ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

তারুণ্যের উচ্ছ¡াস

প্রকাশ | ২৪ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

রায়হান মাহবুব
মিলনায়তন পূণর্ হয়েছিল একঝঁাক সুশৃঙ্খল তরুণের উচ্ছ¡াসে
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তন পূণর্ হয়েছিল একঝঁাক সুশৃঙ্খল তরুণের উচ্ছ¡াসে। বাংলাদেশ ন্যাশনাল কাডেট কোর, ২৪-বিএনসিসি ব্যাটালিয়নের আয়োজনে সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণের শেষদিন সন্ধ্যায় তারা মাতিয়েছিল ক্যাম্পাস। নজরুল সংগীত, রবীন্দ্র সংগীত, দেশাত্মবোধক গান, মুখাভিনয়, কবিতা, উপস্থিত বক্তব্য, নৃত্য ও আধুনিক গানের তালে তালে ক্যাম্পাসও যেন সেদিন আনন্দের জোয়ারে গা ভাসিয়েছিল। এ মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় দেশাত্মবোধ ও স্বরচিত গান পরিবেশন করে দশর্ককে তাক লাগিয়েছিলেন উপ-উপাচাযর্ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসির প্রতিষ্ঠাতা ২৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট অধ্যাপক ড. শাহিনুুর রহমান (বিটিএফও)। এবারের প্রশিক্ষণ কমর্শালায় বিএনসিসির ২৪ ব্যাটালিয়নের আওতাধীন কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও মাগুরা জেলার ১৮টি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭০ জন (পুরুষ ও মহিলা) ক্যাডেটরা অংশগ্রহণ করে। গত ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এ ক্যাম্পিংয়ে শিক্ষাথীের্দর কিভাবে ক্যাম্প-মহড়া দিতে হয়, কিভাবে শত্রæকে ঘায়েল করতে হয়, অগ্নিনিবার্পক তাৎক্ষণিক কিভাবে সম্ভব, প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান কিভাবে সম্ভব, তা নানাভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যেটা বিএনসিসির জন্য করা হয় না, সেটা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনসিসির জন্য আলাদাভাবে একজন শিক্ষককে প্রধান সমন্বয়কারী কমর্কতার্ হিসেবে দায়িত্ব¡ দেওয়া হয়েছে। এজন্য আমরা খুবই গবির্ত। বলছিলেন ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে আগত প্রভাষক মো. মহিবুল্লাহ। সুস্থ মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে ক্যাম্পিংয়ে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। যারই ফলশ্রæতিতে সমাপনী দিনে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আগত ক্যাডেটবৃন্দের দলীয় সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে তারুণ্যের উচ্ছ¡াস অনুষ্ঠানের মূল পবর্ শুরু হয়। এরপর লালনগীতি নিয়ে মঞ্চে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাডেট হীরা। কুষ্টিয়া সরকারি মহিলা কলেজের ক্যাডেট সাজের্ন্ট সুরাইয়া ও তার দল ব্যান্ডের তালে তালে এক মনোমুগ্ধকর নৃত্য পরিবেশন করে আমন্ত্রিত অতিথিদের চোখ রাঙিয়ে দেয়। মঞ্চে আসে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ক্যাডেট আবরার ফাহিম। যে কিনা প্রতিটি প্রতিযোগিতায় তার সুরের মূছর্নায় দশর্ক কঁাপিয়ে, মঞ্চ মাতিয়ে প্রথম পুরস্কারটি ছিনিয়ে নেয়। কথা হয় এই প্রতিভাধর ক্যাডেটের সাথে। অনেকটা আবেগের সাথেই আবরার বলে উঠল, এই ক্যাম্পাসটি আমায় মায়ায় জড়িয়ে ফেলেছে। প্রতিদিন রুটিংমাফিক ভোর ৫টায় উঠে আবার সারাদিন সুশৃঙ্খলতা ও নিয়মতান্ত্রিকতার মধ্যদিয়ে রাত ১১টায় বিছানায় চলে যেতে হতো। ৭টি দিন কিভাবে যে কেটে গেল! এই প্রাকৃতিক সৌন্দযর্মÐিত, নান্দনিক, নয়নাভিরাম ক্যাম্পাসে থেকে তা খেয়ালই করেনি। আসলেই এ ক্যাম্পাসের ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ মুর‌্যাল, কেন্দ্রীয় মসজিদ, সুদৃশ্যমÐিত লেক, স্মৃতিসৌধ আমাকে মুগ্ধ করেছে। একে একে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের ক্যাডেটদের মন মাতানো মুকাভিনয়, ইবির ক্যাডেট সাদিকুরের মঞ্চ কঁাপানো আধুনিক গান এবং সবের্শষ মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্যাডেট শাহরিয়ার ও ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্যাডেট আকাশের ব্রেক ডান্সে যেন উচ্ছ¡াসে মাতোয়ারা হয়ে যায় উপস্থিত দশর্করা। একপযাের্য় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। তারুণ্যের উচ্ছ¡াসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচাযর্ অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বিএনসিসির ক্যাডেটদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমাদের মেধা মননে থাকবে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর আদশের্ থাকবে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যাতে করে তোমাদের হাত দিয়েই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হয়।’ সবের্শষ বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটারের শিল্পী মীম, লালচঁান, দীপ্ত আর জেরিনের অসাধারণ সুর নীলিমায় লালনগীতি-লোকগীতি পরিবেশনার মাধ্যমে শেষ হয় এবারের ২৪-বিএনসিসি ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পিং।