কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

রঙে গানে ভালোবাসায়...

প্রকাশ | ০৩ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

স্বকৃত গালিব
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাকেির্টং বিভাগের র‌্যাগডেতে শিক্ষাথীর্রা
ধবধবে সাদা টি-শাটর্। কাছের মানুষগুলো একে অন্যের টি-শাটের্ লিখে দিচ্ছে জীবনে না বলা কিছু কথা। এ যেন সাদা টি-শাটের্ লাল, কালো, সবুজ রঙ দিয়ে লেখার উৎসব। আবার কেউ কেউ বান্ধবীকে কানে কানে কথা আছে বলে ডেকে নেয়। আসার সঙ্গে সঙ্গে কথা না বলে আবীরের ছটায় রঙিন করে দিয়ে আনন্দে মেতে উঠছে। আর এই রঙের খেলাই হচ্ছে র‌্যাগডে। দেখতে দেখতে কেটে গেছে চার চারটি বছর। চার চারটি বছর পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টুং করে বেজে ওঠে বিদায়ের ঘণ্টা। শিক্ষা সমাপনী (র‌্যাগডে) উৎসবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাকেির্টং বিভাগের (২০১৩-১৪) শিক্ষাবষের্র অষ্টম ব্যাচের বিদায়বেলায় বিষণœ হয়ে ওঠে ক্যাম্পাসের পরিবেশ। ভোর না হতেই ক্যাম্পাসে আসার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়ে যায়। সকাল ৯টার মধ্যে জড়ো হন বিভাগের প্রায় সবাই। সবার কণ্ঠে বিদায়ী জনপ্রিয় কিছু গান ফিরে ফিরে বেজে চলছিল। ‘দেখা হবে বন্ধু, কারণে অকারণে’, ‘আজ এই দিন টাকে মনের খাতায় লিখে রাখো’। সাদা টি-শাটর্ গায়ে জড়ানোর পর বন্ধুরা এ ওর গায়ে মজার মজার মন্তব্য লিখতে থাকে সবাই। চলে রঙ ছোড়াছুড়ি। শিক্ষা সমাপনী উৎসব উপলক্ষে বেলা ১১টায় বের হয় বণার্ঢ্য শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রায় গানের তালে তালে নেচে আনন্দ উৎসব প্রকাশ করে শিক্ষাথীর্রা। শোভাযাত্রাটি পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ব্যবসা অনুষদের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এর আগে এখানেই চলে সহপাঠী ও অনুজদের সঙ্গে নিয়ে কেক কাটা, রঙ ছোড়া ও ছবি তোলা। এর পর চলতে থাকে গানের তালে তালে নাচ উৎসব। অনুষ্ঠানের এক পযাের্য় এসে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে সবাই। দেখে মনে হচ্ছে এ যেন চির বিদায়ের সুর সংগীত। তারপরও নাচের উৎসব চলে দিনব্যাপী। রাতে আয়োজন করা হয় গ্র্যান্ড ডিনার। মাকেির্টং অষ্টম ব্যাচের শিক্ষাথীর্ হাসিবুর ইসলাম (প্রবাল) তার অনুভ‚তি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘টানা চার বছর একসঙ্গে একটা পরিবারের মতো ছিলাম। অনেক আনন্দ উৎসব করলেও প্রিয় ক্যাম্পাস থেকে চলে যেতে হবে ভেবে খারাপ লাগছে। স্মৃতি হয়ে থাকবে ভালোবাসার কুবি ক্যাম্পাস। আর যেন কুবি তরুণদের মাঝে অমর হয়ে থাকে যুগ যুগ ধরে এ যেন শেষ চাওয়া। সবুজ, আলিফ, ইসমাইল, তানিম, সিহাব, শুভ, পাপড়ি, মিতু, ঝণার্, লিজা তাদের অনুভ‚তি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেনÑ আনন্দ লাগছে ঠিকই কিন্তু তার মাঝেও খানিকটা বেদনা লুকিয়ে আছে, আর সেটা হচ্ছে ভালোবাসার সবুজ পাহাড়ি ক্যাম্পাস এবং বন্ধুদের ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট। তবে যাই হোক না কেন পুরো উৎসব, রঙ ছোড়া, এক সঙ্গে নাচানাচি, খাওয়া দাওয়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, একসঙ্গে কেক কাটা আর এক সঙ্গে চা খাওয়া... চির অমর হয়ে থাকবে স্মৃতির পাতায়। সবশেষে অশ্রæসিক্ত লোচনে আর নিবার্ক কণ্ঠে তাদের অন্তর বলে ওঠে যেন, তোরা ছিলি, তোরা থাকিস, তোরাই থাকবি... বন্ধু। আর দেখা হবে বন্ধু কারণে বা অকারণে। আর এই গানগুলো অমর সংগীত হয়ে বাজতে থাকবে স্মৃতির পাতায় মৃত্যু অবধি।