ক্লাসে মনোযোগ দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সাধারণ ক্লাসেই শিক্ষার্থীদের মনোযোগ থাকে না। আর মোবাইল কিংবা ল্যাপটপের ডিসপেস্নতে মনোযোগ দেওয়া বেশ কঠিন। কারণ ডিসপেস্নর আলোতে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকা কারোরই পক্ষে সম্ভব হয় না। অনেকেই নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে মাঠে, গাছের নিচে,বাড়ির ছাদে বসে ক্লাস করে। এসব জায়গায় ক্লাস করে মনোযোগ কতটা ধরে রাখা সম্ভব তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এছাড়া প্রাকটিক্যাল ক্লাসগুলো অনলাইনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই শিক্ষাটি অসম্পূর্ণ থেকে যাচ্ছে। তবে অনেক শিক্ষার্থী এ সময়কে কাজে লাগিয়েছে বিভিন্ন অনলাইন কোর্স করে। বৃদ্ধি করেছে তাদের জ্ঞান ও দক্ষতা। সর্বোপরি, করোনা কাটিয়ে খুব দ্রম্নত সুস্থ জীবনে ফিরব এবং শিক্ষাব্যবস্থা ফিরে পাবে নতুন প্রাণ এমনটাই প্রত্যাশা। মো. রাশেদুল ইসলাম শাহ্‌ ২য় বর্ষ, কৃষি অনুষদ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ