কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

শ্বেত শাড়িতে বধূর সাজে

প্রকাশ | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

সোহাগ মনি
জুড়িয়ে গেল চোখ আমার পুড়িয়ে গেল চোখ! শরতের সাজ যেন আসলেই চোখ পুড়িয়ে দিচ্ছে। সৌন্দযর্ পিপাসু যে কারও মনে খুব সহজেই আবেদন সৃষ্টি করে শরতের সাজ। শ্বেত শাড়ি পড়ে যেন সাদা মেঘের সঙ্গে প্রণয়ে আহŸানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শে^তশুভ্র কাশবন। লাল পাহাড়ের সবুজ ক্যাম্পাস প্রকৃতির পালাবদলের সঙ্গে রূপ পাল্টিয়ে নব সাজে সেজে ওঠে। কাশ ফুলের শ্বেত রং যেন হৃদয়কেও সাদা করে তোলে। এলোমেলো বাতাসের হালকা দোলায় নেচে ওঠে কাশফুল, সাথে যেন পুরো ক্যাম্পাসই নেচে ওঠে শরতের তালে। কী এক অদৃশ্য বাদ্য বাজিয়ে যায় শরৎ, তার তালে কাশফুল থেকে হৃদয় পযর্ন্ত আন্দোলিত হয়। কখনো বা সূযের্লাকের আভা আবার কখনো মেঘলা আকাশের বিচিত্র রং কাশ ফুলে পড়ে তৈরি করে রূপমাধুরী যা অপার ভালো লাগার। সূযের্র আভায় হেসে উঠে কাশফুল দুরন্ত কিশোরীর মতো, আবার মেঘের রং যেন তাকে স্পশর্ করে লজ্জাবতী বধূর রূপ ধরায়। ক্যাম্পাসের উঁচু পাহাড় থেকে শুরু করে নিচ পযর্ন্ত সারি সারিভাবে বিন্যস্ত কাশফুল। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ শহীদ মিনার, লালন চত্বর এর পাশে ফুটে থাকা দৃষ্টিনন্দনীয় শ্বেত পুষ্প অনেক গুণে বাড়িয়ে দিচ্ছে সৌন্দযর্। বিশেষ করে শহীদমিনারকে করে তুলেছে অনেক বেশি আকষর্ণীয়। বিস্তীণর্ সাদা বিশাল জলরাশির মধ্যে শহীদমিনার টিকে মনে হচ্ছে একখÐ দ্বীপ। আকাশে সাদা মেঘের ভেলা আর জমিনে সাদা ফুলের মেলা, শরতের স্বাথর্কতা বোধ হয় এখানেই। সাদা মেঘ আর সাদা ফুলের মেলা যে কারো হৃদয়েই সৃষ্টি করবে পিয়াসু আবেদন। কখনো একখÐ মেঘ বৃষ্টি হয়ে ছুঁয়ে দিয়ে যায় জমিনে থাকা শ্বেত প্রেয়সী কাশফুলকে। ভেজা ফুল ও যেন মিতালী ভাব মেঘের সঙ্গে। সিক্ত নীলাম্বরী পরে রঁাধে যেমন কৃষ্ণের সঙ্গে প্রেম লীলায় মত্ত হয়ে ছিলেন, তেমনি সাদা শাড়ি পরা কাশফুলও যেন প্রেম লীলায় মগ্ন মেঘের সাথে। এ যেন বাংলার অতীত ঐতিহ্য বহন করে। শরৎ এর সঁাজ যেন লেগেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগের শিক্ষাথীর্র মনে। সব বিভাগের শিক্ষাথীর্রাই দলবেঁধে ঘুরে উপভোগ করছেন সৌন্দযর্। ফ্রেমে বন্দি হচ্ছেন বন্ধুরা মিলে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করছেন অনুভ‚তি। প্রতœতত্ত¡ বিভাগের শিক্ষাথীর্ শারমিন সারু বলেন’ এমন পরিবেশ আসলেই অনেক ভালো লাগার, খুব উপভোগ করছি’ গণ-যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষাথীর্ নুসরাত মাহমুদ জেমি বলেন বেশ সুন্দর দেখায় কাশফুলগুলোকে, প্রকৃতির এই রূপ আসলেই দেখার মতো। শরতের ডাক যেন এড়াতে পারে না কেউই। মোহ কাজ করে এমন সুন্দরের প্রতি। জীবনের গøানিকে ভুলিয়ে দিয়ে সুন্দরকে সামনে আনার ডাক দিয়ে যায় এমন প্রকৃতি। বিকেল হলেই বাড়তে থাকে দশর্নাথীর্। ক্যাম্পাসের আশপাশে থাকা মানুষগুলো ও পরিবার নিয়ে আসে কিছুক্ষণ ভালো সময় কাটাতে। দূর থেকে আসা পযর্টকদেরও নজর কারে এমন সৌন্দযর্। ঢাকা থেকে আগত শিক্ষাথীর্ জাহিদ বলেন, আমি আসলেই মুগ্ধ এমন প্রকৃতি দেখে। দাশির্নক প্লেটো বলেছিলেন, প্রকৃতি এমন এক লিখা যার ভাষা গাণিতীক আসলেই এমন শরৎ এর রূপই বুঝি প্লেটোকে এমন কথা বলতে বাধ্য করেছিল। সুন্দরের সৌন্দযের্ বিমোহিত হওয়াই মনুষ্য বৈশিষ্ট্য। প্রকৃতি তাকে উজার করে তুলে ধরে, তেমনি এই উজার করা শরতের ডাক পড়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে।