ক্যাম্পাসে ফেরার ভাবনায় শিক্ষার্থীরা

করোনার কারণে স্কুল-কলেজের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ও এক বছরের বেশি সময় বন্ধ রয়েছে। স্কুল-কলেজে অটোপাস দেওয়া গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্ভব নয়। এমন অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় খোলা নিয়ে দেশের শিক্ষার্থীদের ভাবনা তুলে ধরেছেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আনিসুর রহমান

প্রকাশ | ০৫ জুন ২০২১, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
প্রয়োজন সুপরিকল্পিত পরিকল্পনা আমজাদ হোসেন হদয় শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ক্ষেত্রে একটি সুপরিকল্পিত পরিকল্পনার অভাব বরাবরই সুস্পষ্ট, যার ফলে সরকার কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় কেউ বলতে পারছে না কবে স্বাভাবিক হচ্ছে দেশের শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে উত্তম। তবে এ নিয়েও কারও পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। যদি করোনার শুরু থেকে কিংবা দেশে ভ্যাকসিন আসার পরপরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভাবা হতো, আজ হয়তো এমন অনিশ্চয়তা তৈরি হতো না। এভাবে যদি শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে আরও এক বছর নষ্ট হয়ে যায়, সে দায় কে নেবে? শিক্ষার্থীদের জীবনের মূল্যবান শিক্ষার সময়টা যাতে আর নষ্ট না হয়- তার দিকে দৃষ্টি দেওয়ার সময় হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা সমাধান নয় খালেদ মাসুদ স্বপন শিক্ষার্থী, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলো আজ করোনার বেড়াজালে বন্দি। ইতিমধ্যে অনেক কিছু চালু হলেও হলো না বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার বা ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দেশের মেধাবী সন্তান, করোনাকালীন সময়ে কি কি সতর্কতা নেওয়া দরকার, কীভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায় সেগুলো তারা করে দেখিয়েছে। অথচ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক লাখ শিক্ষার্থী সেশনজটে আটকা পড়ে আজ জীবন নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে, তাদের ক্যারিয়ার আজ হুমকির মুখে। তাই শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের কথা চিন্তা করে অন্তত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া এখন সময়ের দাবি। নতুবা এসব শিক্ষার্থী অপূরণীয় ক্ষতির মুখে পড়বে। পরিকল্পনা করে ক্যাম্পাস খোলা হোক মোমেনা আক্তার শিক্ষার্থী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট। করোনাকালে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম যেমন ব্যাহত হচ্ছে তেমনি শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থারও চরম অবনতি হচ্ছে। হাট-বাজার, অফিস-আদালত, দোকান-পাট, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি ও ব্যবসা-বাণিজ্য সব কিছুই চলমান। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কি স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস, পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে না? তাই পরিকল্পনা করে সীমিত পরিসরে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়াই যুক্তিযুক্ত হবে বলে আমি মনে করি। শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক পরিকল্পনার মাধ্যমে সার্বিক স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে সীমিত পরিসরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা চালু হোক। রোস্টার করে স্বশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা নিন মো. তাজবীর মোলস্না শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ব্যাহত হচ্ছে সাধারণ পাঠের পাশাপাশি সব গবেষণার কার্যক্রম। তাছাড়া দিনে দিনে ভারী হচ্ছে সেশনজটের পালস্না। এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ চিন্তা-ভাবনাতে পড়ছে বিরূপ প্রভাব। নেটওয়ার্ক সমস্যাসহ নানান কারণে শহরের তুলনায় গ্রামে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী প্রত্যন্ত অঞ্চলের। ফলে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে অসংখ্য শিক্ষার্থী চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। তাই প্রয়োজনে সব শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে না এনে রোস্টার করে ক্লাস, পরীক্ষা চালু করুন। অর্থাৎ সেমিস্টার বা বর্ষভিত্তিক ভিন্ন ভিন্ন দিনে ক্লাস বা পরীক্ষা নেওয়া। এভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বশরীরে ক্লাস, পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব।