ফিচার লেখকদের আড্ডা-গল্প

প্রকাশ | ১০ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ধানমÐিতে ‘লেখার গল্প, গল্পের লেখা’ প্রতিপাদ্যে দেশের প্রথম ‘ফিচার লেখক সম্মেলন-২০১৮’
আলী ইউনুস হৃদয় তারা সবাই গল্প লেখেন। গল্পেরও যে জীবন থাকে, সে গল্প নিমাের্ণর চেষ্টা করেন। দৈনন্দিন সংবাদের ভিড়ে যখন পাঠক নতুন সংবাদের গল্প খুঁজতে উন্মুখ হয়ে থাকেন। ঠিক তখনই এই ফিচার লেখকরা গল্প তুলে ধরার কাজে নেমে পড়েন। তুলে আনেন ঘটনার জীবন্ত সংলাপ কিংবা পেছনের গল্প। গত ২১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সেই ফিচার লেখকদের অংশগ্রহণে ঢাকার ধানমÐিতে ‘ইউনিভাসিির্ট অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের অডিটোরিয়ামে ‘লেখার গল্প, গল্পের লেখা’ প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল দেশের প্রথম ‘ফিচার লেখক সম্মেলন-২০১৮।’ এদিন সকাল ১০টায় ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ, রাজশাহী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেসরকারি স্টামফোডর্ বিশ্ববিদ্যালয়, স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অধর্শতাধিক ফিচার লেখক একই সুতায় বঁাধা পড়েছিল। দিনব্যাপী আয়োজনের সকাল থেকেই দূর-দূরান্ত থেকে আসা লেখকরা নাম নিবন্ধনের মাধ্যমে অডিটোরিয়ামে আসন গ্রহণ করেন। এরপর মঞ্চে এসে আয়োজনের আনুষ্ঠানিক পবর্ শুরু করেন ফিচার লেখক সম্মেলনের কো-অডিের্নটর মুতাসিম বিল্লাহ নাসির। একে একে ফিচার লেখক হয়ে ওঠার গল্প বলার জন্য কয়েকজনকে মঞ্চে ডেকে নিলেন। ফিচার লেখক হয়ে ওঠার গল্পে তারা বললেন, ‘প্রথমে অনলাইন মাধ্যমে ফিচার লিখে ক্যাম্পাসে পরিচিত হই। ধীরে ধীরে জাতীয় দৈনিকে লেখার মধ্য দিয়ে ফিচার লেখক হওয়ার পরিচয় পূণর্তা অজর্ন করে। আমাদের এই আয়োজন দেশের সব ফিচার লেখকের একটি প্লাটফমের্ দঁাড় করিয়েছে। আগামীতেও ফিচার লেখকদের মধ্যকার মেলবন্ধন ধরে রাখতে এই আয়োজন অব্যাহত রাখতে হবে। এবার ফিচার লেখকদের দিকপালদের লেখক হয়ে ওঠার গল্প শোনার পবর্। কীভাবে ফিচার লিখতে হয়, ফিচার লেখার সম্ভাবনা ও সীমাবদ্ধতা সম্পকের্ কথা বলেন কালের কণ্ঠের সিনিয়র সহ-সম্পাদক ওমর শাহেদ, দৈনিক ইত্তেফাকের সহ-সম্পাদক রিয়াদ খন্দকার ও বাতার্ সংস্থা ইউএনবির বিশেষ প্রতিনিধি একেএম মঈনউদ্দিন। ফিচার লেখকদের সামনে গল্পকার হয়ে ওঠার গল্প বিনিময় করেন সাদাত হোসাইন। সম্মেলনে ফিচার লেখকদের পরামশর্ দেন আন্তজাির্তক সংবাদ সংস্থা এএফপির ব্যুরো প্রধান শফিকুল আলম। তিনি বলেন, আমাদের দেশে ফিচার লেখার অনেক বিষয় আছে। আমাদের প্রত্যক্ষ পযের্বক্ষণ সে বিষয়গুলোকে খুব সহজেই উপলব্ধি করতে শেখাবে। বিশেষ করে আমাদের সামাজিক রীতিনীতির পরিবতর্ন ফিচারের অনেক গুরুত্বপূণর্ বিষয়। একইসঙ্গে ফিচার পড়ার পাশাপাশি লেখায় বেশি উদ্ধৃতি ব্যবহারের পরামশর্ দেন। টেলিভিশনে ফিচার রিপোটির্ংয়ের গুরুত্ব ও করণীয় বিষয়ে কথা বলেন এটিএন বাংলার প্রধান প্রতিবেদক সানাউল হক। ফিচার লেখার মধ্য দিয়েই সাংবাদিকতা শুরুর অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেন প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোটার্র ইফতেখার মাহমুদ। ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দিয়ে ফিচার লেখকদের উদ্দেশ্যে কথা বলেন রাশিয়ায় ইন্টারন্যাশনাল জানাির্লজম-এ পিএইচডি গবেষণারত বাংলাদেশি সাংবাদিক বারেক কায়সার। তরুণ ফিচার লেখকদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনান সিফাদ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মুজিব খান। তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমরা কখনও কোনো দলের স্বাথর্ আদায়ের হাতিয়ার হবে না। তোমাদের কলম যেন স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলে। দেশের প্রত্যেকটি মানুষ তার যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয় সেদিকে খেয়াল রাখবে। সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহিদ আপন। পড়াশোনার পাশাপাশি ইত্তেফাকের ক্যাম্পাস পাতায় লেখালেখি করেন। তিনি বলেন, এর আগে কখনও ফিচার লেখার বিষয়ে কোনো ধারণা ছিল না। সারাদিন যেসব ফিচার লেখক ও সাংবাদিকরা আলোচনা করেছেন তাদের বক্তব্য থেকে কীভাবে ফিচার লেখা শুরু করতে হয়, কীভাবে একটি লেখাকে পরিপূণর্ করে লেখা সম্ভব সে সম্পকের্ ধারণা পেয়েছি। ফিচার লেখকরা দেশের সম্ভাবনা নিয়ে লেখালেখি করেন। দেশ বরেণ্য সফল মানুষগুলোর সঙ্গে কথা বলে লেখালেখির মাধ্যমে তারা মানবিক গুণের অধিকারী হয়ে ওঠে। ফিচার লেখাও যে একটা পেশা এবং আন্তজাাির্তক পযাের্য়ও ফিচার লেখার সুযোগ রয়েছে সে বিষয়টি আমরা এই আয়োজনের মাধ্যমে জানাতে পেরেছি। আগামীতে সারাদেশের ফিচার লেখকদের একটি প্ল্যাটফমের্ দঁাড় করাতে চাই।